তাসাউফ রিয়েল এস্টেট লিঃ এর চেয়ারম্যান ভূমি দস্যু শরীফ বিন আকবর খান সাদুল্লাপুরের এক মূর্তিমান আতঙ্কের একটি নাম :  হত্যা, সন্ত্রাস ও ধর্ষণ যার নিত্যদিনের কাজ

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

তাসাউফ রিয়েল এস্টেট লিঃ এর চেয়ারম্যান শরীফ বিন আকবর খান।


বিজ্ঞাপন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  তাসাউফ রিয়েল এস্টেট লিঃ এর চেয়ারম্যান ভূমি দস্যু শরীফ বিন আকবর খান সাভার বিরুলিয়া সাদুল্লাপুরের এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। হত্যা,সন্ত্রাস ও ধর্ষণ যার নিত্যদিনের কাজ। সাভার বিরুলিয়া সাদুল্লাপুর একযুগ ধরে রাম রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে শরীফ। ছিঁচকে চোর থেকে আজ ৫ শত কোটি টাকার মালিক। হত্যা, সন্ত্রাস,গুম,খুন যার নিত্যদিনের কাজ।


বিজ্ঞাপন

তথ্য সূত্রে জানা যায়, সাভার বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাদুল্লাপুর মৌজায় ভূমি দস্যু শরীফ বিন আকবর খান সাধারণ ভূমি মালিকদের জমি বায়না দলিল করে জোর পূর্বক দখল করে নেয়। একসময় ঐ এলাকার সবচেয়ে বড় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি দক্ষিণা সিটির সাথে তার জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। তখনো দক্ষিণা সিটির জমি নিজের জমি দাবি করে তাসাউফ রিয়েল এস্টেট কোম্পানি লিমিটেড এর সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়ে নিজের জমি বিক্রি করা শুরু করে দেয়।

সাদুল্লাপুর এলাকা ঘুরে জানা যায় , অন্যের জমিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের বোকা বানিয়ে জমি বিক্রির নামে করে প্রতারণা ‌ করে হাতিয়ে নিয়েছে শত শত কোটি টাকা। দখিনা সিটির মালিক কর্ণেল ( অবঃ) আযম সাহেবের সাথে এবিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, শরীফ একজন বাজে লোক সে মানুষের জমিতে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে নিজের বলে দাবি করে অন্যের কাছে আবার বিক্রির উদ্দেশ্যে বায়না করে। পরবর্তীতে জমি দিতে না পেরে একটি ব্যাংকের চেক ধরিয়ে দেয়। সময় মত টাকা দিতে না পারলে পাওনাদার তার বিরুদ্ধে মামলা দেয় এরকম মামলা তার বিরুদ্ধে কয়েক ডজন।সে আমার জমিতে হাত দিয়ে সুবিধা করতে পারেনি আমি কড়ায় গন্ডায় বুঝিয়ে দিয়েছি।

এলাকা ঘুরে আরো জানা যায় , শরীফ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তার নির্ধারিত কিছু দালালের মাধ্যমে জমি ক্রয় করার নামে বায়না করে নামে মাত্র দুই/ তিন লাখ টাকা দিয়ে আর টাকা না দিয়ে পুরো জমি দখল করে নেয়। যদি কেও তার সাথে কঠোর হয় তাহলে তাকে মেরে বালু চাপা দিয়ে রাখার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়েছেন এলাকার হত দরিদ্র মানুষেরা।

তথ্য সূত্রে আরো জানা গেছে , সে মীরপুর -১ এর আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্থ যোগান দাতাদের মধ্যে একজন ছিলেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিগত ৫ আগষ্ট নারকীয় হত্যাযজ্ঞে শরীফ বিন আকবর খান সামনে থেকে নেতৃত্ব প্রদান করেন।

তার নেতৃত্বে হাজার খানেক আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কর্মীরা নিরস্ত্র ছাত্র জনতার উপর দেশী বিদেশী অস্ত্র নিয়ে হায়নার মত ঝাপিয়ে পড়ে। ঐ দিন তাদের আক্রমণে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের প্রাণ হারাতে হয়। যদিও শরীফ এখনও কোনো মামলায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি । ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থেকে আওয়ামী লীগকে অর্থ যোগান দিয়ে আসছে। আওয়ামী লীগের সকল শ্রেণীর নেতা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছেন।

নারীদের প্রতি তার আলাদা সক্ষতা রয়েছে। রেহানা নামের এক ললিতাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দিনের পর দিন ভোগ করে আসছে। রেহানাকে দিয়ে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের খাটের পার্টনার হিসেবে থাকতে দিয়ে নিজের কাজ হাসিল করে নেন। অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে রাখে সোসিয়াল মিডিয়া প্রকাশের ভয় দেখিয়ে কাজ হাসিল করে নেন। ‌তাঁর কথার অবাধ্য কেও হলে রেহানা কে দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

