সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করছে?

এইমাত্র রাজধানী রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিগত দিনে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের প্রতিটি আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি। ওই সময় দলটির ভাষ্য ছিল, বর্তমান সরকার দেশে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থায় ব্যর্থ হয়েছে। তবে সরকার যখন নিরাপদ সড়ক করতে চালক ও পথচারী উভয়ের জন্য কঠোর বিধান যুক্ত করে সড়ক পরিবহন আইন ‘২০১৮’ কার্যকর করেছে, সেসময় দলটি বলছে- সরকার যে সড়ক আইন করেছে, তা বাস্তবসম্মত হয়নি! অর্থ্যাৎ দলটি এবিষয়ে দুই ধরণের বক্তব্যে দিয়ে সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে রাজনীতি করছে বলে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষককরা।


বিজ্ঞাপন

এবিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের সরকারগুলো বরাবরই কোটারি শ্রমিক শ্রেণির কাছে জিম্মি হয়ে থাকে। তবে সরকার যে সড়ক আইন করেছে, তা বাস্তবসম্মত হয়নি। আলাপ–আলোচনা করার পর বাস্তবায়ন করা হলে শ্রমিকদের মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, তা হতো না। আর সমস্যাটা হলো সরকার তো মনে করে না এসব বিষয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন আছে। সড়ক আইনটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে বাস্তবায়ন করা উচিত। আইন শক্ত হওয়া উচিত। পাশাপাশি আইনের প্রয়োগও থাকতে হবে।


বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের দাবি–দাওয়া নিয়ে তারা যে কর্মবিরতি করছেন, সেখানেও বিএনপি নতুন সড়ক পরিবহন আইনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। উদ্দেশ্য, যদি শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে এখান থেকে কোনো সুযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু উসকানি দিয়ে লাভ হবে না।

এদিকে নতুন আইনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে পরিবহন শ্রমিকদের একাংশ ধর্মঘট শুরু করেছে। এই আইনের বিরুদ্ধে শেরপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, পিরোজপুরসহ ১০টির বেশি জেলায় বাস মালিক শ্রমিকরা কোন আগাম ঘোষণা ছাড়াই বাস চলাচল বন্ধ করে রেখেছেন গত দুইদিন ধরে। পাশাপাশি এখন পণ্যবাহী ট্রাক এবং কাভার্ডভ্যান মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদও বুধবার থেকে দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে।

গত বছর ঢাকার দুই কলেজ শিক্ষার্থী সড়কে বাস চাপায় প্রাণ হারানোর পর শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন আইন পাস করে সরকার।

এবিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আসমা আক্তার সেলিনা মনে করেন, নতুন এই আইনের ফলে মানুষ আগের চাইতে বেশি সচেতন হবে। আমাদের এখানে প্রতিদিন এতো অ্যাকসিডেন্ট হয়, তারপরও কোন চেঞ্জ নাই। কে কার আগে যাবে প্রতিযোগিতা করতে থাকে। মারা যায় ওই সাধারণ মানুষ। আবার পথচারীরাও ইচ্ছামতো রাস্তা পার হয়ে যাচ্ছে। এই দুইটাই বন্ধ হওয়া উচিত। নতুন আইনে শাস্তি বাড়ানোয় মানুষ এখন আগের চাইতে ভয় পাবে, সাবধান হবে।

অপরদিকে বাংলাদেশ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গবেষণা বলছে, দেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ১২ হাজার মানুষ নিহত ও ৩৫ হাজার আহত হচ্ছে।

এবিষয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, নতুন এই আইন সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বড় ধরণের ভূমিকা রাখবে। তবে আইনটি আরও যাত্রীবান্ধব হওয়া প্রয়োজন। তবে এই আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে এই আইনটি সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হতে পারে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *