প্রবল বর্ষণে তলিয়ে গেছে খুলনা

অন্যান্য অর্থনীতি এইমাত্র খুলনা জীবন-যাপন

খুলনা প্রতিবেদক : ভাদ্র মাসের শুরুতে প্রবল বর্ষণে তলিয়ে গেছে খুলনা মহানগরীর অধিকাংশ এলাকা। মুষলধারে বৃষ্টিতে ছন্দপতন হয়েছে খুলনাবাসীর স্বাভাবিক জীবনধারায়। গত শুক্রবার দিবাগত গভীর রাত থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত চলে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। এরপর থেমে থেমে চলা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে অতিবর্ষণে খুলনাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। খুলনায় এ বৃষ্টিপাত বছরের সর্বোচ্চ হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস এ তথ্য জানিয়েছে। এদিকে বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় রাস্তায় সাধারণ মানুষের আনাগোনা খুবই কম। সকালের দিকে অফিসগামী মানুষের চলাফেরা বেশি থাকলেও বেলা গড়াতেই মানুষের আনাগোনা কমতে থাকে। পেশার তাগিদে বা জরুরি কাজে যারা বের হয়েছেন, জলাবদ্ধতার কারণে রিকশা বা ইজিবাইক না পেয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। বৃষ্টিতে মহানগরীর শান্তিধাম মোড়, রয়্যাল মোড়, বাইতি পাড়া, তালতলা, মডার্ন ফার্নিচার মোড়, পিকচার প্যালেস মোড়, পিটিআই মোড়, সাতরাস্তার মোড়, শামসুর রহমান রোড, আহসান আহমেদ রোড, দোলখোলা, নিরালা, বাগমারা, মিস্ত্রিপাড়া, ময়লাপোতা, শিববাড়ি মোড়, বড় বাজার, মির্জাপুর রোড, খানজাহান আলী রোড, খালিশপুর মেঘার মোড়, দৌলতপুর, নতুনবাজার, পশ্চিম রূপসা, রূপসা স্ট্যান্ড রোড, সাউথ সেন্ট্রাল রোড, বাবুখান রোড, লবণচরা বান্দা বাজারসহ প্রায় সব এলাকার রাস্তায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এসব এলাকার অনেক ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চলের বস্তি ঘরগুলোতে দেখা গেছে হাঁটুপানি। অনেক এলাকার ভবনের নিচতলা পানিতে ডুবে গেছে। বেসরকারি চাকরিজীবী আরিফ রহমান বলেন, সকাল থেকে খালিশপুর এলাকা যানবাহন শূন্য। অফিসে যেতে ভীষণ বেগ পেতে হয়েছে। তিনি জানান, নগরীর মুজগুন্নী এলাকায় শিশুপার্কের সামনে প্রায় হাঁটুপানি। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টিতে খালিশপুরের অধিকাংশ রাস্তা তলিয়ে গেছে। সব জায়গায় পানি আর পানি। পূর্ব বানিয়াখামার এলাকার বাসিন্দা শেখ রফিক বলেন, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা সবই এখন খুলনা। পানিতে সবাই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। খুলনার পূর্ব বানিয়া খামারের বি কে মেইন রোড হাঁটুপানি জমে আছে। আশপাশের প্রায় সব ঘরবাড়ির নিচতলা পানিতে তলিয়ে আছে। পানি উত্তোলনের পাম্প মেশিন তলিয়ে আছে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অধিকাংশ পরিবারে রান্নার অভাবে সদস্যরা সকাল থেকে না খাওয়া। দোকান সব বন্ধ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছেন না। নগরবাসী বলছেন, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ময়লা-আবর্জনা, খাল ভরাট, অবৈধ দখল ও বাঁধ দিয়ে মৎস্য চাষসহ নানা কারণে সামান্য বৃষ্টিতে নগড়জুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হন নগরবাসী। এদিকে বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে রিকশা ও ইজিবাইক চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, গত শুক্রবার রাত ৩টা থেকে খুলনায় মুষলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়। যা গতকাল শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এ সময় ১১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা এ বছরের সর্বোচ্চ হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় খুলনাঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *