!! মন্তব্য প্রতিবেদন !! খুলনার পুলিশ কমিশনার হিসেবে মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম এর যোগদান : পাল্টে যাবে কেএমপি’র ক্রাইম সিন 

Uncategorized আইন ও আদালত খুলনা জাতীয় জীবনী ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

আমিনুর রহমান বাদশা :  খুলনা মেট্রোপলিটন  পুলিশ কেএমপি’র পুলিশ  কমিশনার হিসেবে মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম এর যোগদান করেছেন এবার পাল্টে যাবে কেএমপির ক্রাইম সিন, কারণ চাকুরী জীবনে তিনি যেখানেই কর্মরত ছিলেন সেখানকার ক্রাইম সিনের নীলনকশা ই রাতারাতি পাল্টে গেছে। সদালাপী, মিস্টভাষী এই পুলিশ কর্মকর্তা সাদাসিধা নৈতিকতার মানুষ তবে তিনি যথেষ্ট  দু:সাহসী, ন্যায়পরায়ণ ও দূরদর্শিতা সম্পন্ন একজন মেধাবী পুলিশ অফিসার। গতকাল ২৯ জুলাই তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কেএমপি’র উর্ধতন কর্মকর্তা সহ সবার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। কর্মস্থলে যোগদান করবেন আগামী ১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে।


বিজ্ঞাপন
পুলিশ কমিশনার (ডিআইজি) খুলনায় পৌছালে কেএমপি’ র পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

তিনি গতকাল শনিবার  ২৯ জুলাই খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ  কেএমপি’র খালিশপুর থানাধীন পুলিশ অফিসার্স মেসে কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার ( ডিআইজি) পদে পদন্নোতি পাওয়ার পরে  খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।


বিজ্ঞাপন
মো: মোজাম্মেল হক কেএমপি’র উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কুশল বিনিময় করছেন।

সৌজন্য সাক্ষাৎকালে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ  কেএমপি’তে স্বাগত জানান বিদায়ী পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা, বিপিএম-সেবা এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এএন্ডও)  সরদার রকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা। সৌজন্য সাক্ষাৎ এর পর তিনি কেএমপি’র ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সংক্ষিপ্ত আকারে তার পরিচয়পর্ব শেষ করেন।

বিদায়ী পুলিশ কমিশনার কেএমপি র নতুন কমিশনার (ডিআইজি) মো: মোজাম্মেল হক কে ফুল দিয়ে আগমনী শুভেচ্ছা জ্ঞ্যাপন করেছেন।

পরিচয় পর্ব চলাকালীন  উপস্থিত ছিলেন কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মোঃ সাজিদ হোসেন; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক এন্ড প্রটোকল) মোছাঃ তাসলিমা খাতুন, অতিরিক্ত ডিআইজি (ডেপুটি কমান্ড্যান্ট), পিটিসি, খুলনা হাবিবুর রহমান খাঁন,ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন; বিশেষ পুলিশ সুপার (সিটিএসবি) রাশিদা বেগম, পিপিএম-সেবা ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, পিপিএম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ডিবি)  বি.এম নুরুজ্জামান, বিপিএম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ)  মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক)  মনিরা সুলতানা, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (এফএন্ডবি), শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ইএন্ডডি) মোঃ কামরুল ইসলাম; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (আরসিডি) শাহরিয়ার মোহাম্মদ মিয়াজী, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৬, খুলনার পুলিশ সুপার কানাই লাল-সহ কেএমপি’র সকল অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার, সহকারী পুলিশ কমিশনারগণ, অফিসার ইনচার্জগণ এবং অন্যান্য অফিসারবৃন্দ।

এক নজরে মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম : মো: মোজাম্মেল হক পাবনা জেলার চাটমোহর থানার শাহাপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। জন্মগ্রহন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভেটেনারি সায়েন্সে ডিগ্রী নিয়ে ১৯৯৪ সালে ভেটেনারি সার্জন পদে জয়পুর হাট জেলায় যোগদান করেন। সেখানে চাকুরীকালীন সময়ে তিনি ১৫ তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে এএসপি পদে নিয়োগের জন্য পিএসসির সুপারিশ প্রাপ্ত হন।

ছোট্ট বাচ্চাদের নিয়ে ভালবেসে কেছে টেনে নিয়ে তাদের মাঝেই খুঁজে পেয়েছেন তার হারানো শৈশব।

অনিবার্য কারনবশতঃ পুলিশে যোগদান না করে তিনি ভেটেনারি সার্জন ইশ্বরদী হিসেবে যোগদান করেন। এসময় তিনি ১৮তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে এ.এসপি পদে নিয়োগের জন্য আবারও সুপারিশ লাভ করেন। তিনি ১৯৯৯ সালে ২৫ জানুয়ারি সহকারী পুলিশ সুপার পদে নিয়োগ লাভ করেন।

মৌলিক প্রশিক্ষন শেষে ২০০১ সালে তিনি সহকারী পুলিশ সুপার পঞ্চগড় সার্কেল হিসেবে গোগদান করেন।২০০৩ সালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাজশাহী সদর সার্কেল হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ২০০৫সালে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

পবিত্র জুম্মার নামাজ আদায়ের পর নিরমল, উদার মানবিক ও ধার্মিক মনের মানুষ একজন পুলিশ কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হক।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে তিনি নাটোর, রাজশাহী, কুমিল্লা এবং ঢাকা জেলারয় কর্মরত ছিলেন।কুমিল্লা জেলায় থাকাকালীন সময়ে তিনি ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্য হিসেবে দারপুর, সুদান গমন করেন। ১৩ মাস জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি UN Peace keeping medal লাভ করেন।

