মো: মোজাম্মেল হক : সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বঙ্গবন্ধু। অর্থনৈতিক অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা বলতে কিছুই ছিল না। ১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল ‘সোনার বাংলা’ গড়ার, যেখানে থাকবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং জাতীয়তাবাদ। তিনি ছিলেন অসামপ্রদায়িক চেতনার বরপুত্র।
তাইতো ১৯৭৩ সালে ফেব্রয়ারি মাসে সিরাজগঞ্জের এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘শাসনতন্ত্রে লিখে দিয়েছি, যে কোনদিন আর শোষকরা বাংলার মানুষকে শোষণ করতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। আমি বাঙালি, বাঙালি জাতি হিসেবে বাঁচতে চাই সম্মানের সঙ্গে। আমার রাষ্ট্র হবে ধর্মনিরপেক্ষ, মানে ধর্মহীনতা নয়’। অর্থাৎ তাঁর স্বপ্ন একটি অসামপ্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যেখানে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা স্বাধীনভাবে স্ব স্ব ধর্ম চর্চা করবে। তিনি আরো বলেছিলেন পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না।
বঙ্গবন্ধু সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করা একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম ছিলেন। তবে সামপ্রদায়িকতাকে তিনি বর্জন করেছিলেন। অন্য ধর্ম ও মানুষের প্রতি সহনশীলতা ও ভালোবাসা ধার্মিকের বড় গুণ। অসামপ্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন বলেই তার পক্ষে বাংলাদেশের সকল মানুষকে এক করা সম্ভব হয়েছিল।
ঘাতকের বুলেটে ১৫ আগষ্ট কালো রাতে জাতিরজনক তাঁর প্রিয় দুই কন্যা ব্যতিত সপরিবারে শাহাদত বরণ করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি এবং চেতনা অমর। বঙ্গবন্ধুর চেতনা ধারণ করে উন্নত, সমৃদ্ধ এবং সম্পূণ নিরাপদ জাতিরজনকের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। হে রাব্বুল আলামীন জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ ১৫ আগষ্ট শাহাদতবরণকারী সকলকে জান্নাতবাসী করুন। আমীন।
( লেখক : খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার)