বরগুনা কেউড়াবুনিয়া ইউপি সদস্য, বিআরটিএ চট্টগ্রাম ও খুলনা ইস্টার্ণ জুট মিলস এর কর্মকর্তাদের দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে দুদকের অভিযান

Uncategorized আইন ও আদালত

!! দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে গত বৃহস্পতিবার ৭ টি অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং ৩ টি অভিযান পরিচালনা করা সহ ৪ টি দপ্তরে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে !!


বিজ্ঞাপন

 নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের বিরুদ্ধে রাস্তা সংস্কারের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পটুয়াখালীর সহকারী পরিচালক মোঃ আরিফ হোসেন এর নেতৃত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার ১৯ মে, সদর উপজেলা, বরগুনাতে একটি এনফোর্সমেন্ট পরিচালনা করা হয়। এনফোর্সমেন্ট চলাকালে টিম সরেজমিনে রাস্তার কাজ পরিদর্শন করে এবং এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানতে পারে, কেউড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কোর্টবাড়িয়া গ্রামের গনি মৃধার বাড়ি হতে পূর্ব দিকের শামীম মৃধার বাড়ি বাড়ি পর্যন্ত এবং তুলসি বাড়িয়া গ্রামের সুলতানের বাড়ি হতে পূর্ব দিকে মালেকের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার মেরামত কাজ ২০২১ সালে শুরু হয়। এর মধ্যে তুলসি বাড়িয়া গ্রামের সুলতানের বাড়ি হতে পূর্ব দিকে মালেকের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার মেরামত কাজ জুন/২০২১ সালে সম্পন্ন হয়। অপরদিকে কোর্টবাড়িয়া গ্রামের গনি মৃধার বাড়ি হতে পূর্ব দিকের শামীম মৃধার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার মেরামত কাজ ২০২২ সালে রমজান মাসের শেষ দিকে শুরু করা হয়েছে। বর্তমানে রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। জুন/২০২১ সালে রাস্তা মেরামত বাবদ বিল তোলা হলেও ২০২২ সালে কাজ শুরু করার বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলা, বরগুনার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ জিয়াউর রহমান জানান যে, কোর্টবাড়িয়া গ্রামের গনি মৃধার বাড়ি হতে পূর্ব দিকের শামীম মৃধার বাড়ি বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি পানিতে নিমজ্জিত থাকায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল এবং প্রকল্পের অর্থ রুপালী ব্যাংকে রাখার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে রাস্তাটি মাটি ভরাটের উপযোগী হওয়ায় এপ্রিল/২০২২ রাস্তার মেরামত কাজ আবার শুরু করা হয়েছে। বর্তমানে রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। তিনি জানান যে, চলমান কাজের ৭০% শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর প্রেরণ করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
চট্টগ্রাম বিআরটিএ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একটি টিআইএন এর বিপরীতে ১০৩ টি গাড়ি রেজিস্ট্রেশন করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক, জেকা, চট্টগ্রাম-১ এর উপ-পরিচালক জনাব আবু সাঈদ এবং সহকারী পরিচালক মোঃ এনামুল হক এর সমন্বয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার অপর একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। উক্ত দপ্তর হতে বেশ কিছু রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাথমিক যাচাইকালে একই টিইন নাম্বার ব্যবহার করে ১০৩ টি গাড়ী রেজিস্টেনের অভিযোগে সত্যতা প্রাথমিকভাবে পাওয়া গিয়েছে। প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালাচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে ।
প্রকল্প প্রধান এবং বিভাগীয় প্রধান (হিসাব) এর বিরুদ্ধে জুট মিল কর্মীর গ্রাচ্যুইটি ক্লিয়ারেন্স প্রদানে ঘুষ দাবির অভিযোগে দুদক জেকা, খুলনার সহকারী পরিচালক তরুন কান্তি ঘোষ ও মো: আল-আমিন এর নেতৃত্বে আজ আরও একটা অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযোগ যাচায়ের জন্য দুদক টিম সরেজমিনে ইস্টার্ণ জুট মিলস, আটরা, খুলনায় এই অভিযান পরিচালনা করেছে। খুলনা জেলার জাহান আলী থানাধীন ইস্টার্ন জুট মিল লিমিটেডে এক জন অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকের সার্ভিস বেনিফিট না পাওয়ার অভিযোগে উক্ত মিলে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছেন।
অভিযান পরিচালনা কালে মিল থেকে সৃষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, অভিযোগকারী তার অবসরগ্রহণের নয় মাস পরেও তাকে তার সার্ভিস বেনিফিট, লামগ্রান্ট, অবসর ভাতা ইত্যাদি প্রদান করা হয়নি। এই সংক্রান্তে অভিযোগকারী আবেদন করলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অবসর ভাতা প্রদান করার জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। অভিযোগকারীর অবসর গ্রহণের অনেক পরে অবসরপ্রাপ্ত অন্য কর্মচারীকে তাদের অবসর ভাতা প্রদান করা হলেও তাকে কোন ধরনের অবসর ভাতা প্রদান করা হয়নি বা কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। এছাড়া মিলের বিভিন্ন বিভাগ থেকে পত্র ছাড়পত্র গ্রহণ করতে গেলেও তাকে তা প্রদান করা হয়নি। অভিযোগ প্রসঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান যে, সংশ্লিষ্ট মিলের প্রকল্প পরিচালক/ডিজিএম কর্তৃক আইন বিশেষজ্ঞের মতামত গ্রহণ করে অভিযোগকারীর সকল বেনিফিট নির্ণয় করে পত্র প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় বার আইন বিশেষজ্ঞের মতামত গ্রহণের জন্য পত্র প্রেরণ করায় সার্ভিস বেনিফিট প্রদান করতে বিলম্ব হয়েছে। অভিযোগকারী তার যে সার্ভিস বেনিফিট প্রাপ্যতা অর্জন করেছেন তার থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা কম দেবার প্রস্তাব করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনাকারী টিম প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরিকৃত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
এছাড়াও দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) আগত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক কমিশনকে অবহিত করার জন্য ০৫টি দপ্তরে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন