বিশেষ প্রতিবেদক : টাকা ছাড়া কমিটির অনুমোদন দিতেন না যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। মুখ খুলতে শুরু করেছেন সংগঠনটির কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের নেতারা। ওয়ার্ড পর্যায়ে সর্বনিম্ন ৩০ লাখ আর জেলা পর্যায়ে কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। নিজের স্বার্থে গঠনতন্ত্রেও এনেছেন পরিবর্তন।
ক্যাসিনো ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের চলমান অভিযানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া আটকের ঘটনায় বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। এর পরই তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা ও তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেয়। এরপরই চলে যান পর্দার অন্তরালে।
এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে উঠে আসে কমিটি অনুমোদনে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কমিটি অনুমোদনের জন্য ওমর ফারুক চৌধুরী দুই দফায় নিয়েছেন আড়াই কোটি টাকা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস বলেন, তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার পরই সারা দেশে জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি সম্মেলন ছাড়াই আহ্বায়ক হিসেবে দেয়া হয়। অর্থের বিনিময়েই এই কমিটি দেয়া হয় বলে শুনেছি।
যশোর ও পাবনা জেলায়ও কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে।
পাবনা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রকিব হাসান টিপু বলেন, আমাদের কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে কিংবা অবগত না করেই কমিটি বাতিল করা হয়েছিল। পরে শুনেছি ৫-৭ কোটি টাকার বিনিময় এই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।
তার আর্থিক অনিয়মের কারণেই সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহি বলেন, ঢাকাতে একটি ওয়ার্ডের সম্মেলন করতে গেলেও ২০-৩০ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি হওয়ার পর কারও পক্ষে এটা রিকভার করার সুযোগ নেই। তাই তিনি এই টাকা উদ্ধার করতে হয়তো মাদকের ব্যবসা করবেন কিংবা টেন্ডারবাজি করবেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি মইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, নেতা নির্বাচিত হতে কাউকে যদি টাকা দিতে হয় তবে এর চাইতে দুঃখজনক কিছু নাই। গত সাত বছরেও কোনো কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক করেন নি বলেও মন্তব্য করেন তারা।