নিজস্ব প্রতিবেদক : নড়াইলে অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারীদের সাথে ব্যবসার নামে প্রতারণা, প্রতারকে গ্রেফতার করলো পিবিআই, যশোর। গত ২৪ জুন, রাত অনুমান ১০ টা ৪৫ মিনিটের সময় সদর থানাধীন দূর্গাপুর গ্রামস্থ আসামীর নিজ বসত বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

অবসর প্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সদস্য মোঃ ফরিদ আহম্মেদ (৫০), পিতা- মৃত মোজাহের ফকির, সাং-দূর্গাপুর, থানা ও জেলা-নড়াইল। সে একজন রিয়েলস্টেট ব্যবসায়ী বলে বিভিন্ন জনের কাছে নিজের পরিচয় দিয়ে আসছে। সে সেনাবাহিনী হতে অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্যসহ অন্যান্য অবসর প্রাপ্ত সরকারী চাকুরীদের টার্গেট করে প্রতারণার ফাঁদ তৈরী করে। সে মোতাবেক সে বিভিন্ন জনকে জমির ব্যবসা করে অধিক লাভ করার প্রলোভন দেখায় এবং অনেকে তার কথায় বিশ্বাস করে ব্যবসার করার জন্য টাকা দেয়। একই ভাবে ভিকটিম সেনাবাহিনীর অবঃপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মোঃ মিজানুর রহমান (৪৫) এর কাছে আসামী ফরিদ আহম্মেদ জমি ব্যবসার কথা বলে কিছু টাকা চায় এবং সে জমির ব্যবসা করে অনেক কিছু করেছে বলে জানায়।

আসামী ভিকটিমকে ১,০০,০০০ টাকা দিলে টাকার বিপরীতে প্রতি মাসে ৫,৫০০ টাকা করে দিবে বলে প্রস্তাব দেয়। ভিকটিম তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গত ৩০ এপ্রিল ২০২২ সালে সকাল ৯ টায় তার দূর্গাপুর বাসায় হাজির হয়ে আসামী ফরিদকে নগদ ৩,০০,০০০ টাকা দেয়। কয়েক বারে আসামীকে ভিকটিম সর্বমোট ১৪,০০,০০০ টাকা দেয়।

এছাড়াও একই ভাবে উক্ত আসামীকে অত্র এলাকার আশিষ কুমার দাশ (৪৫) এর নিকট হতে ৮,০০,০০০, রাফেজা পারভীন (৫৫) এর নিকট হতে ৬,০০,০০০, টাকা এবং জহুরুল ইসলাম (৭২) এর নিকট হতে ২,০০,০০০ টাকা ফেরত প্রদান করে । অনুসন্ধানকালে আসামী ফরিদ আহম্মেদ উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত বলে সত্যতা পাওয়া যায়।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজি, বাংলাদেশ পুলিশ এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) শেখ মোনায়েম হোসেন, সঙ্গীয় এসআই(নিঃ) স্নেহাশিস দাশ সহ যশোর জেলার চৌকস দল কর্তৃক গত ২৪ জুন, রাত অনুমান ২২.৪৫ ঘটিকার সময় আসামী মোঃ ফরিদ আহম্মেদ (৫০), পিতা- মৃত মোজাহের ফকির, সাং-দূর্গাপুর, থানা ও জেলা-নড়াইলকে সদর থানাধনী দূর্গাপুর গ্রামস্থ আসামীর নিজ বাড়ি থেকে আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত থাকার যুক্তিসঙ্গত সন্দেহে ফৌ: কা: বি: ৫৪ ধারা মোতাবেক গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে ভিকটিম মোঃ মিজানুর রহমান (৪৫), পিতা- আয়েন উদ্দিন, সাং- দূর্গাপুর, থানা ও জেলা- নড়াইল বাদী হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে নড়াইল সদর থানার মামলা নং-৩০, তারিখ-২৫/০৬/২০২৩, ধরা -৪০৬/৪২০/১০৯ পেনাল কোড রুজু হয়।
উক্ত মামলাটি পিবিআই, যশোর জেলা স্ব-উদ্দ্যোগে গ্রহণ করে মামলার তদন্তভার পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) শেখ মোনায়েম হোসেন এর উপর অর্পণ করা হয়।
মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) শেখ মোনায়েম হোসেন মোঃ ফরিদ আহম্মেদ (৫০) কে অত্র মামলা সংক্রান্তে গ্রেফতার পূর্বক হেফাজতে গ্রহণ করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী ফরিদ আহম্মেদ জমির ব্যবসার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের লভ্যাংশসহ মূলধন ফেরত না দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে বলে স্বীকার করে। আসামী ফরিদ আহম্মেদকে গতকাল ২৫ জুন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমলী আদালত নড়াইল আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মামলার ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান পিবিআই যশোরের একটি সুত্র ।