নিজস্ব প্রতিবেদক : এমপি পাপুল কান্ডে তোলপাড় শুরু হয়েছে কুয়েতে। মানবপাচারে ঘুষ দেয়ার অভিযোগ স্বীকার করার পর, দেশটির সরকারের দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমপি পাপুলের সঙ্গে কুয়েত সরকারের ৩৪টি চুক্তির খবর দিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। তবে দেশে তার বিরুদ্ধে মামলা না হলেও তদন্ত করছে সিআইডি, দুদকসহ তিনটি সংস্থা।
মানব সেবার কথা বলে বিপুল পরিমাণ টাকা ঢেলে বিগত জাতীয় নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর দুই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল। অভিযোগ আছে, রাজনীতির মাঠে সক্রিয় না হয়েও প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে টাকা দিয়ে বসিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিনে নিয়েছিলেন স্থানীয় দলীয় নেতাদের।
মানবপাচারের অভিযোগে ৬ জুন কুয়েতে পাপুল গ্রেফতারের পর দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দেশে-বিদেশে দেড়হাজার কোটি টাকার মালিক পাপুলের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে সিআইডি ও দুদক। এরইমধ্যে তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার ব্যাংক হিসেব তলব করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে দেশ ত্যাগের।
দুদক চেয়ারম্যান বলছেন, পাপুলের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগটি খতিয়ে দেখছেন তারা। আর সিআইডি দেখছে মানবপাচারের বিষয়টি। দুটি ক্ষেত্রে অপরাধের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে সংস্থা দুটি।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, মানবপাচারের বিষয় আমরা দেখব না। কারণ সেটা আমাদের দায়িত্বে নেই। তবে তিনি সাংসদ হিসেবে অর্থপাচারের অভিযোগ থাকলে তা আমরা দেখব। ব্যাংকে যা কিছু আছে সবই আমাদের তদন্তে আসবে।
তদন্তে নেমেছে ফাইন্যান্সশিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট। সংস্থাটি পাপুলের হিসেবের তথ্য চেয়ে সব ব্যাংকে চিঠিও দিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন সংস্থাই তার বিরুদ্ধে মামলা করেনি।
এদিকে পাপুল কা-ে তোলপাড় কুয়েতের রাজনীতি। রিমান্ডে ঘুষ দেয়ার কথা স্বীকার করার পর দেশটির সরকারি দুই কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের আদেশ দেয়া হয়েছে। তার সঙ্গে কুয়েত সরকারের নানা ক্ষেত্রে অন্তত ৩৪টি চুক্তি রয়েছে। একইসঙ্গে দেশটিতে তার কোম্পানির হয়ে অন্তত ৯ হাজার শ্রমিক কাজ করে বলে জানিয়েছে আরব টাইমস।
প্রলোভন দেখিয়ে ২০-২৫ হাজার শ্রমিককে কুয়েতে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠে পাপুলে মালিকাধীন কোম্পানি মারাফি কুয়েতিয়ায় বিরুদ্ধে। নির্যাতনের শিকার অনেকেই দেশে ফিরেছেন।