সাবেক মন্ত্রীর বিশ্বস্ত আইন সচিব সারোয়ারের দুনীতি ও চক্রান্ত

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

!! নোবেল বিজয়ী ডক্টর মুহম্মদ ইউনুসকে মামলায় নাজেহাল !! জামাতের নিষিদ্ধ করা ও আন্দোলনরত ছাত্র জনতাকে জামিন নামঞ্জুর সবকিছুই সচিব সারোয়ারের কারিশমা !! 


বিজ্ঞাপন

এইচ আর শফিক :  সারা পৃথিবী জুড়ে সম্মানীয় হলেও ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসকে নিজ দেশে বাংলাদেশের সাবেক আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের জুলুম নির্যাতন ও অপমানের গ্লানি সইতে হয়েছে যা বাঙালি জাতির জন্য লজ্জাজনক বলে অনেকেই মনে করেন। পৃথিবী বরেণ্য ডক্টর ইউনুস বর্তমানে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জামায়েত ইসলামকে নিষিদ্ধ ছাত্র জনতা কে বিভিন্ন মামলায় গণহারে গ্রেফতার করা হয় পরে জামিন না দেয়ার জন্য সারা দেশের সকল আদালতকে শেখ হাসিনা সরকারের হয়ে সকল ধরনের নির্দেশনা দেন আইন সচিব গোলাম সরোয়ার।


বিজ্ঞাপন

আইন সচিব সরোয়ারের নির্লজ্জ আওয়ামী গোলামীর ও বিরোধীদের আইনের জালে ফেলার নীল নকশায় নাজেহাল হয়েছেন পৃথিবীর বরেণ্য ব্যক্তিত্ব নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ডঃ মোঃ ইউনুস সহ দেশের রাজনৈতিক মহল ও ছাত্র জনতা। জানাযায় মেরিনা সুলতানা লেবার কোটের জর্জ সে চেয়েছিলো জরিমানা করতে, কিন্তু আইন সচিব ৬ মাসের আদেশ দিতে বলে। এর পর জামিন দেযার কারনে মেরিনাকে ঝিনাইদহ বদলি করে। তিনি নারী ও শিশু আদালতে আছেন।

সম্প্রতি দেশের ছাত্র জনতার আন্দোলন যে উত্থান হয়েছে সেই আন্দোলনের প্রথম ভাগে ছাত্র জনতা সহ রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের সকলকে ছাত্রশিবির ত্যাগ লাগিয়ে জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর সকল ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়েছেন এই আইন সচিব।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে সঙ্গে নিয়ে আইন ও বিচার মন্ত্রনালয়ে মহা-দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে তোলা সচিব গোলাম সারওয়ার এখনো বহাল। মন্ত্রনালয়সহ মাঠ পর্যায়ে বিস্তৃত সচিবের সাঙ্গপাঙ্গরাও এখনো রয়েছেন দাপটের সঙ্গেই।
বিচারের নামে ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে বছরের পর বছর হয়রানি করা, তড়িঘড়ি লিখিত নোট দিয়ে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং সর্বশেষ ছাত্র আন্দোলনে গুলি বন্ধের রীটকে ধমক দিয়ে খারিজ করানোর মূল হোতা হচ্ছেন এই সচিব গোলাম সারওয়ার।
জামাতকে নিষিদ্ধ করতে হাফিজ আহাম্মেদ চৌধুরী অতি: সচিব ডাপ্ট করে থাকেন । ওম্মে কুলসুম যুগ্ন সচিব, সচিব ও মন্ত্রী মিলে ডাপ্ট করে সেই ডাপ্ট সচিব নিজে হাতে হাতে গিয়ে দিয়ে আসেন স্বরাস্টমন্ত্রীর কাছে ।

ব্রাম্মনাড়ীয়ার কসবা থানার বাসিন্দা গোলাম সারওয়ার আত্মীয়তার সম্পর্কে মন্ত্রী আনিসুল হকের বেয়াই। আইন সচিবের চাচাতো ভাই বিয়ে করেছে মন্ত্রীর ফুফাতো বোনকে। সেই হিসেবে পারিবারিকভাবে আত্মীয়তার যেমন বন্ধন রয়েছে তাদের, তেমনি মন্ত্রনালয়েও দুই বেয়াই মিলেমিশে গড়ে তুলেছিলেন দুর্নীতির মহাসিন্ডিকেট। সাথে যুক্ত ছিল আইনমন্ত্রীর গোপন প্রেমিকা তৌফিকা।

