নিজস্ব প্রতিবেদক : গত কয়েক মাস ধরে ক্রেতাদের ‘কাঁদানো’র পর কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দরে। দেশি নতুন পেঁয়াজ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দাম কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের। তবে পেঁয়াজের দাম কমতে না কমতেই এবার খাসি ও বকরির মাংসের দামে যেন আগুন লাগতে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে মাংসের দাম।
দাম কমে মান ভেদে কেজি প্রতি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। পুরানো পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। আমদানি করা বার্মিজ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এদিন সকালে রাজধানীর টাউনহল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।
মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, দাম বেড়ে বর্তমানে প্রতি কেজি খাসির মাংস ৮০০ -৯০০ টাকায়, বকরির মাংস ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গরুর মাংসের দাম আগের নির্ধারিত মূল্য ৫৫০ টাকায়ই বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে ফার্মের মুরগি কেজি প্রতি ১৩০ টাকা, কক মুরগি ১৮৫-১৯০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০ টাকা, হাঁস প্রতি পিস ৫০০ টাকা, রাজহাঁস প্রতি পিছ ১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জসিম বলেন, দেশীয় নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করায় পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। জানুয়ারি মাসে বাজারে পুরোপুরি পেঁয়াজ চলে এলে দাম আগের মতই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। নতুন পেঁয়াজ আশায় আমদানি করা পেঁয়াজের চাহিদা কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
বাজার করতে আসা ক্রেতা শারমিন লাকী অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন পরে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে, এটা আমাদের মতো ক্রেতাদের জন্য স্বস্তির ব্যাপার। তবে বাজারে যেসব পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে, সেসব পেঁয়াজের মানটা একটু খারাপ। কৃষকরা আগাম পেঁয়াজ তুলে ফেলায় পেঁয়াজের সাইজ ছোট এবং পচা পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে অনেক।
এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে শীতকালীন সবজির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে শীতকালীন সব ধরনের সবজি ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে।
কারওয়ান বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি নতুন আলু ৪০ টাকা, পুরনো আলু ৩০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, শালগম ৫০ টাকা, কাঁচকলা ৩০ ঢাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা, কচুর লতি ৪০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, শসা ১২০ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তাছাড়া প্রতি পিস ফুলকপি ৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, লাউ ৪০-৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, লেবু ২০ টাকা হালি, পেঁয়াজের কলি ৩০ টাকা আঁটি বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সাপ্তাহিক বাজার করতে আসা হাসান আলি বলেন, সবজির দাম আগের মতোই আছে। তাছাড়া পেঁয়াজের দামও কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এতে বাজারে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে, কারণ প্রতিদিনই এ পণ্যটি আমাদের লাগে। তবে হঠাৎ করেই মাংসের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে খাসির মাংস এবং হাঁসের দাম অনেকটাই বেড়ে গেছে।
টাউনহলের মাংস ব্যবসায়ী জহির উদ্দিন বলেন, শীত আসায় খাসির মাংসের চাহিদা বেশি, তাই দামও বাড়তি। ৮০০ টাকা সরকারি রেট থাকলেও ৯০০ টাকায় বিক্রি করছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।
সব ধরনের হাঁসের দামও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন হাঁস ব্যবসায়ীরা। দাম বাড়ার অজুহাত হিসেবে তারা শীতের প্রসঙ্গ টানছেন।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, সাইজ ভেদে প্রতি কেজি রুই ২০০-৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ টাকা, বড় সরপুঁটি ২০০ টাকা, শিং ৪০০-৫৫০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৫০০-৬০০ টাকা ও ছোট মাছ ৩৫০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছ ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দাম স্থিতিশীল আছে। বাজারে মাছের চাহিদা কম থাকায় সব ধরনের মাছের দাম আগের মতোই রয়েছে।
মুদির দোকান ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মত স্থিতিশীল রয়েছে সব ধরনের চালের দাম। সয়াবিন তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। চিনি, ডাল, আটা, ময়দা ও ডিমের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।