নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসের মধ্যে চিকিৎসকদের চেম্বার বন্ধ রাখা উচিত নয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত প্রেসব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, নার্স ও ডাক্তার ভাইদের বলবো আপনারা অনেক কাজ করছেন, আপনারাই সৈনিক। কিন্তু আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর পাচ্ছি যে কিছু প্রাইভেট হাসপাতালে মানুষ স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেন না। আমরা চিকিৎসকদের অনুরোধ জানাতে চাই এই সময় পিছপা হবেন না। মানুষের পাশে দাড়ান; তাদের সেবা দিন।
তিনি বলেন, এরপরও তারা যদি দায়িত্ব পালন না করেন তাহলে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার আমরা তা নিব।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনার পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কিটের সংকট নেই। রাজধানীসহ সারা দেশে নমুনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরির সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
করোনা আক্রান্ত সন্দেহভাজন রোগীদের স্বপ্রনোদিত হয়ে বেশি বেশি করে নমুনা পরীক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট ল্যাবরেটরিতে যোগাযোগের আহ্বান জানান মন্ত্রী। এছাড়া প্রয়োজন ছাড়া বাসাবাড়ি থেকে বের না হতে দেশবাসীকে অনুরোধ করেন তিনি।
এরপর ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরে ১২৬টি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ৩৮৭টি নমুনাসহ মোট ৫১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৫টি নমুনায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার বাইরের ৩টি নমুনাতে করোনা শনাক্ত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তিদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তাদের কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ২৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে আছেন ২২ জন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ৭ জনসহ ২৯ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ পর্যন্ত ৬ জন মারা গেছেন।
তিনি জানান, ঢাকায় ৯টি আরটি-পিসিআর এবং ঢাকার বাইরে ৫টিসহ মোট ১৪টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যে সারাদেশে ২৮টি আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষাগার স্থাপিত হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক জানান, ৬৪ হাজার ৪৮৪ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। এর মধ্যে ৬৪ হাজার ২৩৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে এবং ২৪৮ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৪ জনকে আইসোলেশনে নেয়া হয় এবং ১০ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।
করোনা প্রতিরোধে দেশবাসীকে কোয়ারেন্টাইন বিধিমালা কঠোরভাবে মেনে চলার অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসে প্রতিরোধে সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে সতর্ক থাকলে করোনা বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে।’
প্রসঙ্গত, বিশ্বের এখন পর্যন্ত অর্ধলক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ভয়ঙ্কর করোনা। যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এতে সবমিলিয়ে মারা গেছেন ৫৩২১৬ জন। আর আক্রান্ত হয়েছেন ১০ লাখ ১৫ হাজার ৮৫০ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ১০ হাজার মানুষ।