ডিগ্রি বিহীন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা: ডা. এস এম সারওয়ার।
নিজস্ব প্রতিবেদক : গত ২৯ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে “ডিগ্রি নেই তবুও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা: ডা. এস এম সারওয়ারের বিরুদ্ধে আইনজীবীর লিগ্যাল নোটিশ” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের পরে ডা. এস এম সারওয়ার ৫৬/১ বায়তুল ভিউ টাওয়ারের ১১ তলায় পুরানা পল্টনের নিজ কার্যালয়ে গত ৩ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে ডা. এস এম সারওয়ার কোনো লিখিত বক্তব্য না দিয়ে কেবলমাত্র একটি ব্যানার টানিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনটি আয়োজন করেন।
ব্যানারে একজন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খান পাখি এবং সাংবাদিক ফোজিত শেখ বাবুর ছবি টানিয়ে দিয়ে তাদের সম্পর্কে নানারকম মিথ্যে বানোয়াট মন্তব্য করেন। এমনকি এই দুইজনকে নানাভাবে হুমকিও দেন।
এ ঘটনার পর সাংবাদিক ফোজিত শেখ বাবু বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় ডা. এস এম সারওয়ারের বিরুদ্ধে গত ৩১ ডিসেম্বর একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। শাহবাগ থানার জিডি নম্বর ২২১৮।ফোজিত শেখ বাবু তার জিডিতে উল্লেখ করেন যে গত ২৯ ডিসেম্বর দৈনিক জনতা পত্রিকায় প্রকাশিত “ডিগ্রি নেই তবুও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা: ডা. এস এম সারওয়ারের বিরুদ্ধে আইনজীবীর লিগ্যাল নোটিশ” শিরোনামের প্রতিবেদন প্রকাশের পর তাকে এবং সিনিয়র আইনজীবী নজরুল ইসলাম পাখিকে দোষী সাব্যস্ত করে ডা. এস এম সারওয়ার একটি মিথ্যা সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন।
তিনি দাবি করেন, তিনি বা আইনজীবী নজরুল ইসলাম পাখি দৈনিক জনতার পত্রিকা সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত নন এবং সংবাদটি সম্পর্কেও তারা অবগত নন। অথচ ডা. এস এম সারওয়ার ভুল তথ্য উপস্থাপন করে তাদের বিরুদ্ধে একটি মনগড়া সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন, যা তাদের সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা করেছে।
ফোজিত শেখ বাবু তার ফেসবুক পেজে ডা. এস এম সারওয়ারের মিথ্যা সাংবাদিক সম্মেলনের বিরুদ্ধে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সূত্র জানায়, ডা. এস এম সারওয়ারের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ এলাকায়। তিনি সেখানে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। কোনো হোমিওপ্যাথি কলেজের ডিগ্রি না থাকলেও তিনি নিজ এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।
নিজ চেম্বারে তিনি অপারেশন করে থাকেন, অথচ একজন রোগীকে কীভাবে সেবা দিতে হয় তা জানেন না। ডা. এস এম সারওয়ারের চিকিৎসার কারণে বেশ কয়েকজন ক্যান্সার রোগী মারা গেছেন। মৃতদের স্বজনরা তার বিরুদ্ধে মামলা করার উদ্যোগ নিলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের ভয়ভীতি দেখায়। পরে আর্থিক অর্থদণ্ডের মাধ্যমে তিনি ছাড় পান।
ভুক্তভোগী আফরোজা খানম জানান, ডা. এস এম সারওয়ার তার কাছ থেকে সেবা প্রদানের নামে আধা লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি প্রথমে জানান যে তার ক্যান্সার হয়েছে এবং ৩৫ হাজার টাকা এককালীন ফি নেন। কিন্তু অন্যান্য ডাক্তাররা পরীক্ষা করে জানান, তার কোনো ক্যান্সার হয়নি।
আরেক ভুক্তভোগী জানান, ডা. এস এম সারওয়ারের চিকিৎসার কারণে ঢাকা শহরের এক নারী মারা যান। তার কোনো সনদপত্র নেই, অথচ ক্যান্সার রোগীদের কাছ থেকে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। প্রতিদিন তিনি প্রায় দেড় শতাধিক রোগী দেখেন।
এ প্রতিবেদক ডা. এস এম সারওয়ারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলে তিনি প্রথমে নাম-ঠিকানা জানতে চান। নাম জানার পর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মামলার হুমকি দেন। যারা এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
হোমিওপ্যাথি ডাক্তার মো. বেলায়েত হোসেন জানান, ডা. এস এম সারওয়ার একটি প্রিসক্রিপশন লিখতেও জানেন না। অথচ তিনি নিজেকে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ দাবি করেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস, অথচ সাধারণ অসহায় মানুষকে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগী তার চেম্বারে আসেন।
এই প্রতারকের বিরুদ্ধে যথাযথ বাংলাদেশের চিকিৎসা বিষয়ক কর্তৃপক্ষকে আইনগতভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।