!! বর্তমানে দেশে সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধনকৃত সমবায় সমিতির সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৯৬ হাজার। সমবায় সমিতিসমুহের ব্যক্তি সদস্য প্রায় ১২ লাখ। ২০১৩ সালে আইন পাসের পর সমবায় আইন ২০০১ (সংশোধিত ২০১৩) এর ১৮(৮) ধারা আগষ্টিন পিউরিফিকেশন, ইমানুয়েল বাপ্পি মন্ডল ও বাদল বি. সিমস্যাং ছাড়া এখন পর্যন্ত অন্যকোন সমবায়ী চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যাননি।এমনকি খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ সমবায় সমিতি দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি: ঢাকা এর ব্যবস্থাপনা কমিটির যে সকল সদস্য অব্যাহতভাবে তিন মেয়াদ দায়িত্ব পালন করেছেন তারা আইনের কোন ফাঁকফোকর না খুজেঁ নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। নতুনদের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে আসার সুযোগ করে দিয়েছেন।অন্যকোন সমবায় সমিতিতেও আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বা আইনের কোন ফাঁকফোকর খুঁজে চতুর্থ মেয়াদে থাকার অপচেষ্টা করেছেন বলে জানা যায়নি !!
নিজস্ব প্রতিবেদক : সমবায় আইন ২০০১ (সংশোধিত ২০১৩) জাতীয় সংসদে পাস করার পূর্বে আইন সংশোধনকল্পে সমবায় মন্ত্রণালয় ও সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক গঠিত কমিটি পর্যাপ্ত যাচাই বাচাই,সমবায় সমিতির প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় ও বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করেই খসড়া চুড়ান্ত করেছেন।যা জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে।
বর্তমানে দেশে সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধনকৃত সমবায় সমিতির সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৯৬ হাজার। সমবায় সমিতিসমুহের ব্যক্তি সদস্য প্রায় ১২ লাখ।২০১৩ সালে আইন পাসের পর সমবায় আইন ২০০১(সংশোধিত ২০১৩) এর ১৮(৮) ধারা আগষ্টিন পিউরিফিকেশন, ইমানুয়েল বাপ্পি মন্ডল ও বাদল বি. সিমস্যাং ছাড়া এখন পর্যন্ত অন্যকোন সমবায়ী চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যাননি।এমনকি খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ সমবায় সমিতি দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:,ঢাকা এর ব্যবস্থাপনা কমিটির যে সকল সদস্য অব্যাহতভাবে তিন মেয়াদ দায়িত্ব পালন করেছেন তারা আইনের কোন ফাঁকফোকর না খুজেঁ নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। নতুনদের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে আসার সুযোগ করে দিয়েছেন।অন্যকোন সমবায় সমিতিতেও আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বা আইনের কোন ফাঁকফোকর খুঁজে চতুর্থ মেয়াদে থাকার অপচেষ্টা করেছেন বলে জানা যায়নি।
অথচ সমবায় আইন ২০০১(সংশোধিত ২০১৩) এর ১৮(৮) ধারা চ্যালেঞ্জ করে প্রথমে আগষ্টিন পিউরিফিকেশন হাইকোর্টে রীট (পিটিশন নং- ১১০৪০/২০২১) দায়ের করেন। আদালত তা খারিজ করে দেয়। আগষ্টিন পিউরিফিকেশন পুনরায় আবারও আরেকটি রীট (পিটিশন নং-১৩০৪৮ /২০২১) দায়ের করেন। সাথে ইমানুয়েল বাপ্পি মন্ডল (পিটিশন নং-১৩২৫৯ /২০২১) এবং বাদল বি. সিমস্যাং (পিটিশন নং-১৩২৬০ /২০২১) পৃথক পৃথক রীট দায়ের করেন।
