মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে ২৫,০০০ পিস ইয়াবা সহ ২ জন গ্রেফতার 

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মাদক বিরোধী অভিযান সম্পর্কে ব্রিফিং দিচ্ছেন।


বিজ্ঞাপন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : পেটিকোটে বিশেষভাবে সেলাই করে এবং ট্রাকের স্পেয়ার চাকায় অভিনব কায়দায় লুকিয়ে ইয়াবা পাচার কালে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে , ২৫০০০ (পঁচিশ হাজার) ইয়াবাসহ ২ জন গ্রেফতার হয়েছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।

জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই মাদক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারসহ নেশার মরণ ছোবল থেকে তরুন সমাজকে রক্ষার জন্য ঢাকা মহানগরীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) এর জোরালো কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর,ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্ল্যাহ কাজল ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর) এর উপ-পরিচালক  মোঃ রাশেদুজ্জামান এর প্রত্যক্ষ মনিটরিংয়ে এবং সহকারী পরিচালক, ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর) মোঃ মেহেদী হাসান এর নেতৃত্বে গুলশান ও তেজগাঁও সার্কেলের সমন্বয়ে টিম গঠন করে গতকাল বুধবার  ৭ জুন  সকাল হতে যাত্রাবাড়ী থানাধীন, ২৩/৬/১ গোপীবাগস্থ নাহার কিচেন ডিলিসিয়াস ফুড নামীয় দোকানের পূর্ব পাশে^ অভিযান পরিচালনা করে।  উক্ত অভিযান পরিচালনা কালে  ১০০০০ (দশ হাজার) ইয়াবাসহ ১ (এক) জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগন

পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্য মতে ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানাধীন হেমায়েতপুর, জয়নাবাড়ী, ঈদগাহ কবরস্থান এলাকায় অভিযান করে ১৫০০০ (পনের হাজার) ইয়াবাসহ অপর ১ (এক) জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম ও ঠিকানা যথাক্রমে, মো: আলমগীর (৪০), পিতা: মৃত ইউসুফ আলী, থানা:রাউজান, জেলা: চট্টগ্রাম। পেশাঃ ট্রাক চালক এবং মো: শাহজাহান (২৬), পিতা: শামসুল হক, থানা: বালিয়াডাঙ্গী, জেলা: ঠাকুরগাঁও। পেশাঃ ব্যবসা উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ইয়াবা সরবরাহের মূল সমন্বয়ক শাহজাহান।

গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যাবসায়ীদের ছবি

আসামী শাহজাহান টেকনাফ এর বিভিন্ন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করে ইয়াবা সংগ্রহ ঢাকা জেলার হেমায়েতপুরে তার নিজ ভাড়া বাসায় ইয়াবা মজুদ করে থাকেন। পরবর্তীতে রংপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছে ইয়াবা পাইকারী মূলে বিক্রি করেন।

পণ্য পরিবহনের আড়ালে শাহজাহান চক্রের কাছে ইয়াবা পৌছে দিতো ট্রাক চালক আলমগীর, টেকনাফ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে টেকনাফের বিভিন্ন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সাথে ট্রাক চালক আলমগীরের সক্ষ্যতা তৈরী করে। টেকনাফের বিভিন্ন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের নির্দেশ মোতাবেক বিভিন্ন জেলায় ইয়াবা পৌছে দেয়ায় ছিল তার মূল কাজ। এ কাজের জন্য প্রতি ট্রিপে সে ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা পেত।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য ছিল উত্তরাঞ্চলের কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী ঢাকার হেমায়েতপুরে অবস্থানকৃত শাহজাহান এর কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা শাহজাহানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে এবং তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়।

বিভিন্ন সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো (উত্তর)  এর কর্মকর্তারা জানতে পারে যে, শাহজাহান টেকনাফ হতে ইয়াবার একটি চালান ট্রাক চালক আলমগীরের মাধ্যমে সংগ্রহ করবে।

সেই তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফ থেকে  ট্রাক চালক আলমগীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পৌছালে যাত্রাবাড়ী এলাকার গোপীবাগে ট্রাকটির গতি রোধ করে তাকে সনাক্ত করা হয় ।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় ট্রাকের স্পেয়ার চাকার টিউবের মধ্যে বিশেষভাবে লুকানো অবস্থায় বিপুল পরিমান ইয়াবা রয়েছে। সেই  তথ্য মতে স্পেয়ার চাকার টিউবের মধ্যে হতে ১০০০০ (দশ) হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

অপরদিকে ট্রাক চালক আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদে শাহজাহান সম্পর্কে আরো তথ্য পাওয়া যায়। তার দেয়া তথ্য এবং পূর্বের প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করে ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানাধীন হেমায়েতপুর, জয়নাবাড়ী, ঈদগাহ কবরস্থান এলাকায় শাহজাহান এর ভাড়াকৃত বাসায় অভিযান পরিচালনা করে বিশেষ কায়দায় পেটিকোটে সেলাই করা অবস্থায় বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীর নিকট সরবরাহের জন্য মজুদকৃত  ১৫০০০ (পনের হাজার) পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহজাহান জানায়, মহিলাদের ব্যবহার করে ইয়াবা পাচারের সুবিধার জন্য এ বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে থাকে। প্রাথমিকভাবে আসামী শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তার নামে ইতোপূর্বেও ২ (দুই) মাদক মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) মোতাবেক সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরেের  ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) এর উপ-পরিচালক মোঃ রাশেদুজ্জামান আজকের দেশ ডটকম কে জানান, মাদক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত মাদকের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি বাস্তবায়নে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) বদ্ধপরিকর বিধায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর)  কর্তৃক ভবিষ্যতে ও এ ধরণের অভিযান পরিচালনা  অব্যাহত থাকবে। ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *