বিশেষ প্রতিবেদক : দিন শেষে সকলেই পাওয়া না পাওয়ার হিসাব কষতে বসে। কেউ ব্যস্ত স্বৈরাচার সরকারকে হটিয়ে দেশ গড়তে, কেউ ব্যস্ত ক্ষমতায় আসতে। অনেকেই ব্যস্ত নতুন দল গঠন করে নিজেরাই দেশ পরিচালনা করতে। আবার অনেকেই না পাওয়ার বেদনায় আক্ষেপে নির্ভিতে। স্বৈরাচার সরকারকে হটাতে দেশের সকল ছাত্র জনতা অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি স্কুল কলেজের যেমন অবদান রয়েছে তেমনি কম অবদান নেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের, তেমনি পিছিয়ে ছিলোনা মাদ্রাসা ছাত্ররাও।

ব্ল্যাক আউটে যে দিন ঘন্টার পর ঘন্টা আন্দোলন, সংঘর্ষ চলেছিল সেদিন শুধু ছাত্ররাই মাঠে ছিলোনা, সেদিন রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রীরাও মাঠে ছিলো। মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচির দিনও শুধু ছাত্ররাই মাঠে ছিলোনা সেদিন রাজনৈতিক দলের আইনজীবী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজীবী ও সাংবাদিক এবং সকল সচেতন নাগরিক মাঠে ছিলো।

দেশের সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী ১০০% উপস্থিতি ছিলেন।
ঢাকা শহরের অর্ধেক জায়গা তাদের দখলে ছিলো অথচ তাদের কেউই এখনকার সমন্বয়কের কাতারে নেই। এক দফা দাবির ঘোষণাকালে যেদিন সবাইকে আহ্বান করা হয়েছিল সেদিন মারাত্মকহারে অংশগ্রহণ করেছিল মাদ্রাসা ছাত্ররা। সেদিন তাদের ভূমিকার জন্য এক দফা আদায়ে বহুগুনে এগিয়ে গিয়েছিলো অথচ তাদের কোনো প্রতিনিধি নেই, সেই আক্ষেপ ও কম নই।
ছাত্রদের সাথে অংশগ্রহণ করেছিল ১৬ বছর ধরে নিপিড়িত, নির্যাতিত জুলুম সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সকল রাজনৈতিক দলের সমর্থক, নেতা নেত্রী, সাংবাদিক, আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক অনেক মাধ্যম।
এই আন্দোলনে যেমন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজের ছাত্ররা তেমনি বহুগুনে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ।
হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুর থেকে শুরু করে শিশু কিশোর যুবক যুবতীরা আধা বয়সী নারীরাও যাদের এখনো পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি সুতরাং কেউ ডাক দিলো আর স্বৈরাচার পতন হয়ে গেলো এটা যারা ভাবছেন তারা আবেগ দিয়ে নই বিবেক দিয়ে চিন্তা করুন এবং আগামীর রাষ্ট্র গঠনে গঠনমূলক সমালোচনা করুন। মনে রাখবেন, মাঠের আন্দোলন আর রাষ্ট্র পরিচালনা করা এক জিনিস নই।
এই জগদদল, স্বৈরাচার, নিপীড়িত নির্যাতিত সরকারকে হটাতে কারো একক ভূমিকা নেই সুতরাং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রাপ্য অর্জন সকলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক সেই প্রত্যাশা। একক কোনো দল কিংবা ছাত্র জনতার ক্রেডিট নই, সকলকে নিয়েই একটি আগামীর বাংলাদেশ দেখার প্রত্যাশায়।
লেখক : মোঃ মাহবুব আলম চৌধুরী জীবন,
সাংবাদিক, সংগঠক, মানবাধিকারকর্মী।