অবশ্য চতুর্থ মেয়াদে অবৈধভাবে আগষ্টিন পিউরিফিকেশন গংদের দায়িত্বে থাকা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পাল্টা রীট পিটিশন দায়ের করেছেন এমসিসিএইচএসএল’র সদস্য অমুল্য লরেন্স পেরেরা। রীট পিটিশন নং-৫৫৯১/২০২৩। যা এখন বিচারাধিন রয়েছে।
সূত্রমতে, চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরিফিকেশন, সেক্রেটারী ইমানুয়েল বাপ্পি মন্ডল, ট্রেজারার বাদল বি. সিমস্যাং এবং পরিচালক কল্পনা ফলিয়া দি মেট্রোপলিটন খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি: এ আইন বহির্ভূতভাবে চতুর্থ মেয়াদে আছেন।কেননা, সমবায় আইন ২০০১(সংশোধিত ২০১৩) এর ১৮(৮) ধারায় বলা হয়েছে”ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে একাধিক্রমে তিনটি মেয়াদ পূর্ণ করিয়াছেন এমন কোন সদস্য উক্ত মেয়াদের অব্যবহিত পরবর্তি একটি মেয়াদের নির্বাচনে প্রার্থী হইবার যোগ্য হইবেন না”।
অথচ তারা চার জন দি মেট্রোপলিটন খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি: (এমসিসিএইচএসএল) এ অবৈধভাবে চতুর্থ মেয়াদে পদ দখল করে আছেন। আর এজন্যেই তারা ১৮(৮) ধারা চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
এবিষয়ে সমবায় অধিদপ্তরের ২০২০-২১ অর্থবছরের অডিট রিপোর্টে চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচিত দেখানো চেয়ারম্যান সহ ৪ জনকে অপসারনের নির্দেশনা দেয়া হয় এবং তাদের স্বাক্ষরে ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা বন্ধ করতে বলা হয়।
সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক ও অডিট দল প্রধান মোছা: নূর-ই-জান্নাত এর নেতৃত্বে সম্পাদিত অডিট রিপোর্টের ১৫ নং পৃষ্ঠায় পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বর্তমান কমিটির পূর্বের কমিটির মেয়াদ ২৯/১০/২০২১ পর্যন্ত বলবৎ ছিল। কভিড মহামারির অজুহাত দেখিয়ে ব্যববস্থাপনা কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে সমবায় সমিতি আইন ২০০১(২০০২,২০১৩)এর ৪ ধারা হতে অব্যাহতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকারের গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে (আদেশ নং-৪৭.৬১.০০০০.০৩২.০৬.০৮৬.১৬-৩৬৮ তারিখ ১৪/৯/২০২১)৪ ধারাা হতে অব্যাহতি পেয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ ১২০ দিন বৃদ্ধি পায়। সে মোতাবেক ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ ২৮/২/২০২২ তারিখ পর্যন্ত বহাল থাকে।
পর্যবেক্ষণে আরো বলা হয়, ১৯/২/২০২২ তারিখের নির্বাচনে চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউিিরফিকেশন, সেক্রেটারী ইমানুয়েল বাপ্পি মন্ডল, পরিচালক অর্থ ও প্রশাসন বাদল বি সিমস্যাং ও সদস্য কল্পনা মাারিয়া ফলিয়া চতুর্থ বারের মত নির্বাচিত হয়েছেন। উক্ত চার ব্যক্তি সমবায় সমিতি আইন ২০০১(২০০২,২০১৩)এর ১৮(৮) ধারা এবং জারিকৃত সংশ্লিষ্ট তফসিলের নির্বাচনী জ্ঞাতব্য বিষয়ের ৬ নং শর্ত অনুযায়ী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য অযোগ্য।
