নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী চলন্ত ট্রেনের টয়লেটে এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মমিনুল (২৬) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেন ট্রেনের যাত্রীরা। পরে মমিনুলকে আটক করে রেলওয়ে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে ‘সিল্কসিটি এক্সপ্রেস’ ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। আটক মমিনুল একজন নির্মাণশ্রমিক। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা। জানা গেছে, ঘটনার শিকার কিশোরী তার নানি ও খালার সঙ্গে রাজশাহীতে নানার বাড়ি যাচ্ছিল। সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন থেকে তারা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠেছিল। ওই ট্রেনে দায়িত্বরত রেলওয়ে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) উজ্জ্বল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, পাবনার ঈশ্বরদী বাইপাস পার হওয়ার পর ওই কিশোরী ট্রেনের টয়লেটে যায়। টয়লেটের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন মমিনুল। ওই কিশোরী টয়লেট থেকে বের হওয়ার জন্য দরজা খুলতেই তিনি ভেতরে ঢুকে পড়েন। এরপর রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানি স্টেশনে যাওয়া পর্যন্ত ৪০ মিনিট ধরে ওই কিশোরীকে টয়লেটে আটকে রেখে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন মমিনুল। এএসআই উজ্জ্বল আরো জানান, ট্রেনের শব্দের কারণে হয়তো ওই কিশোরীর চিৎকার শোনা যায়নি। পরে বুঝতে পেরে ট্রেনের যাত্রীরা মমিনুলকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে ট্রেনটি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। এ সময় মমিনুলসহ ঘটনার শিকার কিশোরী এবং তাঁর খালা ও নানিকে রাজশাহী রেলওয়ে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মেয়েটির খালা সালমা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, মমিনুল টয়লেটের ভেতরে ঢোকার পরে মেয়েটি চিৎকার করলে তার মুখ চেপে ধরে বলা হয়, ‘চুপ থাক, তোকে আমি বিয়ে করে নেব।’ তারপরেও কান্না না থামালে মেয়েটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন মমিনুল। রাজশাহী রেলওয়ে থানার ওসি সাঈদ ইকবাল জানান, নির্মাণশ্রমিক মমিনুল ঢাকা থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন। ওই কিশোরীর ভাষ্য অনুযায়ী, ট্রেনের টয়লেটের ভেতর মমিনুল দীর্ঘ সময় ধরে ওই কিশোরীর মুখ চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। ওসি সাঈদ ইকবাল আরো জানান, ঘটনাস্থল রেলওয়ের ঈশ্বরদী থানার অধীনে। তাই রাত ১২টার ঢাকাগামী ‘ধূমকেতু এক্সপ্রেস’ ট্রেনে করে অভিযুক্ত মমিনুলকে ঈশ্বরদী জিআরপি থানায় পাঠানো হয়েছে। ওই কিশোরীকে সঙ্গে নিয়ে তার নানি ও খালাও গেছেন। ঈশ্বরদী থানায় তাঁরা মমিনুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। গতকাল শুক্রবার সকালে ঈশ্বরদী জিআরপি থানার ওসি সুবীর জানান, ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মমিনুলের বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী জিআরপি থানায় মামলা হয়েছে। আসামিকে শুক্রবার সকাল ১০টার পরে নাটোর আদালতে সোপর্দ করা হয়।