মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের পশ্চিমে মেঘনা নদীর পাড়ে মাঝিরচর এলাকায় নোঙর করা এমভি আল-বাখেরা নামক জাহাজে সাতজন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন,তাদের মধ্যে দুইজনের বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায়। পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্যদের হারিয়ে দিশেহারা পরিবার-পরিজন। নিহতদের পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি,হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি নৌ-পথের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে নিহত সুকানি আমিনুল রহমান মুন্সীর বাড়ি ও পরবর্তীতে ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দীন ফকিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে,স্ত্রীসহ তাদের আত্মীয়-স্বজনদের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার দুজনের একজন আমিনুল রহমান মুন্সী (৪৮), যার বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার উত্তর পাংখারচর গ্রামে। তিনি সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন এবং প্রায় ১২ বছর ধরে জাহাজে কাজ করছিলেন। তার এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। গত ২০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে কাজে যান। নিহত আমিনুল রহমান মুন্সীর বড় ভাই হুমায়ুন রহমান মুন্সী বলেন,ঘটনাটি আমরা প্রথমে ডাকাতি শুনলেও খুনের দৃশ্য দেখে মনে হয়েছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারণ প্রত্যেকটি নিহতের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। যারা হত্যার শিকার হয়েছেন, সকলেরই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জাহাজে ছিল।
অন্যজন,লাহুড়িয়া ইউপির এগারোনলী গ্রামের আবেদ উদ্দীন ফকিরের ছেলে ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দীন ফকির (৪০), দীর্ঘ ২০ বছর ধরে জাহাজে চাকরি করছিলেন। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সংসারে মা,স্ত্রী,এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দিশেহারা সালাউদ্দিনের পরিবার। তিনি ১৪ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে কাজে গিয়েছিলেন। নিহত সালাউদ্দীন ফকিরের ছেলে নাইম ফকির বলেন,আমাদের পরিবার আবার আব্বুর আয় দিয়েই চলত। এইভাবে যদি মেরিন ডিপার্টমেন্টে চলতে থাকে,আজ আমাদের ক্ষতি হয়েছে,কাল আরেক জনের হবে। আজ যেমন আমরা রাস্তায় নামছি,কাল আরেক পরিবার রাস্তায় নামবে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। সঠিক বিচার না হলে এমন চলতেই থাকবে। আমাদের পরিবার যেহেতু আব্বুর ইনকামের ওপর চলত,তাই জাহাজ মালিক ও সরকারের কাছে আবেদন,আমাদের সহায়তা করুন।