নিজস্ব প্রতিবেদক : ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয় বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ‘জনগণের পুলিশ’ হওয়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি পুলিশ জনগণের সেবায় মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। পুলিশ ব্লাড ব্যাংক এরই প্রকৃষ্ঠ উদাহরণ। তিনি গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে পুলিশ ব্লাড ব্যাংকের ১৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। আজীবন রক্তদাতাদের মধ্যে অনুভূতি ব্যক্ত করেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী মাকসুদা লিমা এবং পুলিশ ব্লাড ব্যাংকে ৩৮ বার রক্তদাতা রাজারবাগ পুলিশ টেলিকমের অফিস সহকারী মোঃ নুরুল ইসলাম।
আইজিপি বলেন, পুলিশ সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতির পিতার আহ্বানে যেভাবে জীবন উৎসর্গ করেছেন, তেমনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়ও তারা প্রয়োজনে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে কুন্ঠাবোধ করেন না। তিনি বলেন, পুলিশ ব্লাড ব্যাংক কোভিডের সময় ৫ হাজার ১০০ ব্যাগ প্লাজমা দিয়েছে, যা একটি অনন্য রেকর্ড।
তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যরা ব্লাড ব্যাংকে নিজের রক্ত দিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষায় বদ্ধপরিকর। এ ব্লাড ব্যাংক থেকে এখন পর্যন্ত ৭০ হাজার ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। আগামী দিনেও এ সেবা অব্যাহত থাকবে।
পুলিশ প্রধান বলেন, করোনার চরম বিপর্যয়কালে নিজের জীবন বাজি রেখে পুলিশ জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, সাধারণত সন্তান মা-বাবাকে ছেড়ে চলে যেতে দেখা যায়। কিন্তু মা-বাবা সন্তানকে ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না। করোনাকালে মা-বাবা সন্তানকে ফেলে চলে যাওয়ার মত বিপর্যয়ও আমরা দেখেছি। সেখানে পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে এসেছেন। তারা মৃতের দাফন ও সৎকারের ব্যবস্থা করেছেন। শুধু তাই নয় করোনাকালে পুলিশ মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছে, অসুস্থদের হাসপাতালে নিয়ে গেছে।
মুখ্য আলোচক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনায় সর্বোচ্চ পরিমাণ প্লাজমা দিয়েছে পুলিশ ব্লাড ব্যাংক। আমি মনে করি, এ উদ্যোগ অন্য প্রতিষ্ঠানেও আলো ছড়াবে। তিনি বলেন, রক্ত নেওয়ার আগে শরীরে কোন রোগ আছে কি-না তা পরীক্ষা করা হয়। পুলিশ সদস্যদের সুস্থতার হার বেশি বলেই এতো পরিমাণ রক্ত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বলেন, স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে পুলিশ। আইনি সেবার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে কোভিডের সময় মানবিক পুলিশ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে ।
এর আগে অতিথিরা আজীবন রক্তদাতা হিসেবে পাঁচ শতাধিক ডোনারের রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। পরে আজীবন রক্তদাতা হিসেবে নিবন্ধনকৃত সদস্যরা শপথবাক্য পাঠ করেন।
উল্লেখ্য, পুলিশ ব্লাড ব্যাংকে ১ হাজার ৩০০ পুলিশ সদস্য নিয়মিত ডোনার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। অনুষ্ঠানে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।