নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ গতকাল রবিবার ৫ জুন, বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটারের প্রযোজনায় হাবিবুর রহমান (বিপিএম-বার, পিপিএম-বার) ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জ,এর পরিকল্পনা,গবেষণা ও তথ্য সংকলন ও মোঃ জাহিদুর রহমান,পুলিশ পরিদর্শক, নারায়ণগঞ্জ জেলা এর রচনা ও নির্দেশনা, জেলা পুলিশ, নীলফামারীর আয়োজনে সন্ধ্যা ৭ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী নীলফামারীতে অনুষ্ঠিত হয় ১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ সালের নিশংস হত্যা কাণ্ডের উপর ইতিহাস-আশ্রয়ী গবেষণালব্ধ নাটক “অভিশপ্ত আগষ্ট”।
আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আসাদুজ্জামান নূর, সংসদ সদস্য, নীলফামারী -০২।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, এমপি বলেন “অভিশপ্ত আগষ্ট” নাটকে সে সময়কার প্রকৃত ইতিহাসকে তুলে ধরা হয়েছে।
আমরা এতোই দুর্ভাগা যে আমরা বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে পারিনি।
১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্য সহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে দেশমাতৃকার সেবায় সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান।
১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ সালের নিশংস হত্যা কাণ্ডের উপর ইতিহাস-আশ্রয়ী গবেষণালব্ধ নাটক “অভিশপ্ত আগস্ট” উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) পুলিশ সুপার, নীলফামারী মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বিপিএম, পিপিএম।
১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ সালের নিশংস হত্যা কাণ্ডের উপর ইতিহাস-আশ্রয়ী গবেষণালব্ধ নাটক “অভিশপ্ত আগষ্ট” নির্মিত নাটক এর সাথে সম্পৃক্ত সকল কলাকুশলীদের সহ ,আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) ‘কে ধন্যবাদ জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জ, হাবিবুর রহমান (বিপিএম-বার, পিপিএম-বার) এর পরিকল্পনা,গবেষণা,তথ্য সংকলন ও মোঃ জাহিদুর রহমান,পুলিশ পরিদর্শক, নারায়ণগঞ্জ জেলা এর রচনা ও নির্দেশনা ১৫ আগস্টের ঘটনায় হত্যা মামলার নথিপত্র ও বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে “অভিশপ্ত আগষ্ট” নাটকটি রচনা করা হয়েছে। যা একটি ঐতিহাসিক দলিল।
পুলিশ সুপার, নিশংস হত্যা কাণ্ডের উপর ইতিহাস-আশ্রয়ী গবেষণালব্ধ নাটক “অভিশপ্ত আগস্ট” কে ঘিরে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন ১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ সালের নিশংস হত্যা কাণ্ডের শিকার বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুননেছা, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, জামালের স্ত্রী রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের, এসবি অফিসার সিদ্দিকুর রহমান, কর্ণেল জামিল সহ মোট ২৬ জন শহীদ কে।
পুলিশ সুপার বলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রাজারবাগ থেকে প্রথম প্রতিরোধ করেছে পুলিশ, প্রথম রক্ত দিয়েছে পুলিশ, প্রথম শহীদ হয়েছে পুলিশ। ১৫ আগস্ট কালরাতে যে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে তা এখন ইতিহাসের পাতায়। তিনি বলেন বাঙালি জাতির সবচেয়ে কলঙ্কিত অধ্যায় এই ১৫ই আগষ্ট ।
পুলিশ সুপার গভীর দুঃখের সঙ্গে বলেন যে মহান স্বাধীনতার অনেকগুলো বছর পেরিয়ে গেলেও আমরা বঙ্গবন্ধুর শূন্যতা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি।
তিনি বঙ্গবন্ধুর কিছু স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন একটি মানুষ,একটি জাতির মুক্তির আশায় তার যৌবনের সিংহভাগ সময় কাটিয়েছেন অন্ধকার কারা ঘরের প্রকোষ্ঠে। পাকিস্তানি শাসকদের জুলুম অত্যাচার সহ্য করে বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রাম চালিয়েছেন।
মহান স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতিকে একত্রিত করে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন লাল-সবুজের এই স্বাধীন পতাকা।
সবশেষে পুলিশ সুপার নীলফামারী মহোদয় বলেন “অভিশপ্ত আগষ্ট” নাটকটি মঞ্চায়িত এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিশংস হত্যা কান্ডের যে দৃশ্য ফুটে উঠেছে তা আমাদের নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানতে সহযোগিতা করবে।
নাটকটির মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা সমস্ত চক্রান্ত অত্যন্ত সহজ সরল ও সাবলীল ভাষায় সর্বস্তরের মানুষদের মাঝে তুলে ধরতে পেরেছে নাটকটির অভিনয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংশ্লিষ্ট সকলেই। তাই পুলিশ সুপার বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটার এর প্রযোজনায় “অভিশপ্ত আগষ্ট “নাটকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে তিনি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান।
এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথিগণ নাটকটি দেখে শেষে তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।
তারা পুলিশ সদস্যদের সুদক্ষ অভিনয়ের মাধ্যমে ১৫ ই আগস্ট এর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের যে সত্য ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে তার ব্যাপক প্রশংসা করেন।
অতিথিদের ভাষ্যমতে ইতিহাসের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে মঞ্চের মাধ্যমে দর্শকদের সামনে নিয়ে আসায় সর্বস্তরের জনসাধারণ ১৫ ই আগষ্ট এর অভিশপ্ত ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটারের প্রযোজনায় ১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ সালের নিশংস হত্যা কাণ্ডের উপর ইতিহাস-আশ্রয়ী গবেষণালব্ধ নাটক “অভিশপ্ত আগষ্ট” উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন খন্দকার ইয়াসির আরেফীন,জেলা প্রশাসক, নীলফামারী , দেওয়ান কামাল আহমেদ,মেয়র, নীলফামারী-পৌরসভা, আবু সাঈদ, চেয়ারম্যান, সদর-উপজেলা পরিষদ, নীলফামারী ,বীর মুক্তিযোদ্ধা, জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা পুলিশ নীলফামারীতে কর্মরত বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসার-ফোর্স, বিভিন্ন স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পী ও কর্মী, রাজনৈতিক, ক্রীড়া ও পেশাজীবী বিভিন্ন সংগঠনের সংস্কৃতিনুরাগী বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন উপস্থিত থেকে নাটকটি উপভোগ করেন।