অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের অভয়নগর উপজেলায় শুভরাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ২নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নূর আলী শেখকে (৪৫) গত রোববার রাত আটটার দিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এই হত্যাকান্ডের ৪৮ ঘন্টা পর মঙ্গলবার রাত ৯টায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের স্ত্রী তহমিনা বেগম বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় চার জন নামধারী ও অজ্ঞত আরো ৮ থেকে ১০ জনকে আসামী উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে থানা পুলিশ। নূর আলী শেখ উপজেলার শুভরাড়া গ্রামের আসির আলী শেখের ছেলে। তিনি ঐ ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্যও ছিলেন। নূর আলী শেখের বড় ভাই রুহুল আমিন শেখ মুঠোফোনে জানান, আমার ভাইকে হত্যার পর এখন আমার গোটা পরিবার আতংঙ্কের মধ্যে রয়েছি। মামলা করতে থানায় এসেছিলাম, এখন পুলিশ পাহারায় বাড়ি ফিরছি।
সোমবার সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে শুভরাড়া গ্রামের আশরাফ উদ্দীন একাডেমির সামনের কবরস্থানে নূর আলী শেখের মরদেহ দাফন করা হয়। হত্যাকান্ডের সময় গুলিতে নূর আলী শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখ (১৬) আহত হন। তিনি বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মরদেহ দাফনের পর মামলা নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেছেন তিনি। পরে খুলনায় হাসপাতালে গিয়ে নিহত নূর আলী শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখের সঙ্গে তিনি কথা বলে এসেছেন। এ জন্য মামলা করতে দেরি হয়েছে।
নূর আলী শেখের পরিবার ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার শুভরাড়া গ্রামের বাবুরহাটে নূর আলী শেখের একটি নিজস্ব কার্যালয় রয়েছে। কার্যালয়টি ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। রোববার রাতে তিনি ঐ কার্যালয় থেকে মোটরসাইকেলে করে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে শুভরাড়া গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন নূর আলী শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখ (১৬)। রাত ৮টা ২ মিনিটের দিকে মোটরসাইকেলটি কার্যালয় থেকে ১০০ গজ দূরে একটি বটগাছের নিচে পৌঁছায়। এ সময় কয়েকজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী চলন্ত অবস্থায় ইব্রাহিমের বাঁম পায়ে দুটি এবং বাঁ হাতে একটি গুলি করে। এতে তাঁরা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে মাটিতে পড়ে যান। এরপর সন্ত্রাসীরা নূর আলীর মাথার পেছনে ডান পাশে গুলি করে। গুলিটি মাথার সামনে দিয়ে বেরিয়ে যায়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মিলন কুমার মন্ডল জানান, নিহতের ছেলে ইব্রাহিম শেখ গুলিতে আহত হওয়ার পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে।