বিশেষ প্রতিবেদক : ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার কামড়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি হওয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সচিব, স্বাস্থ্য মহাপরিচালকসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণে আজ (বুধবার) দিনভর স্বাস্থ্যসহ একাধিক মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের ম্যারাথন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, সকাল ৯টায় মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদফতরে মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অধিদফতরের সকল পরিচালকদের অংশগ্রহণে বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি, পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে করণীয় ও ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে গেলে তা অব্যাহত রাখতে পরবর্তীতে করণীয় বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সকল বিভাগীয় পরিচালককে সতর্ক থাকার পাশাপাশি আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়।
স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে দুপুর ১২টায় রাজধানীর ৭০টির বেশি বেসরকারি হাসপাতালের মালিক ও প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে পর্য়ালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর পরিসংখ্যান পাঠানোসহ জটিল রোগীদের রক্তের নমুনা সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানোর জন্য বলা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সভার পর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও চিকিৎসা শিক্ষা-এ দুই সচিবসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে সভা শুরু হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকেল সোয়া ৫টা পর্যন্ত) সভা চলছিল।
জানা গেছে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ডা. শহীদ মিলন অডিটরিয়ামে সোসাইটি অব মেডিসিনের চিকিৎসকদের উদ্যোগে ডেঙ্গুজ্বরের সাম্প্রতিক সময়ের ভয়াবহতা ও তার চিকিৎসা বিষয়ে এক বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনারের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক প্রেস ব্রিফ্রিংয়ের মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা বিষয়ে তথ্য তুলে ধরবেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের কনফারেন্স রুমে সকাল ৯টায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে চলমান ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবে করণীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় ১৩টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন); ডা. এডউইন সালভাদর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি; অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, পরিচালক, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা; অধ্যাপক ডা. আবুল হাসেম খান, পরিচালক, সিবিএইচসি; ডা. নুর মোহাম্মদ, লাইন ডাইরেক্টর, এনসিডিসি; অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা, পরিচালক আইইডিসিআর; ডা. মো. সাইফুল ইসলাম, উপ-পরিচালক; ডা. এম এম আক্তারুজ্জামান, প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডেঙ্গু; ডা. আয়েশা আক্তার, সহকারী পরিচালক, কন্টোল রুম এবংবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য অধিদফতর সংশ্লিষ্টরা।