নিজস্ব প্রতিবেদক : নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীনফেরত সব যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যাত্রীদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অতিরিক্ত আরও ১০ চিকিৎসককে পদায়ন দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ নিয়ে বিমানবন্দরে পদায়নকৃত চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়াল ১৯ জনে। ফলে এখন থেকে প্রতি বেলায় কমপক্ষে ৩ জন করে চিকিৎসক সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। কোনো যাত্রীর গায়ে জ্বর ও শরীর খারাপ শুনলেই চিকিৎসকরা তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেবেন।
বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, সম্প্রতি চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় চীনফেরত যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়। চিকিৎসকের সংখ্যা মাত্র ৯ জন হওয়ায় প্রতিদিন শাহজালাল বিমানবন্দরে চীনফেরত চারটি ফ্লাইট (চায়না ইস্টার্ন, চায়না নর্দান, ড্রাগন এয়ার ও ইউএসবাংলা)-এর যাত্রীদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা দুরূহ হয়ে পড়ে। চিকিৎসক সংখ্যা কম হওয়ায় যাত্রীদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার চেয়ে মূলত থার্মাল ও হ্যান্ড থার্মাল স্ক্যানারে (জ্বর পরিমাপক যন্ত্র) জ্বর ধরা পড়ার ওপর নির্ভর করতে হতো। নতুন করে ১০ চিকিৎসক পদায়ন দেয়ায় অধিক সংখ্যক যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্ভব হবে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে গত ১৬ দিনে (২১ জানুয়ারি-৫ ফেব্রুয়ারি) চীন থেকে ৭১৪৬ যাত্রী এসেছেন। তাদের মধ্যে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ল্যাবরেটরিতে ৪৩ জন চীনফেরত যাত্রীর নমুনা পরীক্ষা হলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো যাত্রী পাওয়া যায়নি। শাহজালাল বিমানবন্দরে থার্মাল ও হ্যান্ড থার্মাল স্ক্যানারে যাত্রীদের রোগ পরিমাপ করা হলেও চিকিৎসকরা রোগীদের প্রতি নজর কম দিতেন।
তিনি আরও জানান, প্রতিদিন চীন থেকে শুধু চারটি ফ্লাইটেই নয়, কমপক্ষে ১০/১১টি ফ্লাইটে চীনফেরত যাত্রীরা ফিরে আসছেন। প্রতিটি ফ্লাইটে কমপক্ষে ১৬০/১৭০ যাত্রী হওয়ায় চিকিৎসকদের পক্ষে সব যাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকা স্বত্ত্বেও বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ঢিলেমে হচ্ছে নানা মহলে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। এ সব দেখে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.আবুল কালাম আজাদ দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে নতুন করে ১০ জন চিকিৎসক পদায়ন দেন।