নিজস্ব প্রতিনিধি : পিবিআই গাজীপুরের একটি টিম মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামি মোঃ শাহিন (৪৭), পিতা-মৃত মজিদ হাওলাদার, মাতামৃত হাজেরা বেগম, সাং- মাওয়া, পোঃ মাওয়া বিক্রমপুর, থানা-লৌহজং, জেলা-মুন্সিগঞ্জ, এ/পি-মিরপুর বাওনিয়াবাদ ব্লক-এ, রোড-২১,বাসা-১৮, সেকশন-১১, থানা-পল্লবী,ডিএমপি ঢাকাকে গতকাল বুধবার ৭ জুন রাত ৩ টা ১০ মিনিটের ঢাকা মহানগর পল্লবী থানা এলাকা হতে এবং আসামি মোঃ সালাম ওরফে চঞ্চল (৪০), পিতা-মোঃ মিলন, মাতা-মৃত সখিনা বেগম, সাং- ছয়আনি, পোঃ আয়বপুর থানা-বাঞ্চারামপুর, জেলা-বি-বাড়িয়া এ/পি-খিলক্ষেত উত্তরপাড়া,(লুৎফর রহমানের ভাড়াটিয়া). থানা- খিলক্ষেত, এবং মোঃ জাহাঙ্গীর (৪০), পিতা-মৃত হোসেন মজমদার,মাতা- মৃত সোনাই সাং-ফুলবাড়িয়া, পোঃ ফুলবাড়িয়া.থানা-সালতা, জেলা-ফরিদপুর এ/পিমাদারটেক সিঙ্গাপুর রোড,(হাসান এর ভাড়াটিয়া). থানা- সবুজবাগ, ডিএমপি ঢাকাদেরকে গতকাল বুধবার ৭ জুন সকাল অনুমান সাড়ে ৬ টার সময় ঢাকা মহানগর খিলক্ষেত থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
এই মামলার ভিকটিম রবিউল ইসলাম (৪০),পিতা-মৃত নবাব আলী,সাং- তালটিয়া পূর্বপাড়া,থানাপূবাইল,জিএমপি গাজীপুর প্রতিদিন মীরের বাজার হতে নাগদা ব্রীজ,বিন্দান, পাতারটেক ,নারায়নকুল এলাকায় রিক্সা চালাতেন। প্রতিদিনের ন্যায় ভিকটিম অত্র মামলার ঘটনার দিন ২৪/০৩/২০১৯ সালে বিকাল অনুমান সাড়ে ৩ টার দিকে অটোরিক্সা চালানোর জন্য অটোরিক্সা নিয়ে বাসা হতে বের হয়ে যায়।
ঐ দিন রাত ১২ টার সময় অটোরিক্সার মালিক মাহাবুব রহমান ভিকটিমের মোবাইলে ফোন দিলে অন্য এক লোক একবার ফোন ধরে কথা বলে রেখে দেয়। পরবর্তীতে আর কেউ ফোন ধরে নাই। বাদীনির স্বামী অত্র মামলার ভিকটিম রবিউল ইসলাম আর বাড়ীতে ফিরে আসে নাই।
গত ১৩/০৪/২০১৯ সালের বিকাল অনুমান ৪ টার সময় বিন্দান সাকিনস্থ জহিরুল ইসলাম এর মুদির দোকানের পিছনে খালের পানিতে ভাসমান অবস্থায় পুলিশ অজ্ঞাত নামা পুরুষের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বাদীনি ও তার পরিবারের সদস্যরা সংবাদ পেয়ে উক্ত লাশ দেখে স্বামীর লাশ হিসাবে সনাক্ত করে।
এ সংক্রান্তে ভিকটিমের স্ত্রী মরিয়ম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে সূত্রে বর্ণিত মামলাটি রুজু হয়। থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করেন। রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় ২২/০৭/২০১৯ সালে মামলাটি পিবিআই কে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।
অ্যাডিশনাল আইজিপি পিবিআই বনজ কুমার মজুমদার. বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান,বিপিএম এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ জামাল উদ্দিন মামলাটি তদন্ত করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামিগন অটোরিক্সা চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। অত্র মামলার ঘটনার সময় গ্রেফতারকৃত আসামীগন পরস্পর যোগসাজসে অত্র মামলার ভিকটিম রবিউল ইসলাম এর অটোরিক্সা ভাড়া করে
এবং গ্রেফতারকৃত আসামিগন সবাই মিলে অটোরিক্সায় উঠে মীরের বাজার হতে পূবাইল গামী রাস্তার দিকে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশের্ব অটোরিক্সা থামিয়ে সবাই জুসসহ অন্যান্য জিনিস খেতে থাকে এবং ভিকটিম রবিউল ইসলামকে জুসের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খেতে দেয়।
তারপর পূনরায় ভিকটিম রবিউল ইসলাম আসামিদেরকে নিয়ে রওনা হওয়ার পর কিছুদূর যাওয়ার পর ভিকটিম রবিউল ইসলাম অচেতন হয়ে পড়লে আসামিদের মধ্যে থেকে গ্রেফতারকৃত আসামি জাহাঙ্গীর ভিকটিমকে ড্রাইভিং সিট হতে সরিয়ে সেই অটো চালাইতে থাকে। পরবর্তীতে রাস্তার পাশের্ব একটি ডোবার পানির মধ্যে ভিকটিম রবিউল ইসলামকে ফেলে রেখে তারা অটোরিক্সা নিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে পিবিআই এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বিপিএম বলেন, মূলত আসামিগন ভিকটিম এর কাছ থেকে অটোরিক্সা চুরি করার উদ্দেশ্যে এ হত্যাকান্ডটি সংগঠিত হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল বুধবার ৭ জুন আদালতে সোপর্দ করা হলে ভিকটিম রবিউল ইসলামকে হত্যা কান্ডের সাথে নিজেকে জড়িয়ে অন্যান্য আসামিসহ এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করে আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয় ।