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও মহানগরীর অধস্তন আদালতে যতো নিয়োগ হয়েছে তার অধিকাংশেই খাতা পরিবর্তন, জালিয়াতি, পরীক্ষা না দিয়েও চাকুরী হওয়ার নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুস বানিজ্য সহ পাহাড়সম অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সরাসরি আইনমন্ত্রী আনিছুল হকের নির্দেশে সাবেক সচিব (মৃত) জহুরুল হক দুলাল ও বর্তমান সচিব গোলাম সারোয়ারের তত্ত্বাবধানে।

মন্ত্রী আনিসুল তার ক্ষমতা খাটিয়ে ব্রাহ্মবাড়িয়ার সন্তান তার চরম অনুগত গোলাম সারোয়ারকে সচিব পদে বসিয়েছেন আইনবহির্ভুতভাবে, অতঃপর নির্বিঘ্নে চালিয়েছেন দুর্নীতির রামরাজত্ব। গোলাম সারোয়ারও সততার ভাণ ধরে আইজিআর অফিসসহ বিভিন্ন অধস্তন দপ্তরে আর্থিক বড় লেনদেনের খাতগুলো থেকে নিয়মিত বিপুল অংকের টাকার ভাগ পান। মুখোশের আড়ালে নিয়মিত বিপুল অংকের মাসোহারা নেন।

আনিসুল ও গোলাম সারওয়ার সিন্ডিকেট প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অধস্তন আদালতের নিয়োগ কমিটিকে বাধ্য করে সারাদেশে চতূর্থ শ্রেনীর পদে প্রায় দুই হাজারের মতো কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন কেবলমাত্র নিজেদের কসবা উপজেলা থেকে। অথচ বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট ও সরকারী চাকুরী সংক্রান্ত নিয়োগ বিধিমালায় স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, চতূর্থ শ্রেনীর চাকুরীতে নিয়োগে প্রাধান্য পাবে স্থানীয় জেলার আবেদনকারীরা। অথচ আইনমন্ত্রী ও তার অনুগত আইন সচিব এই বিধান লংঘন করে বিভিন্ন জেলায় বিপুল সংখ্যক নিয়োগ দেন। অব্যাহত চাপ প্রয়োগ করে বহু বিচারককে অপরাধকর্মে জড়াতেও বাধ্য করেছে খোদ আইনমন্ত্রী ও সচিব।

উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, শুধুমাত্র চট্টগ্রামেই কসবা উপজেলার বাসিন্দা নিয়োগ পেয়েছে ৩৪ জন। এরমধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ১৪ জন, মহানগর দায়রা জজ আদালতে ৪ জন, সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনাল ১ জন, নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে ১২ জন, সিএমএম কোর্টে ৩ জন কসবা উপজেলার। এভাবে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, রাজশাহী সহ সারাদেশে অধস্তন আদালতে মোট কর্মরত কর্মচারীদের প্রায় এক চতূর্থাংশই কসবা উপজেলার।

সাদাসিধা ভাব ধরে থাকা মন্ত্রী আনিসুল ও তার সচিব নিয়োগ দুর্নীতি করেই কামিয়ে নিয়েছে শত শত কোটি টাকা। একই সাথে আইন মন্ত্রণালয়ের রেজিষ্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট যেন মন্ত্রী সচিবের টাকার খনি। গুলশানের সাব-রেজিস্ট্রারের বাড়ীও ব্রাহ্মবাড়িয়ায়, যিনি গুলশান এলাকার একটি দলিল করতে ১ কোটি থেকে ৩/৪ কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেন। ঢাকার ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাবেকুন ঢাকার বিভিন্ন সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে বস্তা বস্তা টাকা কালেকশন করে তুলে দেন মন্ত্রী ও সচিবকে।

সূত্র জানায়, আইজিআর এর ব্যংক একাউন্টে জমা থাকা ১৪৩ কোটি টাকা থেকে সচিব নিজের সিটিজেন ব্যাংকে ১০০ কোটি টাকা নিয়ে নেয়।
জমাকৃত টাকা থেকে প্রতিমাসে ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন সাবেক আইন মন্ত্রী ।