শরীফ বিন আকবর খান তুরাগ নদীর তীরে অবস্থিত বোট ক্লাবের একজন স্থায়ী সদস্য। মদ ও নারী হলো তার নিত্যদিনের সঙ্গী। ঢাকার বড় বড় শীল্পপতিদের সাথে তার উঠা বসা, এক সাথে মদ পান ও নারীবাজী করে তার ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি করেছে। বিভিন্ন এমপি, মন্ত্রীদের নারী ও নেশায় মত্ত করে সুযোগ বুঝে ফায়দা হাসিল করে নেয়।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাঁধা কৃষ্ণের ছেলে বিনয় কৃষ্ণ তাঁর কাছে জমি বিক্রির উদ্দেশ্যে বায়না দলিল দেন। পরবর্তীতে জমির মূল্য পরিশোধ করে দলিল নেয়ার কথা বললে শরীফ ক্ষেপে গিয়ে তাকে চড় থাপ্পড় মেরে তাড়িয়ে দেয়। আর বলে, তোর জমির টাকা নিয়ে গেছ আবার কিসের টাকা দেব। পরদিন থেকে আজ পর্যন্ত বিনয় কৃষ্ণের খোঁজ পাওয়া যায় নি। তার বাবা রাঁধা কৃষ্ণ ছেলের খোঁজে পাগল প্রায়। সেই জমিটা ও শরীফ দখল করে অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয়। এভাবে করে মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে সন্ত্রাস কায়দায় শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি। শরীফের কথার অবাধ্য হলে কেউ আর দুনিয়ায় বেঁচে থাকতে পারে না।

সুমন নামের এক লোকের কাছ থেকে দশ শতাংশ জমি বায়না করে দশ লাখ টাকা দেয়। ছয় মাস পরে দলিল করার কথা বলে দলিল আর করেনি। সুমন দলিলের জন্য চাপ দিলে তার সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে সুমন কে রাতের হত্যা করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৬ সালের মার্চ মাসের দিকে।সুমন হত্যার পর থেকে কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও টাকার বিনিময়ে প্রশাসন ম্যানেজ করে আবার তার মসনদে ফিরে এসেছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কাঠ মিস্ত্রী কুট্টি মিয়া বলেন, শরীফের মতো এতো বাজে লোক আমার জীবনে দেখিনি ও মানুষের কাছ থেকে নামে মাত্র বায়না করে বালু ভরাট করে পুরো জমি দখল করে নেন। আল্লাহ তার উপর আজাব নাজীল করবে অচিরেই।এভাবেই মানুষের সম্পদ দখল করে নিজেরা ধনী হয় আর গরীব থেকে যায়। তিনি আরো বলেন, এলাকার লোকজন অন্যকারো কাছে জমি বিক্রির জন্য বায়না করলেও তাদেরকে ভয় দেখিয়ে জমি বিক্রি করতে দেয়না। তোমরা যাদের কাছে জমি বিক্রি করতে চাও তারা খারাপ লোক তারা তোমাদেরকে জমির দাম দেবে না। এভাবে মানুষকে ভয় লাগায় আর যেখানে খালি যায়গা দেখবে সেখানেই তাসাউফ রিয়েল এস্টেটের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে যায়গা দখল করবে।

স্থানীয় জমির দালাল নুরুল ইসলাম দপ্তরি বলেন, শরীফ হলো একজন বড়মাপের মাফিয়া সে মানুষের জমি দখল করে আবার তা নিজের বলে বিক্রি করে। তার অত্যাচারে বিরুলিয়া সাদুল্লাপুর এলাকার লোকজন অতিষ্ট। আপনার একটা কিছু করেন যাতে আমরা সুস্থ্যভাবে বাঁচতে পারি। দখিনা সিটির মাদবর ফরিদ বলেন, শরীফ বিন আকবর খান একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী সে এখানে এক,দুই শতাংশ জমি কিনে পুরো এলাকা দখলে নেয়ার পাঁয়তারা করে। সে এক সময়ে আমাদের প্রজেক্টের উপর হাত দিয়েছিল। আমরা তাঁকে সমুচিত জবাব দিয়ে দিয়েছি। এলাকার সকল লোক যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকে প্রতিহত করে তাহলে সে এভাবে মানুষের রক্ত চুষে খেতে পারত না।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শরীফ বিন আকবর খানের সাথে তার ব্যাবহৃত মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা যা শুনেছেন তা সঠিক নয়। আমার অনেক শত্রু আছে তারা আমাকে সহ্য করতে পারে না তাই আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। আমি শুধু ব্যবসা করি আর স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করি। আপনারা তদন্ত করে দেখেন আমি যদি কোনো অন্যায় করে থাকি তাহলে আমার বিরুদ্ধে যা লিখবেন তাই মাথা পেতে নেব। মানুষ তো আপনাদেরকে কতো কথা বলবে তাতে বিচলিত হবেন না।

তবে এলাকার সাধারণ জনগণ ও ভুক্তভোগীরা তার অত্যাচার থেকে বাঁচতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *