শোকের মাসে ঢাকা ওয়াসার রাজস্ব জোনের রাজস্ব কর্মকর্তাদর রাজকীয় পিকনিক ও রাজকীয় নৌভ্রমণ !  

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

শোকের মাসে দেশব্যাপী চলছে জাতির জনকের শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নানারকম আয়োজন ঠিক তখনই ঢাকা ওয়াসার রাজস্ব কর্মকর্তাদের ভোগবিলাসী কর্মযজ্ঞ।


বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক  : আগষ্ট মাস শোকের মাস। আগষ্ট মাস আসলেই এক ধরণের শূণ্যতা কাজ করার কথা। সারাদেশে যখন জাতির জনকের শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস  উপলক্ষে নানারকম কর্মসুচী চলে ঠিক সেই মাসেই  ঢাকা ওয়াসার রাজস্ব জোনগুলোতে উল্টো কাজ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে ।


বিজ্ঞাপন

অভিযোগ অনুযায়ী জানা গেছে,  রাজস্ব জোন-১, রাজস্ব জোন-৬ কক্সবাজার এবং টাঙ্গুয়ার হাওরে নৌ ভ্রমণে গিয়েছে। রাজস্ব জোন-২ এর রাজস্ব কর্মকর্তাএ এনায়েত করিমের নেতৃত্বে টাঙ্গুয়ার হাওরে নৌ ভ্রমণে গিয়েছে।

অপর দিকে  এনায়েত করিম একজন জাতীয়তাবাদী এমপ্লিয়জ ইউনিয়ন (৩১৮৫) কর্মী ছিলেন। বর্তমান সরকারের আমলে খোলস বদলে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি লাভ করেন পরে রাজস্ব কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি লাভ করেন। রাজস্ব জোন-৬ এর উপ প্রধান কর্মকর্তা এনামুল হকের নেতৃত্বে কক্সবাজারে ৯ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে কক্সবাজারে পিকনিক করেছেন।

পিছিয়ে নেই  রাজস্ব জোন-১ এর উপপ্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সায়ীদও একি রকম সকল বিলিং সহকারীর কাছ থেকে টাকা তুলে নৌভ্রমণের আয়োজন করেছেন। খোদ ঢাকা ওয়াসাতে প্রশ্নের জন্মের দিয়েছে যে একজন বিলিং সহকারীর মাসিক বেতন ১৮ হাজার টাকা তারা কি করে এই শোকের মাসে ৯ হাজার টাকা দিয়ে পিকনিকের আয়োজন করে।

এই সমস্ত রাজস্ব জোনের জোনাল প্রধানদের মোটামুটি বক্তব্য হচ্ছে আমাদের এমডি সাহেব প্রধানমন্ত্রীর লোক। আমরা এমডি স্যারের কাছের  লোক আমাদের আওয়ামী লীগ না করলেও চলে। আমাদের নামে কোনো নিউজ করে লাভ নেই। এ ধরনের মনোভাব নিয়েই জোনাল প্রধান গং একের পর এক দুর্নীতি করে চলেছেন।

রাজস্ব জোন-৩ এর উপপ্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্রাবস্থায় শিবিরের লোক ছিলেন সেও কোনো শোক দিবসের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন না। অডিট অফিসার হতে ২০২১ সালে পদোন্নতি নিয়ে বর্তমান সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন বিরোধী কাজ করে।

রাজস্ব জোন-৪ এর রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান শাহীন কেরানি হতে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি লাভ করে গতবছর রাজস্ব কর্মকর্তা পদে পদায়ন লাভ করেন। তিনিও জাতীয়তাবাদী এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন।

রাজস্ব জোন-৮ এর উপ-প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা জাকির হোসেন প্রধানিয়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রাবস্থায় শিবিরের সাথে যুক্ত ছিলেন পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় হতে পাস করে প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকা ওয়াসাতে যোগদান করেন। পরবর্তী ২০২০ সাল হতে অদ্যাবধি উপপ্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা পদে পদায়িত আছেন।

রাজস্ব জোন গুলোতে পূর্বের থেকে দুর্নীতির মাত্রা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। মিটারের বিল জমায় রেখে গ্রাহকের সাথে আঁতাত করে পরবর্তী বিল কমিয়ে দেওয়ার কথা বলে ঘুষ নেওয়া। নির্মাণকালীন সময়ে মিটার থাকা সত্ত্বেও গ্রাহকদের স্কয়ারফিটে বিল মাপা হবে এই ভয় দেখিয়ে গ্রাহকদের থেকে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।অনেকদিন

যাবত বিলিং সহকারীরা বছরের পর বছর একই রাজস্ব জোনে থাকার জন্যে গ্রাহকদের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছেন। রাজস্ব জোন-৭, রাজস্ব জোন-৪ এ এমনও আছে এক যুগেরও বেশী ধরে বিলিং সহকারী পদে নিয়োজিত আছেন। তাছাড়া উপপ্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাদের আত্নীয় স্বজনদের মিস্ত্রি, বিলিং সহকারী পদে নিয়োগ দিয়ে অনৈতিক সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে।

উদাহারণস্বরুপ রাজস্ব জোন-১ এর উপপ্রধান আবু সায়ীদ তার আপন বড় ভাই আবু মুসা বিলিং সহকারী পদে নিয়োগ দিয়ে একই জোনে রাজস্ব আদায়ের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। একদাগে অধিকাংশ কর্মকর্তাদের আত্নীয় স্বজন বিলিং সহকারী পদে নিয়োজিত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না ।

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম খানের সরলতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেনীর কর্মকর্তারা এই ধরনের অনৈতিক দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। দুর্নীতির খবর গণমাধ্যামে প্রকাশিত হলে ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের আশেপাশের লোকদের ম্যানেজ করে দুর্নীতি করে যাচ্ছে। এবং তারা অতিরিক্ত পরিমাণে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছে ।

উদাহারণস্বরুপ, রাজস্ব জোন-৯ এর উপ প্রধান কর্মকর্তা ফারুক হোসেন এবং এনায়েত কবিরকে স্পেনে পাঠিয়েছে গত বছর। চলতি মাসে উপপ্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এনামুল হককে ডেনমার্ক পাঠাচ্ছে।

অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগিনা শেখ ফজলুল হক মণির শিক্ষক প্রফেসর আসাদুজ্জামানের সন্তান মোঃ আজিমুজ্জান ২০১৯ সাল থেকে প্রশাসনে ওএসডি অবস্থায় আছেন। তার বিরুদ্ধে নামে-বেনামে কোনো প্রকার অভিযোগ না থাকাও সত্ত্বেও তাকে ওএসডি করে রাখা হয়েছে।

ঢাকা ওয়াসাতে মোটামুটি ব্যাবস্থাপনা পরিচালক  কে আড়ালে রেখেই দুর্নীতিবাজরা তাদের দুর্নীতি বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে ঢাকা ওয়াসাকে স্মার্ট ঢাকা ওয়াসাতে রুপান্তরিত করার জন্যে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের গতিশীল নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সন্তানদের অভাব পরিলক্ষিত করা যাচ্ছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *