বিশেষ প্রতিবেদক : এক সময়ের ছিঁচকে চোর সাব্বির আহমেদ নয়ন একের পর এক অন্যায় কর্মকা-ের সাথে জড়িয়েও বিচার না হওয়ায় বরগুনার শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। দীর্ঘদিন ধরেই ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পুলিশের খাতায় নাম রয়েছে। আইন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুলিশের দায়ের করা এফআইআর বা চার্জশিটের ফাঁক ফোকরকে কাজে লাগিয়ে অপরাধ করেও জেলের বাইরে থেকেছেন নয়ন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, মঙ্গলবার ভোরে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন তিনি।
বরগুনায় স্ত্রীর সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি নয়ন এর আগেও ৮টি মামলায় অভিযুক্ত আসামি। মামলাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২০১৫ ও ২০১৬ সাল পর্যন্ত মামলাগুলোতে নয়ন শুধু চাঁদাবাজ বা ছিনতাইকারী হিসেবে অভিযুক্ত ছিল। ২০১৭ সালের মামলাগুলোতে নয়ন অভিযুক্ত হয় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ৪শ ৫০ পিচ ইয়াবা, ১০০ গ্রাম হেরোইন ও ১২ বোতল ফেন্সিডিলসহ গ্রেফতার হন তিনি। মামলার চার্জশিটে যার মূল্য ধরা হয় প্রায় ১২ লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে এ মামলাটি ছিল সবচেয়ে গুরুতর। তবে এ মামলাটিতেও মাত্র এক মাসের মধ্যেই জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে আসে নয়ন। এলাকাবাসী বলছে, বছরের পর বছর কেটে গেলেও সাজা না হওয়ায় জামিনে বেরিয়ে এসে আরো ভয়াবহ হয়ে উঠত নয়ন। তারা বলেন, প্রতিবার বেরিয়ে আসার পর আরও আগ্রাসী হয়ে উঠত। এভাবে জামিনে বেরিয়ে এসেই আবার অপরাধে জড়িয়ে যেত যে।
আইন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুলিশের দায়ের করা এফআইআর বা চার্জশিটের ত্রুটিকে কাজে লাগিয়েই সহজে জামিনে মুক্তি পায়ে যেত অপরাধীরা।
বরগুনা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট সঞ্জিব কুমার দাস বলেন, মামলার চার্জশিটে কোনো ত্রুটি থাকলে সেই সুবিধা আসামি পক্ষ পায়।
সহজে জামিন পাওয়ার বিষয়টি শুধুমাত্র পুলিশের এফআইআর বা চার্জশিটের উপর নির্ভর করে না দাবি করে মামলাগুলো পর্যালোচনায় এনে সহজে জামিন লাভের বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। তিনি বলেন, কোথাও কোনো ঘাটতি থেকে থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী নয়ন বন্ড ২০১৫ সালে অপরাধ জগতে প্রথম পা রাখে। এরপর একটি মামলাতেও সাজা হয়নি তার। সবশেষ মঙ্গলবার ভোরে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় নয়ন।