!! ১ হাজার ২২৪টি মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণ প্রযুক্তি, ২ হাজার ৮০টি বিশেষ প্রযুক্তি প্রদর্শনী, ৫টি কৃষক কেন্দ্র, ১১৫টি বিদ্যুৎবিহীন কুলিং চেম্বার, ৮টি পলিনেট বা শেড হাউস নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়াও ৯২টি উদ্বুদ্ধকরণ ভ্রমণ, ২ হাজার ১৩৫টি মাঠ দিবস, ১২টি কৃষি প্রযুক্তি মেলা অনুষ্ঠিত হবে। প্রকল্পের আওতায় অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ১ হাজার ৮৩৬ ব্যাচ কৃষক, ৬৪টি ব্যাচ উদ্যোক্তা, ৪৪ ব্যাচ এসএএও, ১০ ব্যাচ কর্মকর্তাকে !!
নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ দামি ফসল উৎপাদনে প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রংপুর বিভাগের তিনটি জেলার ২৩টি উপজেলায় দামি ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে শষ্যের নিবিড়তা বাড়বে, কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি হবে। ‘দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি সম্প্রতি একনেকে অনুমোদন পেয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী উচ্চফলনশীল ও জলবায়ু অভিঘাত সহিষ্ণু ফসলের জাত সম্প্রসারণে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বর্ণিত শস্য উপখাতের উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদন উপকরণের দক্ষ ও সুষম ব্যবহার নিশ্চিতকরণের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ‘দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন’ প্রকল্পটি সক্ষম। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-২ এ বর্ণিত টেকসই কৃষির প্রসার, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১৩ এ বর্ণিত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সঙ্গতিপূর্ণ।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ‘দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি ৩১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয়ের পুরো অর্থ যোগান দেওয়া প্রকল্পটি ২০২৭ সালের জুলাইতে বাস্তবায়িত হবে। রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলার ২৩টি উপজেলাজুড়ে প্রকল্পটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বাস্তবায়ন করবে। সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ৩ হাজার ৬০টি দানাদার ফসল, ৯ হাজার ৭৯২টি উচ্চমূল্যের নিরাপদ সবজি, ১ হাজার ৮৩৬টি তৈল জাতীয় ফসল, ৩ হাজার ৬০টি একক ফল বাগান তৈরির প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হবে। একইসঙ্গে ১ হাজার ২২৪টি মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণ প্রযুক্তি, ২ হাজার ৮০টি বিশেষ প্রযুক্তি প্রদর্শনী, ৫টি কৃষক কেন্দ্র, ১১৫টি বিদ্যুৎবিহীন কুলিং চেম্বার, ৮টি পলিনেট বা শেড হাউস নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়াও ৯২টি উদ্বুদ্ধকরণ ভ্রমণ, ২ হাজার ১৩৫টি মাঠ দিবস, ১২টি কৃষি প্রযুক্তি মেলা অনুষ্ঠিত হবে। প্রকল্পের আওতায় অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ১ হাজার ৮৩৬ ব্যাচ কৃষক, ৬৪টি ব্যাচ উদ্যোক্তা, ৪৪ ব্যাচ এসএএও, ১০ ব্যাচ কর্মকর্তাকে। পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, প্রকল্পটি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এডিপিতে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। গত ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকের অনুমোদন পেয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে শস্যের নিবিড়তা চার শতাংশ বাড়নো, পরিবেশ বান্ধব উৎপাদন প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় উচ্চমূল্য ফসলের উৎপাদন ১২ শতাংশ বাড়ানো, জমির উৎপাদনশীলতা ৫ শতাংশ বাড়ানো, মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণ সহ ফসল সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উচ্চমূল্য ফসলের সংগ্রহোত্তর ক্ষতি ১০ শতাংশ কমানো, এবং খোরপোষ কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে ১ হাজার ৪৪০ জন কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি করতেই প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। একনেক সভায় উপস্থাপনের যুক্তি তুলে ধরে পরিকল্পনা কমিশন তার মতামতে বলেছে, রংপুর বিভাগের দিনাজপুর অঞ্চলে উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদন, শস্য উৎপাদনে বৈচিত্রতা আনয়ন, নিরাপদ ফসল উৎপাদন, কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, নারী ও তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টি, কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ এবং জাতীয় পুষ্টির চাহিদাপূরণে আধুনিক প্রযুক্তি ও কার্যক্রম সম্প্রসারণে প্রকল্পটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এমন পরিস্থিতিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে প্রস্তাবিত ‘দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন’-শীর্ষক প্রকল্পটি ৬৫ কোটি ৩১ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে আগামী ২০২৭ সালের ৩০ জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একনেক-এর অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানিয়েছেন, রংপুর বিভাগের ৩ জেলার আওতায় থাকা ২৩ উপজেলায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে শষ্যের নিবিড়তা বাড়াতে, কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি করতেই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে খোরপোষ কৃষি কমবে বাড়বে বাণিজ্যিক কৃষি। এর প্রেক্ষিতে কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি তবে। এ ছাড়াও প্রকল্পের আওতায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে শস্যের নিবিড়তা বাড়ব। পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রযুক্তি সম্প্র্রারণের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় উচ্চমূল্য ফসলের উৎপাদন বাড়াবে। জমির উৎপাদনশীলতা বাড়বে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।