নড়াইল পুলিশ সুপারের সংবর্ধনা পেলেন স্পেশাল অলিম্পিক-২০২৩ এ স্বর্ণপদক জয়ী রূপালী খাতুন

Uncategorized আইন ও আদালত খুলনা খেলাধুলা জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

মো: রফিকুল ইসলাম (নড়াইল) :  স্পেশাল অলিম্পিকস্ ওয়ার্ল্ড গেমস্ বার্লিন (জার্মানি)-২০২৩ এ সাঁতারে স্বর্ণ ও ব্রোঞ্জ পদক জয়ী রূপালী খাতুনকে সংবর্ধনা প্রদান করলেন নড়াইল জেলার ক্রীড়ানুরাগী পুলিশ সুপার মোসা: সাদিরা খাতুন। মঙ্গলবার  ১১ জুলাই, সকালে  পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়।


বিজ্ঞাপন

রূপালী খাতুন নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের তারাশী দক্ষিণপাড়া গ্রামের কৃষিজীবী টুকু মিয়ার মেয়ে। ২০১৭ সালে রূপালীর ক্রীড়াঙ্গনে প্রবেশ। রূপালী ২০২২ সালে জাতীয় পর্যায়ে বিকেএসপি কর্তৃক আয়োজিত সাঁতার প্রতিযোগিতায় ১ম হয়। পরবর্তীতে জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত ১৬-তম স্পেশাল অলিম্পিকস্ ওয়ার্ল্ড গেমস্ -২০২৩ এ সাঁতারে স্বর্ণ ও ব্রোঞ্জ পদক জয় করে বাকপ্রতিবন্ধী অদম্য এই রূপালী খাতুন।

মোট ১৯১ টি দেশের মধ্যে বিভিন্ন গ্রুপে অনুষ্ঠিত সাঁতার প্রতিযোগিতায় একটি গ্রুপে স্বর্ণপদক ও অন্য একটি গ্রুপে ব্রোঞ্জপদক জয় করে সে। বয়ে আনে দেশের জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি। তার এই অর্জনে গর্বিত ও আনন্দিত তার পরিবার তথা নড়াইলবাসী।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার তারকা খ্যাতিসম্পন্ন রূপালী খাতুনকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। এ সময় নড়াইল জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার  তাকে উপহার সামগ্রী, ক্রেস্ট ও অর্থ পুরস্কার প্রদান করেন। পুলিশ সুপার  বলেন, নড়াইল ক্রীড়া ও সংস্কৃতির ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ একটি জেলা।

এখানেই বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা ও রূপালীর মত তারকাদের জন্ম। ক্রিকেটের কিংবদন্তী যেমন বিশ্বে বাংলাদেশকে উচ্চ জায়গায় নিয়ে গেছে তেমনি রূপালী নড়াইলবাসী তথা সমগ্র দেশের জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি বয়ে এনেছে। রূপালীর এই অবদান নড়াইল তথা সমগ্র বাংলাদেশ মনে রাখবে।

তিনি বলেন, রূপালী সৎ রিক্সাচালক বাবার এক যোগ্য সন্তান। রূপালীর এই আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জনে তার পরিবার অপরিমেয় শ্রম দিয়েছে, তাদের অবদান অনস্বীকার্য।

তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কন্যা  সায়মা ওয়াজেদ পুতুল প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে কাজ করছে। বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে এবং তাদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

নড়াইলের শিকদার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শিকদার মনজুরুর রহমান পান্নু’র পৃষ্ঠপোষকতায় রূপালী এনে দিয়েছে নড়াইল বাসীর জন্য তারকা খ্যাতি। পুলিশ সুপার শিকদার মনজুরুর রহমান পান্নুকে রূপালীর মতো প্রতিবন্ধীদের পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং উৎসাহ দেন।

রুপালির বাবা বলেন, মেয়েটা কথা বলতে পারে না। তবে ইশারা ইঙ্গিতে বুঝাতে পারে। ইশারা ইঙ্গিতে বোঝায় সে মাশরাফির মত বড় হতে চায়। এমন সংবর্ধনা পেয়ে খুশিতে আত্মহারা রূপালীর বাবা ও তার পরিবারবর্গ। তারা পুলিশ সুপার এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাদেরকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য যে, গতকাল সোমবার  ১০ জুলাই নড়াইল সদর থানাধীন ১নং মাইজপাড়া ইউনিয়নের তারাশী গ্রামের সর্বস্তরের জনগণের সাথে “মাদক, জুয়া, সন্ত্রাস, জঙ্গী, ইভিটিজিং ও বাল্যবিবাহ বিরোধী” জনসচেতনতামূলক সভায় অত্র গ্রামের কৃতি সন্তান রূপালী খাতুন উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস্), মোঃ ওবাইদুর রহমান, অফিসার ইনচার্জ, সদর থানা, সাজেদুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক, জেলা গোয়েন্দা শাখা, মোঃ নাজমুল হুদা, পুলিশ পরিদর্শক, অপরাধ শাখা, নড়াইল, স্বর্ণ ও ব্রোঞ্জ পদক জয়ী রূপালী খাতুনের পরিবারবর্গ, ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *