মাদারীপুর প্রতিবেদক : মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ঘাটে রাজধানীমুখী যাত্রীদের ভিড় বেড়েই চলেছে। শনিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চঘাট এলাকায় চাপ বাড়তে থাকে। যাত্রীদের এ চাপকে কাজে লাগিয়ে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ প্রতিটি লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে। এমন খবর পেয়ে শিবচর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) প্রশাসনের একটি দল কাঁঠালবাড়ী লঞ্চ ঘাটে যাত্রী নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। জানা যায়, ঈদের ছুটি শেষে শনিবার সকাল থেকে এ নৌরুটে বাড়তে থাকে যাত্রীদের চাপ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের চাপও বাড়তে থাকে। লঞ্চগুলোতে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে থাকে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জানতে পেরে শিবচর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আবির হোসেনসহ প্রশাসনের একটি দল লঞ্চঘাটে অবস্থান করে অতিরিক্ত যাত্রী বহন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। লঞ্চ ঘাট সূত্রে জানা যায়, সকাল থেকে আবহাওয়া ভালো থাকায় লঞ্চে যাত্রীদের প্রচ- চাপ রয়েছে। সবকটি লঞ্চ যাত্রীসেবায় নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়াও ঘাটে বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। ইউএনও আসাদুজ্জামান বলেন, যাত্রীদের নির্বিঘেœ পারাপারের জন্য আমরা সার্বক্ষণিক ঘাট মনিটরিং করছি। লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে যাতে দুর্ঘটনার শিকার না হয় সেজন্য অতিরিক্ত যাত্রী বহন নিয়ন্ত্রণে আমরা লঞ্চ ঘাটে রয়েছি। প্রতিটি লঞ্চেই ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে ফেরিতে যানবাহনের চাপ তেমন না থাকলেও যাত্রীদের পর্যাপ্ত চাপ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএর কাঁঠালবাড়ি ঘাটের টিআই আক্তার হোসেন। তবে স্পিডবোটে চাপ ছিল অনেকটাই সহনীয়। বরিশাল, খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিটি যানবাহন যাত্রী বোঝাই করে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে আসছে। তবে ঘাট পর্যন্ত আসতে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে দেড় থেকে দ্বিগুণ ভাড়া। এই নৌপথে স্পিডবোট ও কিছুকিছু লঞ্চেও বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। নদী পাড়ি দিয়ে শিমুলিয়া ঘাট থেকে বাড়তি ভাড়া গুনে ঢাকার উদ্দেশে পথ দিতে হচ্ছে যাত্রীদের। ঈদে যাত্রীসেবায় ১৮টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ, দেড় শতাধিক স্পিডবোট রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া তিন শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিকভাবে ঘাটে কাজ করছেন।
পাটুরিয়াতেও যাত্রীর চাপ, বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ: ঈদের ছুটি কাটিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে নিজ নিজ কর্মস্থলের উদ্দেশে। আর এ সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ উঠেছে যানবাহন চালকদের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাটুরিয়া বাস টার্মিনালে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের এমন চিত্র দেখা যায়। পাটুরিয়া থেকে নবীনগর, সাভার, গাবতলী, গুলিস্থান, জামগড়া, আশুলিয়া, আব্দুল্লাহপুর, গাজিপুর চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ। রাজবাড়ী থেকে নবীনগরগামী যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি নবীনগর যাওয়ার জন্য বিআরটিসি বাসের টিকিট কাটতে গিয়ে দেখি সেখানকার কাউন্টারের লোকজন বলছেন, যেখানেই নামেন ভাড়া ২০০ টাকা। বাধ্য হয়ে অন্য গাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তবে সব গাড়িতেই একই অবস্থা। শারমিন আক্তার নামে আরও এক যাত্রী বলেন, সাভারের জামগড়া যাওয়ার জন্য আশুলিয়া ক্লাসিক গাড়িতে ওঠার সময় আমাকে বলা হয়- ভাড়া দিতে হবে ২৫০ টাকা। পরে বাধ্য হয়ে পুলিশ কন্ট্রোলরুমে অভিযোগ দিলে তারা গিয়ে ওই গাড়ির চালক রুহুল ইসলামকে আটক করে। পরে এ ধরনের কাজ আর করবেন না বলে মুসলেকা দিয়ে ছাড়া পান রুহুল। শিবালয় উপজেলার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেন বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে পাটুরিয়া সংযোগ সড়কে গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া অভিযোগ পেলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।