দ্রুত তাদের ব্যবস্থাপনা কমিটি থেকে অপসারন করার লক্ষ্যে সমবায় সমিতি আইন ২০০১(২০০২,২০১৩)এর ধারা ২২(১) অথবা সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ এর ৩৮ ও ৩৯ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা প্রয়োজন।পরবর্তিতে উক্ত চারটি শুন্য পদে সমবায় সমিতি আইন ২০০১(২০০২,২০১৩)এর ধারা ২০(১) অনুসরন করে যোগ্য সদস্যকে কো-অপ্ট করা যেতে পারে।
আবার সমিতির উপ-আইন অনুযায়ী ব্যাংক হিসাব সভাপতি,সেক্রেটাারি এবং ম্যােেনজারের যেকোন দুই জনের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হয়ে থাকে।
যেহেতু সভাপতি এবং সেক্রেটারি দুই জনই সমবায় সমিতি আইন ২০০১(২০০২,২০১৩)এর ১৮(৮) ধারা মোতাবেক ব্যবসস্থাপনা কমিটির সদস্য হওয়ার অযোগ্য, সেহেতু তাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ও ব্যাংক হিসাব পরিচালনা নৈতিক ও আর্থিক বিধির পরিপন্থি।
পর্যবেক্ষণ অন্তে সুপারিশে বলা হয়, যে সমবায় সমিতি আইন ২০০১(২০০২,২০১৩)এর ১৮(৮) ধারা মোতাবেক অযোগ্য ব্যক্তিবর্গকে দ্রুত একই আইনের ধারা ২২(১) অথবা সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ এর ৩৮ ও ৩৯ বিধি মোতাবেক অপসারন করে সমবায় সমিতি আইন ২০০১(২০০২,২০১৩)এর ধারা ২০(১) অনুসরন করে যোগ্য সদস্যকে কো-অপ্ট করার পরামর্শ দেয়া হলো। একই সাথে ব্যাংক হিসাব পরিচালনার স্বার্থে দ্রুত ব্যবস্থাপনা কমিটিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে সহ-সভাপতিকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়ার পরামর্শ দেয়া হল।
দেশের ১ লাখ ৯৬ হাজার সমিতির ১২ লাখ সদস্য যেখানে আইনের ১৮(৮) ধারা চ্যালেঞ্জ করলেন না বা আইনের ফাঁকফোকর খুঁজে চতুর্থ মেয়াদে থাকার চেষ্টা করলেন না সেখানে আগষ্টিন পিউিিরফিকেশন গং কেন টাকা পয়সা খরচ করে আদালতের দ্বারস্থ হলেন আবার অবৈতনিক পদে চতুর্থ মেয়াদে থাকার জন্যে আইনের ফাঁকফোকর কেন খুঁজে বের করেছেন, এটাই এখন সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন।
চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরিফিকেশন, সেক্রেটারি ইমানুয়েল বাপ্পি মন্ডল, ট্রেজারার বাদল বি. সিমস্যাং ও পরিচালক কল্পনা ফলিয়ার বিগত ১১ বছরে অর্জিত সম্পদ এবং দি মেট্রোপলিটন খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি:এর অনিয়ম দুর্নীতি তদন্ত করলেই তাদের অবৈতনিক পদে থাকার প্রানান্তকর প্রচেষ্টার কারন জানা যাবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন।
সমিতির অবৈতনিক পদে থাকা এই চারজন মুলত বিশেষ কোন চাকরি বা ব্যবসা ছাড়াই প্রচুর অর্থ বিত্তের মালিক বনে গেছেন। তাদের বগলদাবা করে রাখা সমবায় অধিদপ্তরের অডিট দল বা কোন তদন্ত কমিটি দিয়ে নয়, দুর্নীতি দমন কমিশন যদি তদন্ত করে তাহলে চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরিফিকেশন, সেক্রেটারি ইমানুয়েল বাপ্পি মন্ডল, ট্রেজারার বাদল বি. সিমস্যাং ও পরিচালক কল্পনা ফলিয়ার অনিয়ম, দুর্নীতি,ক্ষমতার অপব্যবহার ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ এবং দি মেট্রোপলিটন খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি: এর বেআইনী ভাবে আমানত গ্রহন ও কর ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার প্রমান পাওয়া যাবে বলে সমবায় অধিদপ্তরের নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের একাংশের দাবি ।