নিজস্ব প্রতিবেদক : আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ বা র্যাব দিয়ে অভিযান চালিয়ে বা মনিটরিং করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, পণ্যের দাম বাজারই ঠিক করবে। জোগান বা সরবরাহ বেশি হলে কিছু করা লাগবে না, অটোমেটিকলি দাম কমে যাবে। তারপরও বাজার মনিটর করতে হবে।
বুধবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। এ সময় কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিখাতে সরকার সাবসিডি দিচ্ছে কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অনেক বেশি। পেঁয়াজসহ অন্যান্য সবজির বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সরকার কি বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাজারে যে শাক সবজির দাম বেশি।
তিনি বলেন, এর জন্য অনেকগুলো কারণ রয়েছে যেমন- ট্রান্সপোর্ট খরচ অস্বাভাবিকভাবে বেশি, এগুলো পচনশীল পণ্য। তাই উৎপাদন খরচ ও ভোক্তাদের ক্রয়ে অনেক পার্থক্য হবে। কিন্তু এখন দামটা অনেক বেশি। তবে আমার মনে হয় খুব দ্রুত দাম কমে আসবে। এটা এমন কমবে যে, চাষিরা বিক্রিই করতে পারবে না, এমন পরিস্থিতি হতে পারে।
তিনি বলেন, আমি সবসময় বলি কাঁচাবাজারের সব পণ্যই পচনশীল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ বা র্যাব দিয়ে অভিযান চালিয়ে আপনি কোনো দিনই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। বাজারের যে শক্তি সেটাই এটাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। বাজার মনিটর করার জন্য সব দেশেই কমিটি রয়েছে। কিন্তু তেমনভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এটা নির্ভর করে চাহিদা এবং জোগানের উপর। জোগান বা সরবরাহ বেশি হলে কিছু করা লাগবে না অটোমেটিকলি দাম কমে যাবে।
রাজ্জাক আরও বলেন, খাদ্যমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, যে ওএমএসের গাড়ি থেকে মোটা চাল মানুষ নিতে চায় না। কোনো মানুষ ওএমএসের চাল নেয় না। মোটা চালের দাম এক টাকাও বাড়েনি।
তিনি বলেন, আমরা ভিজিএফ এর মাধ্যমে কিছু চাল দিয়ে থাকি। এসব চাল নিয়ে কেউ খায় বিক্রি করে দিয়ে চিকন চাল কিনে খায়। এই হলো পরিস্থিতি। শুরু চাল যারা কিনতে পারে, তাদের জন্য দাম বাড়লে সমস্যা কি। চালের দাম না বাড়লে তো আবার কৃষক দাম পাবে না। আমরা তো চাচ্ছি যে ধানের দাম বড়ুক।
আপনি কি ২৫০ টাকা কেজি পেঁয়াজ কিনেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কম কেনা হয়। আগে যে রকম কিনতাম এখন ওতটা কিনি না। তিনি বলেন, আমরা অনেকগুলো পেঁয়াজের ভ্যারাইটি নিয়ে এসেছি। আশা করি আগামী বছর আমরা পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব।
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, ফরিদপুর, মেহেরপুর ও পাবনা এলাকায় পেঁয়াজ বেশি উৎপাদন হয়। আমরা এসব এলাকায় আগামীতে আরও বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করেছি।
সচিব বলেন, মুদ্রার অন্য পিঠও আছে। আমরা যদি ৩০ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারি তাহলে এ রকম সমস্যা আর হবে না। আমরা এ লক্ষ্যেই পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বললেন কিন্তু সম্প্রতি লবণের দাম বৃদ্ধিটা কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা গেছে এমন প্রশ্নে তিনি লবণের বিষয়টা ছিল গুজব। তাই সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। চাহিদার তুলনায় লবণ বেশি আছে তাই সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি বলেছি শুধু বাজার মনিটর করে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তবে বাজারতো মনিটর করতেই হবে। কিছু ভুলতো আমাদের রয়েছেই। যখন আমাদের পেঁয়াজ পচে গেল তখনই তো আমাদের উচিত ছিল বেশি বেশি পেঁয়াজ আমদানি করা।