আহমেদ হৃদয় : রেলওয়ের টিএলার, অস্থায়ী গেটকিপার, ওয়েম্যান, পোটার সহ সকল টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিকদের চাকরি থেকে ছাঁটাই বন্ধ, ছাটাইকৃতদের পূর্নবহাল এবং চাকরি স্থায়ী করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি।
সংগঠনের সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, রেলপথ মন্ত্রী ও রেলওয়ে মহাপরিচালক করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে নিজের ও পরিবারের সকল সদস্যদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছে। রেলওয়ের অন্যান কর্মচারীদের ন্যায় রেলওয়ের গেটকিপার, ওয়েম্যান, পোটার, সুইপার সহ সকল টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিকরাও কিন্তু করোনাভাইরাসের মধ্যে ঝঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছে। তবে অত্যান্ত দুঃখজনক হলেও হঠাৎ করে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের অনেক টিএলআর/অস্থায়ী গেটকিপার ও ওয়েম্যান শ্রমিকদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হচ্ছে। আবার অনেক শ্রমিক ৩/৪ মাসের বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। টিএলআর/অস্থায়ী পদে চাকরির মেয়াদ তিন বছর অতিক্রম হয়েছে সেই সমস্ত সকল শ্রমিক, মহাপরিচালকের কার্যালয় বাংলাদেশ রেলওয়ে সংস্থাপন-৩ শাখা রেলভবন, ঢাকা এর উপ-পরিচালক/ই-৩ (চঃদঃ) কামাল শেখ এর স্বাক্ষরিত ০৩/১২/২০১৭ ইং তারিখে সূত্রঃ জিএম/পূর্বের পত্র নং-এলও/ই/১৪/ এইচ সি-ডব্লিউপি/১২( সার্ভিস) তারিখঃ ৩০/১২/২০১৭ ইং এর মতে বর্ণিত অবস্থায় টিএলআর/অস্থায়ী আত্মীয়করণের বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের অভিপ্রায় ও নির্দেশনা, প্যানেল আইনজীবি, বাংলাদেশ রেলওয়ে মতামত ও মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সরকারী আদেশের প্রেক্ষিতে টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিকদের আত্মীয়করণের কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যে নির্দেশ প্রদান করেন, সে নির্দেশনানুসারে টিএলআর/অস্থায়ী পদে চাকরির মেয়াদ তিন বছর অতিক্রমকারীদের স্থায়ী হওয়ার কথা। কিন্তু তা না করে তাদেরকে মৌখিক নির্দেশে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় গত ৩ জুন রাজশাহী অঞ্চলের শ্রমিকরা ছাঁটাই এর প্রতিবাদে ও আত্মীয়করণের নিয়ম অনুযায়ী চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজারের নিকট স্বারকলিপি প্রদান করেন এবং গত ৭ জুন রাজশাহী জিএম এর নিকট আবেদন করেন।
মনিরুজ্জামান মনির আরো বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলের এসএসএই/ওয়ে/শ্রীমঙ্গল এর অধিনে দীর্ঘ ৪/৫ বছর থেকে টিএলআর/অস্থায়ী ওয়েম্যান পদে চাকরি করে আসলেও হটাৎ করে তাদের ছাঁটাই করা হয়। তারা গত ৫/১১/২০১৯ইং তারিখে নিয়ম অনুযায়ী চাকরি স্থায়ী করার জন্য রেলওয়ে মহাপরিচালকের নিকট আবেদন করলেও আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সারাদেশে রেলওয়ের টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ের কারণে ও স্থায়ী না করায় তাদের মাঝে অস্থিরতা বিরাজ করছে। একদিকে টিএলআর/অস্থায়ী গেটকিপার ও ওয়েম্যানদের (তিন বছর অতিক্রম হয়েছে তাদেরকে) চাকরি থেকে ছাঁটাই করছে, অন্যদিকে অর্থের বিনিময়ে টিএলআর/অস্থায়ী গেটকিপার ও ওয়েম্যান পদে নতুন লোককে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। কিছু অসাধু ব্যাক্তি অর্থের লোভে শত শত দক্ষ গেটকিপার ও ওয়েম্যানদের বেকারত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। নিয়োগ দূর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট এর একটি গ্রপ টিএলআর/অস্থায়ী, গেটকিপার ও ওয়েম্যান এর চাকরির মেয়াদ তিন বছর অতিক্রম না হলেও, মিথ্যা, ভুল তথ্য দিয়ে মামলা করে শত শত টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী করছে। যাদের অনেকের চাকরির মেয়াদ ১৩ থেকে ২৫ মাস এর বেশি হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী তাদের চাকরি স্থায়ী হওয়া কখনই সম্ভব নয়।
মনিরুজ্জামান মনির বলেন, এদিকে দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা ভূয়া ও মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলাবাজ সিন্ডিকেটকে সহযোগিতা করে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়োগ বানিজ্য করছে। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে ভয়াবহ তথ্য। আবার অনেকেই কোন দিনই টিএলআর/অস্থায়ী পদে চাকরি না করেও ঘুষ দিয়ে প্রত্যয়ন পত্র নিয়ে মামলা করে চাকরি নিচ্ছেন। আর চট্টগ্রামে সেকশনের ২৭ জন অস্থায়ী শ্রমিকদের ৭/৮/২০১৮ ইং তারিখে দপ্তর আদেশ হওয়ার পর ১৪/৮/২০১৮ ইং তারিখে স্থায়ী করনের জন্য পরিক্ষা নিলেও অদৃশ্য কারনে অদ্যবধি স্থায়ী করা হয়নি।
তিনি বলেন, রেলপথ মন্ত্রী রেলওয়ের সকল টিএলআর/অস্থায়ী পদে কর্মরত অসহায় ও দরিদ্র (গেটকিপার, ওয়েম্যান, পোটার ও সুইপার) শ্রমিকদের চাকরি থেকে ছাঁটাই বন্ধ, ছাঁটাইকৃতদের চাকরিতে পূর্ণবহাল এবং আত্মীয়করণের কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনানুসারে চাকরি স্থায়ীকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রেলওয়ের টিএলআর/অস্থায়ী গেটকিপার,ওয়েম্যান, পোটার সহ সকল টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিকদের চাকরি থেকে ছাঁটাই বন্ধ ও ছাটাইকৃতদের পূর্নবহাল এবং চাকরি স্থায়ীকরণের জোড় দাবি জানাচ্ছি।