নিজস্ব প্রতিবেদক : ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস প্রভাব ফেলেছে দেশের অর্থনীতির প্রধান সূচক হিসাবে স্বীকৃত রেমিটেন্সের ওপর। আর এই ভাইরাসে গোটা বিশ্ব আক্রান্ত হওয়ায় রেমিটেন্সের দুর্দশা দ্রুত কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাদেশের জিডিপিতে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো।
প্রবাসীরা গত মাসে ১২৮ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। এটি গত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ কম। আর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে কম ১২ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
মার্চ মাসের রেমিটেন্স গত এক বছর তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগে ১২০ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল গত ডিসেম্বরে।
করোনাভাইরাস বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর এই মার্চেই দেশে ফিরেছেন অনেক প্রবাসী।
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন এক কোটির বেশি বাংলাদেশি। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে মার্চের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন প্রায় ৭ লাখ প্রবাসী (৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৩০ জন)।
করোনাভাইরাসের করাল থাবা ঠেকাতে অনেক দেশেই লকডাউন চলছে। ফলে বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশে বন্ধ রয়েছে সব অর্থনৈতিক কর্মকা-। এ অবস্থায় ঘরে অলস সময় কাটাচ্ছেন বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ। যারা পারছেন তারা ঘরে বসেই কাজকর্ম করছেন। এ অবস্থায় বিদেশে থেকে করার কিছু নেই দেখেই বাধ্য হয়ে দেশে পরিবার পরিজনের কাছে ফিরে এসেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কমছে রেমিটেন্স।
আর রেমিটেন্সের এই পড়তিকে স্বাভাবিক মনে করছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘অনেক প্রবাসী দেশে ফিরে এসেছেন। যারা আছেন, তারাও কাজ করতে পারছেন না। সব বন্ধ। নিজেরাই চলতে পারছেন না। দেশে পরিবার-পরিজনের কাছে টাকা পাঠাবেন কী করে?’
এদিকে কত দিনে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সেটাও তো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় আগামী দিনগুলোতে রেমিটেন্স আরও কমবে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর।
তাছাড়া বিদেশ থেকে যেসব বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন তারা আর ফেরত যেতে পারবেন কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে যারা এসেছেন। কেননা তেলের দাম আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় তেলনির্ভর এই অঞ্চলের অর্থনীতি এখন পড়তির দিকে।