আজকের দেশ রিপোর্ট : রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ, “আপনাকে আজ বিলিয়ে দিব আসমানী তাগিদ” “তোর সোনাদানা বালাখানা, সব রাহে লিল্লাহ”, কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত রমজানের গজলটি মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের হৃদয়ে আজও বেজে ওঠে।
দীর্ঘ ১টি মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলিম উম্মাহ আল্লাহর হুকুম পালনের জন্য সারাদিন রোজা পালন করেন। ধনী-গরিবের বৈষম্যকে ভুলুণ্ঠিত করে এ রমজান মাসে রোজাদাররা সারিবদ্ধ ভাবে একই নিয়মে ইফতারে অংশগ্রহণ করে থাকেন। এটি বাঙালি সংস্কৃতির চিরাচরিত নিদর্শন।
ইফতারি মেনুতেও এ নিদর্শনের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ছোলাবুট, মুড়ি, শরবত, খেজুর,হরেক রকমের ফল, দুধ, সেমাই ইত্যাদি মুখরোচক খাবার রোজাদারদের জন্য পরিবেশন করা হয়। রোজাদারেরা ইফতারের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে এ খাবারের সামনে বসে একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন থাকেন।
ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রোজা অন্যতম একটি স্তম্ভ, যা আল্লাহর বিশেষ হুকুমে বান্দারা পালন করে থাকেন। রমজান মাস বরকতময় মাস। এ মাসে ১টি নেকি করলে ৭০টি নেকির সমান হয়। এ মাসেই হাজার দিন থেকে শ্রেষ্ঠ দিন শবেকদর পালন করেন মুসলিম ধর্ম পিপাসুগণ। যা বিজোড় রাতে নির্ধারিত,
রমজান মাসের পর মুসলমানদের জন্য আনন্দের বন্যা হিসেবে আগমন করে ঈদুল ফিতর। আনন্দ উচ্ছ্বাস নিয়ে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ধনী-গরিবের হৃদয়ে অঙ্কিত হয় ঈদ। সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা ঈদের নামাজ আদায় করে কোলাকুলি করেন। সারিবদ্ধভাবে একই কাতারে শামিল হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
তবে, এবারের ঈদুল ফিতর উদযাপনের প্রেক্ষাপটটি একেবারে ভিন্ন রকম। বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এর আশঙ্কায় সারাদেশব্যাপী দীর্ঘদিন যাবৎ সরকার ঘোষিত লকডাউন চলমান। ফলে, মানুষের চলাফেরা ও কার্যক্রম কিছুটা হয়ে পড়েছে আবদ্ধ।
লকডাউন চলমান থাকায় যাত্রী পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এ কারণে ঘরমুখো মানুষেরা নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে পারছেন না। অধিকাংশ মানুষের এবারের ঈদ আনন্দ হয়ে উঠেছে জৌলুসহীন। গ্রামে পরিবার-পরিজন রেখে শহরের ঈদ আনন্দ অনেকাংশে আনন্দহীন।
অধিকাংশ মানুষ গ্রামে যেতে না পারার আনন্দ এ ইট পাথরের শহরে আবদ্ধ হয়ে গেছে। পরিবারের সাথে আনন্দ ভাগাভাগির বিষয়টি শেয়ার করতে না পারায় বেদনায় কাতর হয়ে পড়েছেন তারা। করোনা আনন্দ ভাগাভাগির মুহূর্তকে কিছুটা কাবু করে ফেলেছে।