তার বান্ধবী আইনজীবী তৌফিকা করিম। এই আইনজীবীর মাধ্যমেই সচিব যত তদবির বানিজ্য করে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন।
আইন সচিব এর নিজ এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার
কসবা থানায় একই এলাকার প্রতিবেশী হওয়ায় যুগ্ম সচিব কুলসুমের সাথে তার রয়েছে গভীর সখ্যতা। তাই দুজনে মিলে ভূমি কর থেকে লুটপাট করেছেন শত কোটি টাকা। জমির স্খানীয় কর সেটা তারা মানে আইন মন্ত্রী সিএনএস নামের একটি কোম্পানী করে এন আরবিসি হেড অফিসে জমা করেন সেই একাউন্টে । ভলিয়মে টাকার টাকা বছরের পর বছর রেখে দেয় হাজার হাজার টাকা এ থেকে মাসিক ৪ কোটি টাকা নেয় যা অবৈধ্য। এ টাকা আগে সরাসরি সোনালি ব্যাংকে জমা হতো
আইনমন্ত্রীর মা জাহানারা হক জীবদ্দশায় দৃশ্যমান কোন আয়ের বৃহৎ উৎস না থাকলেও আলাদীনের চেরাগ বলে হয়ে গেছেন সিটিজেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান, কেবলমাত্র তার পুত্রের টাকার খনির বদৌলতে। এর আগে কোনো আইনমন্ত্রীই কখনই কোনো ব্যাংকের মালিক ছিলেন না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ছোট ভাই আরিফুল হকের কাছে মন্ত্রী আনিসুল পাচার করেছিলেন দুর্নীতিলব্ধ শত শত কোটি টাকা। আরিফের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান আমেরিকাতেই বসবাস করে। সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার পর আনিছুল হক তার দুর্নীতির সম্পদগুলো ম্যানেজমেন্ট করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বলে শোনা যায়।

মন্ত্রী আনিসুলের স্ত্রী মারা গেছে বহু বৎসর আগে। এরপর তিনি আর বিবাহ করেননি এটা দেখিয়ে তিনি নিজের সরলতা প্রকাশ করেন, অথচ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট তৌফিকা করিম মন্ত্রী আনিসুলের বান্ধবী পরিচয় দিলেও আইন ও বিচার বিভাগে তিনি মন্ত্রীর আন-রেজিস্টার্ড স্ত্রী এবং মূর্তিমান আতংক হিসাবে সবাই তাকে চিনে এবং সমীহ করে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতে তদবীর, চাপ প্রয়োগ করে জামিন, ইচ্ছামত রায় নেয়া প্রায় সবই সম্ভব মন্ত্রীর এই আনরেজিস্টার্ড স্ত্রীর মাধ্যমে। কাবিননামা অনুসারে এ্যাডভোকেট তৌফিকা ব্যবসায়ী আফতাব-উল ইসলাম মঞ্জুর স্ত্রী। কিন্তু মঞ্জুর সাথে তার কাগজের সম্পর্ক ছাড়া বাস্তবে কোন সম্পর্কই নেই, বরং মন্ত্রী আনিস হলো তৌফিকার সবকিছু- কাবিনবিহীন স্বামী!

ধূর্ত সচিব গোলাম সারওয়ার এই তৌফিকাকে সঙ্গে নিয়েই বিচার বিভাগে যেকোন তদবীরে ও বিপুল অংকের টাকা দিয়ে ইচ্ছামতো রায় করানোর সবচেয়ে কার্যকর সিন্ডিকেট গড়েন। শত শত কোটি টাকা লেনদেনও এদের কাছে ডাল ভাতের মতো। গোলাম-তৌফিকা সিন্ডিকেটই বসুন্ধরার এমডি আনভীর কর্তৃক মুনিয়া হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সিটিজেন ব্যাংকে মন্ত্রী আনিস চেয়ারম্যান আর পরিচালক বানিয়েছেন তৌফিকাকে, আর বর্তমানে এই তৌফিকাই হলো ব্যাংকটির চেয়ারম্যান।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *