নিজস্ব প্রতিবেদক : তৈরি পোশাক ও চামড়া ব্যবসায়ীদের মতো সোনা ব্যবসায়ীদেরও সোনা আমদানি করতে বন্ড সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।
রোববার (২৩ জুন) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘স্বর্ণমেলা’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। অপ্রদর্শিত সোনা কর দিয়ে বৈধ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) যৌথভাবে এই মেলার আয়োজন করেছে।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘স্বর্ণমেলা’ একটি অভিনব মেলা। কর প্রদানে ভীতি দূর করতে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এতোদিন সোনা ব্যবসায় কোনো নীতিমালা ছিল না। কোথা থেকে এই সোনা আসে ও যায় সেটার হদিস ছিল না।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত সব সোনা ধরা পড়ে না। এতে করে অসাধু চক্র লাভবান হচ্ছে। চোরাচালানের সঙ্গে একটি বিশেষ শ্রেণি জড়িত। স্বর্ণনীতিমালা জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি সবার সম্মতিতে নীতিমালা করা হয়েছে। এছাড়া তৈরি পোশাক ও চামড়া ব্যবসায়ীদের মতো সোনা ব্যবসায়ীদেরও সোনা আমদানি করতে বন্ড সুবিধা দেওয়া হবে। যাতে করে এই ব্যবসায়ের আরও বেশি প্রসার ঘটে। তবে আমাদের বন্ড অফিস সেটা দেখভাল করবে।
সোনা আমদানি করতে হলে একটি লাইসেন্স নিতে হবে জানিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, সেজন্য ৫ লাখ টাকার মতো লাগবে। এরপর ৩ বছর পর রিনিউ করতে হবে। তখন ১ লাখ টাকা লাগবে। আমরা চাই সোনা ব্যবসা আরও বেশি বিকশিত হোক। বাজেটে সোনা আমদানিতে কাস্টমস ডিউটি কমানো হয়েছে। এতে করে চোরাচালানীরা আর লাভবান হবে না। একইসঙ্গে বার ছাড়া কোনো অলংকার আমদানি করা যাবে না। তবে যে কেউ ১০০ গ্রাম পরিমাণ অলংকার আনতে পারবেন। এর বাইরে আনলে জব্দ করা হবে।
আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ব্যবসায়ীদের তাদের কাছে থাকা অবৈধ সোনা বৈধ করতে ট্যাক্স পরিশোধের আহ্বান জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
এর আগে, গত ২৮ মে এনবিআরের জারি করা একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কোনো স্বর্ণ ব্যবসায়ী বা স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারী অঘোষিত মজুদ করা এবং নীতিমালার আওতায় ঘোষিত স্বর্ণ, স্বর্ণালঙ্কার, কাট ও পোলিশড ডায়মন্ড এবং রৌপ্যের ওপর আয়কর কমিয়ে প্রতি ভরি স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কারের জন্য ১ হাজার টাকা, প্রতি ক্যারেট কাট ও পোলিশড ডায়মন্ডের জন্য ৬ হাজার টাকা এবং প্রতি ভরি রৌপ্যের জন্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ডিলার স্বর্ণব্যবসায়ী বা স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারীকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে অঘোষিত মজুদ করা স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার, কাট ও পোলিশড ডায়মন্ড এবং রৌপ্য সম্পর্কে ঘোষণা দিয়ে কর পরিশোধ করতে হবে। এ প্রজ্ঞাপনের মেয়াদ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
অনুষ্ঠানে এনবিআর করনীতি সদস্য কানন কুমার রায়ের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, বাজুসের সভাপতি গঙ্গা চরন মালাকার, সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। আর উপস্থিত ছিলেন, কর অঞ্চল ১এর কর কমিশনার নাহার ফেরদৌসিসহ বাজুসের নেতৃবৃন্দরা।