নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম বন্দরের ‘বে টার্মিনাল’ নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণসহ সব জটিলতার দ্রুত সমাধান হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, ‘সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বে-টার্মিনাল হবে। ভিশন ২০৪১ এচিভ করতে চাইলে বে-টার্মিনাল হতেই হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের এক প্রতিনিধির বক্তব্যের বিপরীতে তিনি এ কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের ওই প্রতিনিধি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের ৯৪ ভাগ আমদানি রফতানি হয়ে থাকে। যেখানে মূল রফতানি বাণিজ্যের ৯৮ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়। অথচ আমাদের জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল থেকে বন্দর পরিচালনা করতে হয়। তাই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ছয় কিলোমিটার দূরে পতেঙ্গা উপকূলে ১২ মিটার গভীরতার বে-টার্মিনাল তৈরির উদ্দ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেয়েছি। কিন্তু বে-টার্মিনাল তৈরির জন্য প্রায় ২৫ একর জায়গার প্রয়োজন হবে। আমরা এ পর্যন্ত মাত্র ৯ একর জায়গার বিরোধ নিস্পত্তি করতে পেরেছি। বাকি জায়গা যদি আমাদের কিনে নিতে হয় তাহলে ৪ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন, যা চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষে সম্ভব নয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বন্দর প্রতিনিধির বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন। পরে তিনি বলেন, ‘সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বে-টার্মিনাল হবে। বে-টার্মিনাল ছাড়া হবে না। ভিশন ২০৪১ এচিভ করতে চাইলে বে-টার্মিনাল হতেই হবে। ইনশাআল্লাহ এটি হয়ে যাবে।
বে-টার্মিনাল সংক্রান্ত ভূমি বিরোধ নিস্পত্তির জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তার সঙ্গে মিটিং ফিক্সড করার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, প্রতিবছর জাহাজ, কার্গো এবং কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বাড়তে থাকায় তা সামাল দেয়া চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সরকার বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর উপকূলে নতুন জেগে উঠা চরসহ প্রায় আড়াইহাজার একর জায়গায় ‘বে টার্মিনাল’ নির্মাণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। যেখানে ভিড়তে পারবে বিশ্বের যে কোনো দৈর্ঘ্যের জাহাজ। চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে আকার, আয়তন ও সক্ষমতায় কয়েকগুণ বড় বে-টার্মিনাল চালু হলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বহুগুণ বাড়বে। ২০২২ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতায় চট্টগ্রাম বন্দরের ‘বে টার্মিনাল’ নির্মাণের কাজ থমকে আছে।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লোহের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দরের ‘বে-টার্মিনাল’ নির্মাণে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়