নিজস্ব প্রতিবেদক : বায়ুদূষণ রোধে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব সুনির্দিষ্টকরণ এবং বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং বারসিক নামক দুটি সংগঠন। পাশাপাশি বায়ুদূষণ ও ধূলাদূষণ রোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ইউটিলিটি সার্ভিসের (গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, পয়োনিষ্কাশন) জন্য রাস্তা খোঁড়াখুড়ির কাজ যেন সকল শর্ত মেনে করে সে দাবিও জানানো হয়।
বুধবার রাজধানীর কলাবাগানে পবা মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বায়ু দূষণে আমরা প্রথম হতে চাই না। তাই সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সময়ভিত্তিক সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা চাই। ঢাকা বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ দূষিত শহরগুলোর মধ্যে একটি। এই দূষণমাত্রা দিনদিন বেড়েই চলছে। সেই সাথে দূষণের মাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত ধুলা। দূষণ নিয়ন্ত্রণে নেই কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ। লাগামহীন বাড়তে থাকা দূষণের কারণে দিল্লির পর এবার ঢাকাকেও ‘গ্যাস চেম্বার’ হিসাবে আখ্যায়িত করা যায়। মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে মানবস্বাস্থ্য।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে প্রতিবছর অনেক মানুষ বায়ুদূষণের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। চিকিৎসকদের ধারণা যদি দূষণ কমানো না হয়, প্রতিবছরই মৃতের এই সংখ্যা বাড়তে থাকবে। বায়ুদূষণের ফলে শিশু মৃত্যুর হারে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। ইটের ভাটা, অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণকাজ করা, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও আবর্জনা পোড়ানোসহ নানা কারণে এ অবস্থার তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বায়ুমান গবেষকরা। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এআইএলইউ বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদফতরেরর সাথে যৌথ একটি গবেষণা পরিচালনা করে। ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটা, সড়কের ধুলা, যানবাহন এবং বায়োগ্যাস পোড়ানোকে দায়ী করে তারা। ঢাকার দূষণের জন্য ইটভাটা ৫৮ শতাংশ, সড়কের ধুলা ১৮ শতাংশ, যানবাহনের ধোঁয়া ১০ শতাংশ, বায়োগ্যাস পোড়ানো ৮ শতাংশ এবং অন্যান্য কারণ ৬ শতাংশ দায়ী বলে জানানো হয়। বায়ুদূষণের কারণগুলো চিহ্নিত করা হলেও তা সমাধান না করে উল্টো পথে হাঁটে সরকারি সংস্থাগুলো। ঢাকা মেট্রোরেল কোম্পানিসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা যেসব নির্মাণ কাজ করছে, সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে ধুলা উৎপন্ন হচ্ছে। অথচ পানি ছিটিয়ে এই ধুলার দূষণ ১০ ভাগের নিচে নামিয়ে আনা যায়। সম্প্রতি আন্তঃমন্ত্রাণালয় সভায় পরিবেশ অধিদফতর, সিটি করপোরেশন, মেট্রোরেল কোম্পানিকে দূষণরোধে বিভিন্ন দায়িত্ব দেয়া হলেও তাদের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- পবার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌ. মো. আবদুস সোবহান, বারসিকের পরিচালক সৈয়দ আলী বিশ্বাস, পবার আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহেদ কায়েস, বারসিকের সমন্বয়কারী মো. জাহাঙ্গীর আলম, বানিপার সভাপতি প্রকৌ. মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।