পোশাক পরিহিত হাস্যজ্জল মানবতার ফেরিওয়ালা পুলিশ কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হক।

২০১০ সালে ঢাকা জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মকালীন সময়ে তিনি পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন এবং জয়পুরহাটে মাদক, সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি তিনি শিক্ষা বিস্তারে জয়পুরহাট পুলিশ লাইন একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেন।

পাবনা জেলার চাটমোহর উন্নয়ন ফোরামের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন পাবনার গর্ব ও অহংকার পুলিশ কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হক।

এছাড়া বাংলাদেশে প্রথমবারের মত তিনি অবৈধ কিডনি কেনা-বেচার সংগে জড়িত একটি বড় চক্রকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হোন। এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১২ সালের পুলিশ উইকে তিনি রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) লাভ করেন।

চাটমোহর উন্নয়ন ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাথে মো: মোজাম্মেল হক।

অতপর তিনি ২০১২ থেকে ২০১৫ এর জুন বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দমনের পাশাপাশি সমগ্র বগুড়া জেলা পুলিশেরর কার্যক্রমে তিনি Digitnfited করতে সক্ষম হন।

এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৫ সালের পুলিশ উইকে তিনি আইজিপি ব্যাচ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় কর্তৃক আইসিটি “ডিজিটাল এওয়ার্ড ” লাভ করেন।

চাটমোহর উন্নয়ন ফোরাম আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নয়নের মণি পাবনার গর্বীত সন্তানের সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ মো: মোজাম্মেল হক কে গণসংবর্ধনা দেয় পাবনাবাসী।

২০১৫ সালর জুন মাসে তিনি পুলিশ সুপার নওগা হিসেবে বদলী হন।নওগায় কর্মকালীন সময়ে তিনি মাদক, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ দমনের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৬ সালের পুলিশ উইকে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক “বিপিএম” লাভ করেন।

২০১৭ সালের আগষ্ট মাসে তিনি ডিসি (ক্রাইম) হিসেবে ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশে যোগদান করেন। একই বছরের  নভেম্বর মাসে তিনি অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এ যোগদান করেন।

র‍্যাব-১৩ এ রংপুর বিভাগে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ দমনে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেয়ায় তিনি ২০১৯ সালের পুলিশ উইকে বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক “বিপিএম” সাহসিকতা লাভ করেন।

র‍্যাব  -১৩ রংপুর কর্মকালীন সময়ে তিনি জঙ্গিবাদ দমনে সকল র‍্যাব ফোর্সেস  ব্যাটালিয়নের মধ্যে ১ম স্থান এবং সামগ্রীক মূল্যায়নে তৃতীয় স্থান লাভ করায় “র‍্যাব এওয়ার্ড ” লাভ করেন।

 

একটা মন্দিরের পুরোহীত পরম স্নেহের মহিমায় মহিমান্বিত সাদাসিধা নৈতিকতার মানুষ মো: মোজাম্মেল হক এর মাধায় হাতবুলিয়ে তাকে আশীর্বাদ করছেন।

২০১৯ থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত তিনি র‍্যাব-৪ মীরপুরের কমান্ডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। করোনা কালীন সময়ে তিনি মানবিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অস্ত্র উদ্ধার, মাদক দমন, সন্ত্রাস দমন, ব্লু লেস মামলা ডিটেক্ট এবং জঙ্গি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি।

জঙ্গি দমনে ১ম স্থান, কুলেস মামলা ডিটেকশনে ১ম স্থান এবং সামগ্রিক ভাবে ২য় স্থান লাভ করায় সর্বমোটই ৩ ক্যাটাগরিতে তিনি “র‍্যাব এওয়ার্ড ” লাভ করেন।

র‍্যাব -৪ এ কর্মকালীন সময়ে ২০২২ সালের মে মাসে তিনি ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৬/১০/২০২২ তারিখে তিনি হাইওয়ে পুলিশে যোগদান করেন।

হাইওয়ে পুলিশে কর্মকালীন সময়ে মহাসড়কে অপরাধ দমন, দুর্ঘটনা হ্রাসকরণ, যানজট নিয়ন্ত্রনসহ ট্রাফিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

গত ১৫ জুলাই, ২০২৩ তারিখে তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে বদলীর আদেশ লাভ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিনয়ী, সদালপি এবং বন্ধু বৎসল।

তিনি তার জন্মস্থান পাবনায় এবং পাবনার বাইরে অসংখ্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের সংগে জড়িত।

পরিবার পরিজন নিয়ে একই ফ্রেমে মো: মোজাম্মেল হক, একজন সফল স্বামী, সফল জনক, সর্বোপরি, একজন সফল পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি বিবাহিত এবং ৩ সন্তানের জনক। বড় মেয়ে এমবিবিএস ডাক্তার, ছেলে এলএলবি (অনার্স) সুসম্পন্ন করে এলএলএম করছে এবং ছোট মেয়ে একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার কে,এম রুহুল আমীন আজকের দেশ ডটকম কে জানান, সম্প্রতি পাবনা জেলার চাটমোহর উন্নয়ন ফোরাম এর পক্ষ থেকে মো: মোজাম্মেল হক কে কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার (ডিআইজি) পদে পদায়ন উপলক্ষে এক বিরাট সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পাবনা জেলা ও চাটমোহর উপজেলার সরবস্তরে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে।মো: মোজাম্মেল হক কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার (ডিআইজি) পদে পদন্নোতি পাওয়ায় পাবনাবাসী রীতিমতো গর্ব অনুভব করছেন তিনি পাবনা জেলা তথা চাটমোহর উপজেলাবাসির অহংকার বলেও কে,এম রুহুল আমীন দাবি করেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *