রাকিব হোসেন মিলন : ঈদুল আজহার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই রাজধানীর বেশিরভাগ কোরবানির পশুর হাটে বেচাকেনা শেষ হলেও, হাট শেষ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত দনিয়া অস্থায়ী গরুর হাট এখন যেন এক উন্মুক্ত ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। গরুর গোবর, মূত্র, রক্ত ও প্লাস্টিক বর্জ্যের দুর্গন্ধে এলাকাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘর থেকে বের হলেই মানুষকে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে। বেড়েছে মশার প্রকোপ।

স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ রানা জানান, “ঈদের দিনে পরিবার নিয়ে মসজিদে যেতে বের হয়েছি, কিন্তু হাটের পাশে দিয়ে হাঁটতেই অসহনীয় দুর্গন্ধে ফিরে আসতে হয়েছে।” একই অভিযোগ করেন রায়েরবাগ এলাকার রিকশাচালক ফারুক হোসেন, “ভাই, সকাল থেকে যাত্রী নাই, সবাই হাটের পাশে আসতেই চায় না। গন্ধে রাস্তায় দাঁড়ানো যায় না।”

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন এবং ইজারাদার উভয়ের চরম দায়িত্বহীনতার কারণেই এমন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের একাধিক এলাকায় ঈদের আগেই পরিচ্ছন্নতা টিম কাজ শুরু করলেও দনিয়া, রায়েরবাগের মতো ব্যস্ত ও জনবহুল এলাকায় এখনও কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি।

সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য না আসলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, “কিছু এলাকায় ইজারাদারদের অবহেলার কারণে ময়লা অপসারণে বিলম্ব হচ্ছে।”
পরিবেশবিদ ও চিকিৎসকদের মতে, গরুর বর্জ্য ও মূত্র থেকে ছড়াতে পারে ব্যাকটেরিয়া, সংক্রামক রোগ ও ডেঙ্গুর মত রোগবাহীর উপদ্রব। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে বিলম্ব হলে ঈদের খুশি শেষ পর্যন্ত পরিণত হতে পারে এক ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।
এলাকাবাসীর দাবি করেছেন দ্রুততম সময়ে দ্রুত বর্জ্য অপসারণ, জীবাণুনাশক ছিটানো ওসড়ক ধুয়ে দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন কোরবানির পশুর হাট এক মৌসুমি বাস্তবতা। তবে হাট শেষে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও দ্রুত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা না গেলে তা ঈদের আনন্দের বদলে জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দনিয়ার হাটের ঘটনা তার বাস্তব উদাহরণ। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী।