২ কোটি ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যাপকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

কুমিল্লা প্রতিনিধি  : ভুয়া বিল-ভাউচারে কলেজ ফান্ডের ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক রতন কুমার সাহাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


বিজ্ঞাপন

গতকাল বৃহস্পতিবার ২৭ জুলাই, কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাৎ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
সংস্থাটির উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন,কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান ও কলেজের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর কাজী জাহাঙ্গীর আলম।

দুদকের  মামলা সূত্রে জানা গেছে , অধ্যাপক রতন কুমার সাহা, তৎকালীন হিসাবরক্ষক আব্দুল হান্নান এবং ক্যাশিয়ার কাজী জাহাঙ্গীর আলমের পরস্পর যোগসাজশে ২ কোটি ৪০ লাখ ৯২ হাজার ৯০৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা  হয়েছে, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে ৪৪টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় খাতভিত্তিক আর্থিক আয়-ব্যয় নির্বাহ করা হয়ে থাকে। রতন কুমার সাহা ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। এ পদে যোগ দিয়ে তার আগের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবু তাহেরের দায়িত্ব থেকে কলেজের ৪৪টি ব্যাংক হিসাবের মোট স্থিতি ৭ কোটি ১৫ লাখ ২৯ হাজার ৭২৮ টাকা বুঝে নেন।

রতন কুমার সাহার সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে ২০১৯ সালের ৩ মে তাকে ওএসডি করা হয়। এরপর একই বছরের ১১ জুন পরবর্তী অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া। তিনি যখন দায়িত্ব নেন তখন কলেজের ব্যাংক হিসাবগুলোর স্থিতি ছিল ৫ কোটি ৫৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪৬ টাকা।

দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, অধ্যাপক রুহুল আমিন ভূঁইয়া ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দিয়ে কলেজের পাঁচ শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করেন। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষা তহবিল, উন্নয়ন তহবিল, ল্যাবরেটরি তহবিল, অত্যাবশ্যকীয় কর্মচারী তহবিলসহ উল্লেখযোগ্য ২২টি খাতের আয়-ব্যয় পর্যালোচনা করে দেখে, এগুলোতে বিল-ভাউচার নেই, এমনকি ব্যয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা কমিটির রিকুইজিশনও ছিল না। মালামাল গ্রহণ বা বিতরণের প্রমাণ নেই এবং বিধি মোতাবেক ক্রয়/ব্যয় হয়নি মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। কলেজের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি অধ্যাপক রতন কুমার সাহার কর্মকালীন বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও আত্মসাতের প্রমাণ পায়।

অপরদিকে আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে গঠিত আরেকটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও। এরপর বিষয়টি দুদকের কাছে হস্তান্তর করা হলে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। অনুসন্ধানে অসৎ উদ্দেশ্যে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ২ কোটি ৪০ লাখ ১২ হাজার ৯০০ টাকা উত্তোলন ও আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া যায়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭(ক)/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা মামলা দায়ের করা হয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *