ডা. ওয়াজেদ হোসেন : বর্তমানে করোনা ভাইরাস আমাদের দেশে যেই পরিস্থিতিতে এসে দাড়িয়েছে তাতে এই জীবানুর হাত থেকে বেচে থাকা খুবই কঠিন ব্যাপার হয়ে পরেছে।
এই ক্ষেত্রে আমরা যদি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের মূলণীতির দিকে নজর দেই তাহলে দেখতে পাই আয়ুর্বেদ জীবাণুর চাইতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সবসময় প্রাধান্য দিয়েছে।
আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি শক্তিশালী হয় তাহলে জীবাণু প্রবেশ করলেও তা আপনাকে আক্রমন করতে পারবে না।
তাই আমাদের স্বাস্থ্য বিধি সমূহ সঠিকভাবে পালনের পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে।
আজ আপনাদের সাথে রোগ প্রাতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কিছু আয়ুর্বেদিক জীবনযাত্রা প্রণালী, খাবার বিধি ও ঔষধ শেয়ার করবো।
জীবনযাত্রা প্রণালী : সূর্যোদয়ের কমপক্ষে ৪৫ মি. পূর্বে ঘুম থেকে উঠতে হবে। গরম পানিতে ১ চিমটি হলুদ ও ১ চিমটি লবন মিশিয়ে তা দিয়ে গড়গড়া করতে হবে।
নিয়মিত যোগ ব্যায়াম, প্রাণায়াম ও মেডিটেশন করতে হবে কমপক্ষে ৩০ মিনিট। দিনের বেলা ঘুম বর্জন করতে হবে।
দু:শ্চিন্তা পরিহার করতে হবে ও সারাদিন ব্যস্ত থাকতে হবে, কাজ না থাকলে শখের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে কিন্তু অলস সময় পার করা যাবে না।
রাতে কমপক্ষে ৬ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
খাবার বিধি : সকালে ১ গ্লাস গরম পানি পান করতে হবে। যখন ক্ষুধার্থ হবেন তখনি কেবল খাবার গ্রহণ করবেন। ভাল করে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করবেন। হজম শক্তি বিবেচনা করে খাবারের পরিমান নির্ধারন করুন যেন খুব বেশি না হয় আবার খুব কম না হয়।
সর্বদা টাটকা ও গরম খাবার গ্রহন করুন।
সহজ পাচ্য খাবার গ্রহন করুন।
রাতের খাবার রাত ৮-৯ টার মধ্যে সেরে ফেলুন। রাতের খাবারের কমপক্ষে ২-৩ ঘন্টা পরে ঘুমাতে যান।
একক ঔষধ সমূহ : গুলঞ্চ : ৫০০ – ১০০০ মিগ্রা. গুলঞ্চের নির্যাস অথবা গুলঞ্চ ভিজানো পানি প্রতিদিন গ্রহন করুন।
আমলকী : প্রতিদিন ২-৩ টি কাঁচা আমলকি চিবিয়ে খান অথবা শুকনো আমলকি রাতে ভিজিয়ে সকালে ছেকে পানিটি গ্রহন করুন ।
তুলসী : পাতার রস ১ চামুচ করে প্রতিদিন গ্রহন করুন । অশ্বগন্ধা : অশ্বগন্ধা মূল চূর্ণ ৩-৫ গ্রাম গরম দুধ সহ গ্রহন করুন।
যৌগিক ঔষধ সমূহ :
চ্যাবণপ্রাস অবলেহ : ১ চামুচ প্রতিদিন সকালে সেব্য । হরিদ্রা খন্ড মোদক : ৩-৫ গ্রাম গরম পানি সহ সেব্য। অরবিন্দাসব : ১৫-২০ মি.লি. সমপরিমান পানি সহ সেব্য।
উপরোক্ত ঔষধ গুলোর মধ্যে যে কোন একটি ঔষধ নিয়মিত সেবন করলে আর পাশাপাশি জীবনযাত্রা প্রণালী ও খাবার বিধি মেনে চললে এগুলো আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ সহায়ক হবে।