শেরপুর প্রতিনিধি : “কেউ বলেছে তুর পর্বতে আল্লাহ আমার সাথে কথা বলেছেন। কেউ বলেছে, হেরাগুহায় আল্লাহ ফেরেস্তার মাধ্যমে আমার কাছে বাণী পাঠিয়েছেন। কেউ বলেছে, ঈশ্বর তার পবিত্র আত্মা দিয়ে আমাকে সৃষ্টি করেছেন। কেউ বলেছে, আমিই স্বয়ং ভগবান, যুগে যুগে ধর্ম সংস্থাপন কল্পে আমি পৃথীবিতে আসি।
এই আল্লাহ, ঈশ্বর বা ভগবান কৃত্তিম সর্বভৈব। এদের কেউই রিয়েল সর্বভৈব নয়” এমন একটি ভিডিও শেরপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে শেরপুরের আদালত পাড়ায়। সৃষ্টি কর্তাকে নিয়ে এই স্পর্শকাতর মন্তব্য করেন, শেরপুরের জেলা জজ (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল) এর বিচারক ইমান আলী শেখ। এই ঘটনায় আইনজীবি, আদালতের কর্মকর্তা ও সাধারন মানুষের মধ্যে ভিতরে ভিতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলছে না। তবে ঘটনাটি আইন মন্ত্রালয়ের কান পর্যন্ত পৌছেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন মন্তব্যের জেরে ইমান আলী শেখকে তার পদ থেকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। রোববার সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে তাকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ ওসমান হায়দার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্য ইমান আলী শেখকে বদলি করে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হলো। তাকে শেরপুরের জেলা ও দায়রা জজের নিকট বর্তমান পদের দায়িত্বভার দিয়ে অবিলম্বে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
এ ব্যাপারে শেরপুর আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবি বীর মুুক্তিযুদ্ধা এডভোকেট মুখলেছুর রহমান বলেন, “এই বিষয়টি অবহিত হবার পর পরই আমি মাননীয় জেলা জজ মহোদয়কে ব্যক্তিগতভাবে গত বৃহস্পতিবার এই ধরনের উস্কানি মুলক ভিডিও বন্ধের আহব্বান জানিয়েছিলাম। আমি তাকে বলেছিলাম, আপনার মতাদর্শ আলাদা থাকতে পারে। এটা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত বিষয়।
কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ধরনের মন্তব্য করলে শেরপুরের ৯০ শতাংশের মুসলমানের জেলায় বড় আন্দোলন বা সহিংসতার ঘটনা ঘটতে পারে। তবে তাকে দ্রত সময়ের মধ্যে শেরপুর জেলা থেকে প্রত্যাহার করায় সরকারকে জজনসাধারণ জানিয়েছে।