অপমান সইতে না পেরে ক্ষোভে অভিমানে মৃত্যু কে ই বেছে নিলেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ইন্জিনিয়ার মালেক।
মঠবাড়ীয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি : ভিলেজ পলিটিক্সের শিকার পিরোজপুর জেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির শ্রেষ্ঠ সভাপতি ও মঠবাড়ীয়ার দেলোয়ারা মালেক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং হোসেন আলী নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা বিশিস্ট শিক্ষানুরাগী আব্দুল মালেক ইঞ্চিনিয়ার। ওরা তাকে বাঁচতে দিলো না। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও গান্যমান্য ব্যক্তিদের সম্মুখে স্বার্থানেস্বী মহলটি কমিটির সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল মালেক ইঞ্চিনিয়ারকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এমনকি রব মেম্বার চেয়ার তুলে তার দিকে তেরে আসে। এ অপমান অপদস্ত সয্য করতে না পেরে তিনি হার্ট অ্যাটাক করেন। শেষ পরিনাম তার অকাল মৃত্যু।
গতকাল সোমবার ৭ আগস্ট সন্ধ্যা ৬ টায় বিশিস্ট শিক্ষানুরাগী আব্দুল মালেক ইঞ্চিনিয়ার ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।
তিনি গনপুর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন। চাকুরী জীবনে অত্যান্ত চৌকস ও নিষ্ঠাবান অফিসার ছিলেন।
তিনি অবসর নিয়ে গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া উপজেলার পাতাকাটা গ্রামের শিশুদের মাজে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নিজ জমিতে ও নিজ অর্থায়নে এ দুটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
ঢাকার বিলাশ বহুল জীবন যাত্রা পরিত্যাগ করে, বিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ের শিশুদের নিজ সন্তানের মতো ভালোবেসে প্রত্যন্ত গ্রাম পাতাকাটায়ই বসবাস করতেন।
বিদ্যালয়ের দুইজন অল থ্রু ফাস্ট ক্লাস উচ্চ শিক্ষিত সহকারী শিক্ষককে দুইজন স্বার্থনেসী ব্যক্তি নিজ স্বার্থ উদ্ধারের ব্যর্থ হয়ে ভিলেজ পলিটিক্স করে, ষড়যন্ত্র মুলক ভাবে সুপরিকল্পিত ভাবে নাটকীয় কায়দায় উপজেলা প্রাথমিক অফিসারকে ম্যানেজ করে একজন মেধাবী উচ্চ শিক্ষিত সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করায়।
ঐ মেধাবী ও উচ্চ শিক্ষিত শিক্ষকের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিরসনের জন্য স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও এলাকার গৈন্যমান্য ব্যক্তিদের বৈঠক ডাকেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল মালেক ইঞ্চিনিয়ার।
বৈঠকে রব মেম্বার ও শাহাদাত মুন্সী সবার সম্মুখে এই মহান শিক্ষানুরাগীকে অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে ও রব মেম্বার তাকে উদ্দেশ্য করে চেয়ার তুলে তেরে আসে। সবাই হতভম্ব হয়ে পড়ে।
সবাই বার বার রব মেম্বার ও শাহাদাত মুন্সীকে বাঁধা দিলেও তারা দুজন সবার বাঁধা উপেক্ষা করে বার বার মালেক ইঞ্চিনিয়ারের দিকে তেরে আসে ও অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে।আব্দুল মালেক ইঞ্চিনিয়ার রব মেম্বার ও শাহাদাত মুন্সীর অপমান অপদস্ত সয্য করতে না পেরে, রাতে হার্ট অ্যাটাক করেন।
জরুরী ভিত্তিতে এ্যামুলেন্স যোগে তাকে পরদিন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল সিএমএইচ এ নিয়ে আসা হয়। পরদিনই তিনি কোমায় চলে যান। কারন হার্ট অ্যাটাক করায়, তার ফুসফুস থেকে লিভারে পানি আসায়, তার লিভার ড্যামেজ হয়ে যায়। লিভার ড্যামেন হওয়ার পরপরই দ্রুত তার কিডনি ড্যামেস হয়ে যায়।
২৫ জুলাই থেকে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল সিএমএইচ এ মুমূর্ষু অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আজ সন্ধ্যা ৬ টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল সিএমএইচ এ ICU তে সবাইকে কাঁদিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
তার মতো ভালো মানুষ সমাজে বিরল।তার মতো একজন পরিপূর্ণ ভদ্র লোক ও ভালো মানুষকে যে ব্যক্তিদ্বয় অপমান অপদস্ত করে, মৃত্যু পর্যন্ত ঠেলে দিয়েছে, তারা হত্যার মতো অপরাধ করেছে।
৮ আগস্ট বাদ জোহর মঠবাড়ীয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও বিকাল সাড়ে ৩ টায় তার প্রতিষ্ঠিত দেলোয়ারা মালেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হোসেন আলী নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা পাতাকাটা পারিবারিক কবরস্থানে বাবা মা পাশ্বে তাকে সমায়ীত করা হয়।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র, ২ কন্যা ভাই বোন, বহু আত্মীয় স্বজন গুনগ্রহী রেখে গেছেন। তার বয়স হয়েছিলো ৭৮ বছর।