খুনি মুশতাকের ছেলে ইশতিয়াকের বিজনেস পার্টনার গোলম দস্তগীর নিশাদের টিভি লাইসেন্স ব্যবসা ও অর্থ পাচার কাহিনী!

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ও লন্ডনে উপর তলার বাংলাদেশীদের মধ্যে একটি পরিচিত নাম সৈয়দ গোলাম দস্তগীর নিশাদ। তিনি সারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ান, বাংলাদেশে গড়ে তুলেছেন বিলাশ বহুল বাসভবন। লন্ডনেও বাড়ী আছে, বেশ শান-শওকতের সাথে জীবন-যাপন করেন; কিন্তু কেউ জানেনা তাঁর আয়ের উৎস কি? তিনি কোন চাকুরী করেন না, ব্যবসা করেননা কিন্তু বিলাসী জীবন যাপন করেন।


বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, এই রহস্য পুরুষ এক সময় স্বৈরাচার এরশাদের ছাত্র সংগঠন ‘ছাত্রসমাজের’ সক্রিয় ক্য্ডাার ছিলেন। আশির দশকের শেষ দিকে ভিজিট ভিসা নিয়ে চলে যান লন্ডনে। সেখানে এক বৃটিশ বাংলাদেশী নারীকে বিয়ে করে বিলেতে ই বসবাস শুর ুকরেন। বেশ কিছুদিন রেষ্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ করার পর পুরনো বন্ধু-সুহৃদ বঙ্গবন্ধু হত্যাকারী খন্দকার মুশতাকের ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহমদের সাথে পার্টনারশীপে লন্ডনে মিষ্টির ব্যবসা শুরু করেন। গঠন করেন আলাউদ্দিন সুইটমিট (ইউকে) লিমিটেড, ইউকে কোম্পানী নম্বর: ০২৫৭৬২২৮। এই সময়ে তিনি লন্ডনে মিঠাইওয়ালা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। খুনি মোশতাকের ছেলে-মেয়ে পরিবারের সাথে নিশাদ দস্তগীরের ছিল গভীর সখ্যতা। এক পর্যায়ে খুনি মোশতাকের ছেলের পরিচয় প্রকাশ হয়ে পড়লে বাঙালী কমিউনিটিতে মিষ্টি ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয়।

এই সময়ে কিছু দিন তিনি ক্যাপ্টেন (অব:) শহীদের সহকারী হিসেবে কাজ করেন। এই ক্যা্েপ্টন শহীদ ই পরবর্তী কালে কানাডা থেকে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নামে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালিয়ে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। কিছ ুদিন আগে জনাব শহীদের মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তাদের মাঝে সখ্যতা অটুট ছিল।

স্বৈরাচার এরশাদের পতন হলে নিশাদ দস্তগীর সুকৌশলে মিষ্টি দোকানে আরেক ব্যবসায়ী পার্টনার কাজী আনোয়ার রাজুকে ধরে বিএনপি’র রাজনীতিতে ঢুকে পড়েন। রাজু ছিলেন তৎকালীন বিএনপি নেতা নাজমুলহুদার ঘনিষ্ট আত্মিয়। এখান থেকেই বিনা পুঁজিতে ফটকাবাজী ব্যবসায় নিশাদের হাতে খড়ি।

১৯৯৯ সালে লন্ডন থেকে বাংলা টভি প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হলে তিনি সুকৌশলে সেখানে ঢুকে পড়েন এবং পরিচালক (অনুষ্ঠান) হিসেবে দায়িত্ব পান। কিন্তু সেখানেও বেশীদিন ঠিকতে পারেননি। তার স্বরূপ প্রকাশ হয়ে পড়লে২০০১ সালে ১৬ই অক্টেবর বাংলা টিভি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর তিনি আর কোনদিনও বাংলা টিভির মালিকানা বা শেয়ার হোল্ডিং-এ না থাকলেও বাংলা টিভি’র নাম ব্যবহার করেই সমাজে নিজেকে পরিচিত করেন।

লন্ডনে আওয়ামী রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনীতিতে অনেক চেষ্টা করেও নিশাদ ঢুকতে পারেন নাই। কারণ সেখানে তার চরিত্র সম্পর্কে সবাই জেনে গেছে। কিন্তু ৮০/৯০’র দশকে লন্ডনে আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম এম এ গনির বাসায় পারিবারিক পরিবেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সাথে তোলা কিছু ছবি ব্যবহার করে নিজেকে বঙ্গবন্ধু কন্যার ঘনিষ্ট বলে প্রচার চালাতে থাকেন। লন্ডনে এই অপপ্রচার কাজে না লাগলেও বাংলাদেশে তিনি হয়ে উঠেন ‘নব্য সাহেদ’!

২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসলে বোল পাল্টে ঢুকে পড়েন আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতারবৃত্তে। প্রশ্রয় পান ক্ষমতার করিডোরে। কখনো তথ্যমন্ত্রী, কখনো সেতুমন্ত্রী, এমনকি অধুনা মহামান্য রাষ্ট্রপতির ঘনিষ্টজন পরিচয় দিয়ে দাপটের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফেইসবুকে তাদের ছবি ব্যবহার করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেন।

সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার কাছে ভিড়ে যান নানা কৌশলে। শ্রীলংকা ও নেদারল্যন্ডে এস কে সিনহার সাথে রহস্যজনক বিদেশ ভ্রমনও করেন। বিচারপতি সিনহার সাথে নানা অবৈধ কর্মে নিশাদের সংশ্লিষ্টতা ঢাকায় উচু মহলে অনেকেই জানেন। কিন্তু তাতেও ক্ষমতাসীনদের একটি মহলের সাথে তার সম্পর্কে ছেদ পড়েনি। বরং বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার যখন ক্ষমতায় তখন বঙ্গবন্ধু হত্যার খুনি মুশতাকের ছেলে ইশতিয়াকের ব্যবসায়িক পার্টনার নিশাদ বাগিয়ে নেন ‘গ্রিনটিভি’নামে টিভি লাইসেন্স। কিন্তু সৎপথে ব্যবসা করার লোক নিশাদ নন। বৃটেনের নাগরিক সৈয়দ গোলাম দস্তগীর নিশাদ গ্রিনটিভি’র প্রায় সম্পূর্ণ শেয়ার বিক্রি করে পুরো টাকাই বিদেশে পাচার করে দেন। এছাড়া,তার পুরো পরিবার লন্ডনে বসবাস করেন।
সব কিছুতে পার পেয়ে গেছেন ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয়ে। বঙ্গবন্ধু হত্যার নায়ক মুশতাকের ছেলের ব্যবসায়িক পার্টনার হয়েও বিদেশ সফরে সঙ্গী হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকারের মন্ত্রীদের!

‘বাংলা মিউজিক ’নামে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের লাইসেন্স পাইয়ে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনাব এ কে এম শহিদুল্লা পাটওয়ারীর কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারনা করার পর জনাব পাটওয়ারী ঢাকা জজ কোর্টে মামলা করেছেন। কিন্তু তাতেও দমে যাননি এই রহস্য পুরুষ গোলম দস্তগীর নিশ্দ। এই ধরণের আরো বহু ঘটন তিনি ঘটিয়েছেন। কিন্তু কার প্রশ্রয়ে এখনো তিনি বাংলাদেশে তার অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন এটাই এখন সচেতন মহলের প্রশ্ন!
এবিষয়ে সৈয়দ গোলাম দস্তগীর নিশাদ এর বক্তব্য নেয়ার জন্যে তার মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। বিধায় তার কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *