স্বাস্থ্যবিধি না মানলে
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে ইতোমধ্যে দেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে গণপরিবহন বন্ধ না করা পর্যন্ত এসব পরিবহন ব্যবহারে যাত্রীরা সর্বোচ্চ সতর্কতা ও কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করলে করোনাভাইরাসের ভয়াবহ বিস্তার ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আশঙ্কার কথা জানান বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই মুহূর্তে গণপরিবহন ব্যবহার-সংক্রান্ত বিশেষ সতর্কতা প্রচারের পাশাপাশি গণপরিবহনকে জীবাণুমুক্ত রাখতে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। বাস টার্মিনাল ও বাস স্টপেজ, রেল স্টেশন, লঞ্চ-টার্মিনাল ও লঞ্চ ঘাটের পাশাপাশি আকাশপথের সব যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির এই নেতা।
বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, জনগণকে করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষায় ইতোমধ্যে সরকারের স্বাস্থ্যবিভাগের পক্ষ থেকে গণপরিবহন এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে প্রায় ৯৩ শতাংশ মানুষ গণপরিবহন ব্যবহার করেন। তাদের পক্ষে যেমন গণপরিবহনে যাতায়াত বন্ধ করা সম্ভব নয়। আক্রান্ত দেশ থেকে ফেরত আসা যাত্রীদের হাসপাতাল অথবা আশকোনা হজ ক্যাম্পে নিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়ে বাড়ি পাঠানো হচ্ছে। পাঠানোর সময় তাদেরকে গণপরিবহন ব্যবহার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হলেও এসব প্রবাসীরা হাসপাতাল কিংবা আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকে বের হওয়া মাত্র সিএনজি অটোরিকশা বা টেক্সিক্যাবে চড়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে। এতে করে কোনো করোনা সংক্রমিত রোগী এসব গণপরিবহন ব্যবহার করলে তা হবে ভয়াবহ। অথবা বাড়িতে আক্রান্ত কোনো রোগী বাস-মিনিবাস কিংবা হিউম্যান হলারে যাতায়াত করলে এতে করে পুরো অঞ্চলে করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাই প্রতিটি নির্দিষ্ট বাস স্টপেজ থেকে গণপরিবহনে যাত্রী উঠানোর সময় থার্মাল স্ক্যানার মেশিন দিয়ে স্ক্যানিং করে যাত্রী ওঠানো। প্রতিটি ট্রিপ শেষে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত পরিবহন জীবাণুনাশক স্প্রে দ্বারা জীবাণুমুক্ত করার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের দুর্যোগে এই মুহূর্ত থেকে গণপরিবহন বন্ধ না করা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীসহ দেশের প্রতিটি সিটি সার্ভিসের বাস-মিনিবাসে আসনবিহীন যাত্রী বহন বন্ধ করতে হবে। বাস-মিনিবাসসহ প্রতিটি পাবলিক পরিবহনে পুরো সিট মোড়ানো সিটকভার ব্যবহার করা। রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেলে যাত্রীর হেলমেট ব্যবহার আপাতত বন্ধ রাখা। বিদেশ ফেরত যাত্রীদের বিমানবন্দর থেকে হাসপাতাল অথবা আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকে বাড়ি পাঠাতে নির্দিষ্ট যানবাহন ব্যবহার করা এবং এসব যানবাহন সবসময় জীবাণুমুক্ত রাখার স্প্রে ব্যবহার করার অনুরোধ করেন তিনি।
এছাড়াও আন্তঃজেলা দুরপাল্লার রুটে চলাচলকারী এসি-ননএসি বাসে যাত্রী উঠানোর পূর্বে ও নামানোর পরে জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহার করা। এসি বাসের যাত্রীদের ব্যবহৃত কম্বল ও সিটকভার প্রতিদিন পরিবর্তন করে পরিষ্কার করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়াও গণপরিবহনের চালক-হেলপারদের সেফটি ইউনিফর্ম ব্যবহার করা। প্রতিটি ট্রিপ শেষে সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত-মুখ পরিষ্কার করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রতিটি গণপরিবহন মালিক ও বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।