ডা. আব্দুল হান্নান : জয়েন্টসমুহ সাধারনত খুবই সহজে নিম্নক্ত কারনে বিকৃত পদার্থ (Morbid matters) দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে-
• সাধারনত শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলির চেয়ে জয়েন্টের মধ্যে ফাঁকা জায়গা বেশী থাকে।
• জয়ন্টের চতুর্পাশে স্নায়ুসংস্হান বেশী থাকায় সেনসিটিভিটি বেশী হয়ে থাকে।
• জয়েন্টের মিজাজ বারিদ ইয়াবিস (শীতল ও শুষ্ক)
• জয়েন্টে উষ্ণতা খুবই কম (জয়িফ হারারাত) থাকে।
• জয়েন্টের মধ্যে দুষিত পদার্থ (Morbid matter) স্হির ভাবে না থাকা।
• জয়েন্টসমুহ দেহের অন্যান্য অঙ্গগুলির সাথে প্রত্যক্ষ এবং নির্ভরশীল অবস্হানে থাকা।
• জয়েন্টসমুহ ক্যাপসুল, লিগামেন্টস, টেন্ডনস এবং মাংশপেশী দ্বারা আবদ্ধ থাকায় চামড়ার ছিদ্র দিয়ে দুষিত পদার্থ সহজে বেরিয়ে যেথে পারে না।
• দুর্বল রেচন ও হাজম শক্তি (কুয়াতে হাজেমা ওয়া দাফিয়া) ।
সাধারনত জয়েন্টের বৈশিষ্ট হলো, এটি ফ্লুইডকে (রতুবাত) নিজের দিকে আকর্ষণ করে। এর জন্য দ্বায়ী জয়েন্টস মুভমেন্ট। জয়েন্টের অতিরিক্ত মুভমেন্টের জন্য জয়েন্টের মধ্যে তাপ উৎপন্ন হয় এবং মাওয়াদ (পদার্থ) জয়েন্টের দিকে অগ্রসর হয়। তাপের বৈশিষ্ট হলো ফ্লুইডকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করা। দেহের জয়েন্টসমুহের শোষণের কোন শক্তি নেই। ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞানীদেন মতে, এখানে ফ্লুইডের শোষণ নির্ভর করে তাপের উপর এবং হাড়, কার্টিলেজ, লিগামেন্টস ইত্যাদির উপর। যেহেতু জয়েন্টের প্রধান মিজাজ হলো শীতল ও শুষ্ক সেহেতু যে অতিরিক্ত পদার্থ জয়েন্টের মধ্যে প্রবেশ করে তা শোষিত হতে পারে না। শোষিত হতে না পেরে জয়েন্টের মধ্যে জমা হতে থাকে। স্বাভাবগত কারনে ফ্লুইডকে শোষণ বা বের করে দেওয়ার ক্ষমতা জয়েন্টের না থাকায়, ফ্লুইডসমুহ জয়েন্টে আটকে পড়ে জয়েন্টের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে যায় এবং ক্ষত সৃষ্টিকরে। এই ক্ষত, প্রদাহ (Inflammation) এবং ব্যথার সৃষ্টি করে।
আমি যদি সহজ ও সংক্ষেপে বলি তা হলো- ইউনানী সিস্টেম অনুসারে মিজাজ শব্দটি পুরো কোষ, টিস্যু, অঙ্গ এবং দেহের স্বাভাবিক জৈব রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্যপুর্ণ অবস্হা বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়। এই ভারসাম্যের যে কোন পরিবর্তনকে সু-ই- মিজাজ বা মিজাজের বিকৃতি হিসাবে অবহিতি করা হয়।
মিজাজের বিকৃতির কারনে বাত রোগীর শরীরের ভারসাম্যপুর্ণ ধাতুরস সমুহেরও অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটে যা পুরো শরীরকে প্রভাবিত করে এবং দেহের গুরুত্বপূর্ণ জয়েন্টসমুহে আবদ্ধতা তৈরী করে, যার ফলে রোগের সৃষ্টি হয়।