মো:রফিকুল ইসলাম,(নড়াইল) : নড়াইলে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সিম ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার,ট্যাবসহ ২ অনলাইন প্রতারক পুলিশের হাতে আটক। গত ২৬ সেপ্টেম্বর জনৈক তৈয়ব আলী মোল্লা (৩৬),পিতা-আবু বক্কর মোল্লা,সাং-ভওয়াখালী,থানা-নড়াইল সদর,জেলা-নড়াইল। Bazar Store নামের একটি পেইজ থেকে DSLR Camera ক্রয়ের জন্য ৫,০০০ টাকা অগ্রিম প্রদান করে।অগ্রিম টাকা পাওয়ার পরেও প্রতারক চক্র ক্যামেরা প্রদান না করে বিভিন্ন ছলচাতুরী করে ক্রেতাকে ফাঁদে ফেলে তার নিকট থেকে আরো ২০,০০০ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে ভুক্তভোগী তৈয়ব আলী ক্যামেরা না পেয়ে নড়াইল সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করলে নড়াইল সদর থানার মামলা নং-২৮, তারিখ-২৮/০৯/২০২৩ , ধারা-৪০৬/৪১৯/৪২০ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজু হয়।
উক্ত মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই আলী হোসেন তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ২জন আসামীকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেন। গ্রেফতার কৃত আসামীদের দেওয়া তথ্য মোতাবেক প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত অন্যের নামে নিবন্ধিত মোবাইল সিম বিক্রেতাকে আটক করার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযান অব্যাহত রাখে।
এরপর নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার মোহাঃ মেহেদী হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) তারেক আল মেহেদীসহ সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশ সেল ও জেলা গোয়েন্দা শাখাকে দ্রুত মূল হোতাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
যার প্রেক্ষিতে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ও জেলা গোয়েন্দা শাখা যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে গত ১০ জানুয়ারী, অনুমান ৭ টা ২০ মিনিটের সময় আসামী মোঃ সবুজ শেখ (৩৫), পিতা-মৃত আবু হানিফ শেখ, সাং-কলামনখালী,থানা-কালিয়া,জেলা-নড়াইলকে অবৈধ সিম বিক্রির সময় ৯০টি অবৈধ সিমসহ কালিয়া থানাধীন যাদবপুর বাজার হতে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী সবুজ শেখের দেওয়া তথ্যমতে অন্যের নামে নিবন্ধনকৃত অবৈধ সিম বিক্রয়ের মূল হোতাকে গ্রেফতার করার জন্য খুলনা মহানগরীতে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের এসআই আলী হোসেন,এসআই মোঃ ফিরোজ আহম্মেদসহ জেলা গোয়েন্দা শাখার এএসআই মোঃ আনিসুজ্জামান ও এএসআই মোঃ মাহফুজুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান পরিচালনা করে,অনুমান সাড়ে ১০ টার সময় মূলহোতা মোঃ মাহফুজুর রহমান (২৩),পিতা-মোঃ আবুল কালাম শেখ,সাং-ট্রাফিক মোড়,থানা-খুলনা সদর,খুলনা মহানগরীকে রুপসা পশ্চিম ঘাট এলাকা থেকে অবৈধ সিম নিবন্ধনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার ২টি,বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন ট্যাব ২টি এবং অবৈধ ৩৬টি সিমসহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত মূলহোতা মাহফুজুর রহমান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে,সে ২০১৯ সালে রবি মোবাইল সিম কোম্পানী,খুলনাতে সেলস্ রিপ্রেজেন্টেটিভ (এসআর) পদে চাকুরী করতো। যার সুবাদে তার কাছে সিম নিবন্ধনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার এবং ট্যাব থাকতো। পরবর্তীতে সে লোভের বশবর্তী হয়ে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য উক্ত কোম্পানীর স্ক্যানার ও ট্যাব নিয়ে পালিয়ে এসে সাধারণ মানুষদের হয়রানি করতে থাকে। এই মূল হোতা মাহফুজুর রহমান এর কাছ থেকে গ্রেফতার কৃত আসামী সবুজ শেখ প্রতিটি সিম ৬০০ (ছয়শত) টাকা মূল্যে ক্রয় করে ১৫০০ শত টাকা দামে কালিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে।
প্রতারক চক্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নজর এড়ানোর জন্য মানুষকে প্রতারিত করতে অন্যের নামে নিবন্ধনকৃত সিম ব্যবহার করে থাকে । তারা এসব অবৈধ সিম-এ বিকাশ ও নগদ একাউন্ট খুলে চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আকৃষ্ট করে পণ্য না দিয়ে সাধারণ মানুষের অর্থ আত্মসাত করে।