নিজস্ব প্রতিবেদক : যারা এখনও জঙ্গিবাদের মতো ভুল পথে আছে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। জঙ্গিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি), ককটেল, বোমা, ওই জর্দার কৌটার মতো জিনিসপত্র দিয়ে তোমরা কাখনও বিজয়ী হতে পারবা না। তোমরা ফিরে আসো। তোমরা ফিরে না আসলে বেঘোরে প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এই অন্ধকার জগত তোমার নিজেকে, পরিবারকে ও রাষ্ট্রকে বিপদে ফেলতে পারে।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর র্যাব সদরদফতরে ৯ জঙ্গির আত্মসমর্পণ উপলক্ষ্যে ‘নব দিগন্তের পথে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ‘বাংলাদেশ বারবার জঙ্গিবাদে আক্রান্ত হয়েছে। তবে এর কোনোটাই বাংলাদেশ থেকে সৃষ্টি হয়নি। প্রতিবারই বাইরের দেশ থেকে এসেছে, প্রতিবারই শান্তিপ্রিয় মানুষের সহায়তায় তাদের পরাস্ত করেছি। এখনও যারা এ ধরনের কাজে জড়িত আছে, তাদের প্রতি আমাদের নজরদারি অব্যাহত আছে। র্যাব, অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট, কাউন্টার টেরোরিজমসহ একাধিক টিম তাদের নজরদারিতে রেখেছে। আমাদের গোয়েন্দা কমিউনিটিও এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে। হয়তো পরিপূর্ণভাবে সব ঘটনা শুরুতে বিনষ্ট করতে পারিনি। ১০০ ভাগ না হলেও অন্তত ৯০ ভাগেরও বেশি ঘটনা শুরুতেই বিনষ্ট করতে সক্ষম হয়েছি।’
যারা সমাজের মূলধারায় ফিরে এসেছে তাদের অভিনন্দন জানিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘তোমরা আলোর পথের অভিযাত্রী, এটা দুঃসাহসিক কাজ। এজন্য তোমাদের অভিনন্দন। জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার এই ধারা বাংলাদেশই প্রথম চালু করেছে।’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘হলি আর্টিজানের পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের নানা বিধি-নিষেধ দিয়েছে। অনেকে বলেছে বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। পৃথিবীর কোনও দেশ আমাদের তখন সহায়তা করেনি। কিন্তু দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা জঙ্গিবাদকে পরাজিত করেছি। শুধু একবার নয়, জঙ্গিবাদ বারবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠলে আমরা বারবার পরাজিত করবো। কোনোক্রমেই দেশে জঙ্গিবাদের কার্যক্রম সফল হতে দেবো না।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘যারা আজ সমাজের মূলধারায় ফেরার জন্য আত্মসমর্পণ করেছেন, তাদের এই সমাজ যেন আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করে নেয়। তুই জঙ্গি-এ কথা বলে যেন তাকে আবারও নেতিবাচক পথের দিকে ঠেলে দেওয়া না হয়।’
তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদ একটা আদর্শিক সমস্যা। এটা মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন সঠিক ধর্মীয় ব্যাখ্যা। তাদের সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে আনতে চাই। আজ আত্মসমর্পণ করা ৯ জনের মধ্যে আট জনই তাদের পরিবারের কাছে ফেরত যাবেন। একজনকে আইনের কাছে সোপর্দ করা হবে। আইনি কার্যক্রমের মাধ্যমে পরবর্তীতে পরিবারের কাছে ফেরত যাবেন তিনি।’
র্যাব প্রধান বলেন, ‘জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা আভিযানিক কার্যক্রম আরও বেগবান করবো, কোথাও জঙ্গিরা টিকে থাকতে পারবে না। তাই যারা পলাতক আছেন, আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করুন। বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করুন।’