ক্যাসিনো সম্রাটের মানিম্যান অবৈধ সম্পদের মালিক বায়জিদ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে!

অপরাধ আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশব্যাপী শুদ্ধি অভিযানে টেন্ডার বাজ, ক্যাসিনো জুয়াড়িদের আইনের আওতায় আনা হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে ইসমাইল হোসেন সম্রাট, খালেদ ও জেকে শামীমের আশীর্বাদ পুষ্ট ক্যাসিনোর মানিম্যান খ্যাত ছাত্রলীগের মহানগর দক্ষিণের সাবেক সভাপতি বায়জিদ আহমেদ খান ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় জনমনে প্রশ্ন তার ক্ষমতার রশি কতটা শক্তিশালী?


বিজ্ঞাপন

অনুসন্ধান জানা যায় বায়জিদ আহমেদ খান যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের অন্যতম ও ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি থাকা অবস্থায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ও ক্যসিনোসহ বিভিন্ন অবৈধ কাজের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। ফুটপাত থেকে প্রতিদিন গড়ে তার আয় ছিল প্রায় ৩ লাখ টাকা। এছাড়াও টেন্ডার কিং জি.কে. শামীমের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। পি.ডব্লিউ.ডি এর প্রতিটি টেন্ডারের সাথে জড়িত। ক্যাসিনো ব্যাবসার সাথে তার ছিলো নিবিড় সম্পর্ক তাই তিনি সম্রাটের মানিম্যান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। অবৈধ টেন্ডারবাজীর মাধ্যমে ছাত্র জীবনেই উপার্জন করেছেন কোটি কোটি টাকা। এর বেশির ভাগই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাচার করেছেন বলে জানা গেছে। বায়জিদ ছাত্রলীগের সভাপতি থাকা অবস্থায় বিভিন্ন টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী ও ক্যাসিনোর সাথে জড়িত ছিল এবং এই ক্যাসিনোর মাধ্যমে সে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন। সম্রাট খালেদ ও জিকে শামীমের আশীর্বাদে সে একজন বড় দুর্নীতিবাজ হয়ে উঠেন।


বিজ্ঞাপন

ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সহযোগী হিসেবে এমন কোন অপকর্ম নাই যা তিনি করেননি ও জানেন না। সম্রাট গ্রেফতারের পরে তার অনেক সহযোগী এমনকি ড্রাইভারকেও গ্রেফতার এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় কিন্তু বায়জিদ এতটাই ক্ষমতাসীন ও দুর্ধর্ষ যে তিনি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরেই আছেন! ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি থাকা অবস্থায় টাকার বিনিময়ে পকেট কমিটি বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকার অসংখ্য অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের চাহিদা মোতাবেক পদ দিতে পারেননি পরে টাকা চাইলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতো।

তার রাজধানী সহ নিজ এলাকায় রয়েছে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ যা তিনি কোন প্রকার কর্মজীবন শুরু না করেই গড়েছেন।

সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে ক্যাসিনো সম্রাটের মানিম্যান খ্যাত বায়জিদ আহমেদ খানের বিরুদ্ধে উল্লেখিত অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে যা প্রতিবেদকের কাছে এসে পৌছায়। ওই অভিযোগে তার অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি তুলে ধরা হয়েছে।

নিন্মে সেসব অভিযোগের উত্তাপিত অবৈধ সম্পদের বর্ননা পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো।
১। পটুয়াখালীর কুয়াকাটাতে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে তার বিনিয়োগ আছে প্রায় ২ কোটি টাকা।
২। মঠবাড়ীয়াতে রয়েছে তার আলিসান বাড়ি। দুই বছর আগেও যার কোন অস্তিত্ব ছিলো না। বাড়িটি তৈরী করতে আনুমানিক ১ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
৩। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় তার নামে-বেনামে অনেক অবৈধ সম্পদ রয়েছে।
৪। সেগুন বাগিচার প্রোপার্টি প্যারাগনের ১১/এ ফ্ল্যাটটি নিজস্ব ক্রয়কৃত। যেখানে সে বসবাস করে থাকে।
৫। সামান্য একজন ছাত্রলীগের নেতা হয়ে তার গাড়ি রয়েছে ২টি। যার একেকটির গাড়ির মূল্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা করে। তিনি ৪০ হাজার টাকার এপার্টমেন্টে বসবাস করে। এছাড়াও নিজস্ব অফিস পরিচালনা করে যার আনুমানিক মাসিক ব্যয় লক্ষাধিক টাকা। তার নামে ১ কোটি টাকার ব্যাংকে এফ.ডি.আর আছে এবং পোষ্ট অফিসে ৫০ লক্ষ টাকার এফ.ডি.আর আছে। এছাড়াও সঞ্চয়পত্র আছে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার। এছাড়াও শেয়ার বাজারে তার বিপুল পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে।
৬। তার গ্রামের বাড়িতে প্রায় ৩ কোটি টাকারও বেশি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে।
৭। বিভিন্ন ব্যাংকে তার নামে-বেনামে অনেক টাকা আছে।

এছাড়া উক্ত অভিযোগে পিরোজপুর এবং ঢাকা জেলার বিভিন্ন সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে গোপনীয়ভাবে তদন্ত করলে আরও অবৈধ কোটি কোটি টাকার সম্পদ বেরিয়ে আসবে বলে উল্লেখ করা হয়।

এ ব্যাপারে বায়জিদ আহমেদ খান এর সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *