মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী : মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে গোপালগঞ্জ বিএনপি আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।

আজ শুক্রবার (৩০-মে) বাদ জুম্মা শহরের লঞ্চঘাট জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় সাবেক সহ-সাংগঠনিক ও গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সিনিয়র সদস্য এম এইচ খান মঞ্জুর ব্যক্তিগত বিএনপি কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এম এইচ খান মঞ্জু বলেন, ১৯৮১ সালের এই দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সৈনিকের হাতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। সেই থেকেই তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি দিবসটিকে জিয়াউর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী হিসেবে পালন করে আসছে। শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তার ঘটনা বহুল কর্মময় জীবনের কারণেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পরিশ্রম প্রিয়তা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তাসহ প্রভৃতি গুণাবলি দেশের আপামর গণমানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিল। শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাবুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী যখন নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে জিয়াউর রহমানই তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। নয় মাসের মুক্তি সংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে সমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বীরত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি বীর উত্তম খেতাব লাভ করেন।

তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হন জিয়াউর রহমান। প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। মাত্র ছয় মাসের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে ৫৪ বছরের জিয়া বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ থেকে দেশ জাতিকে মুক্ত করেন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস জোগান। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে নতুন ভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর ঢাকায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত তাঁর স্মরণকালের নামাজে জানাজায় প্রমাণিত তিনি কত জনপ্রিয় ছিলেন।
এসময় গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপি’র যুগ্ন আহবায়ক মেজর অবসর অহিদুল হক মোল্লা, জেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ কামরুজ্জামান টুটুল, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এস এম সুমন, জেলা বিএনপি’র সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস এম হুমায়ুন কবীর, জেলা বিএনপি’র সাবেক প্রচার সম্পাদক শেখ ইলিয়াস আহমেদ, পৌর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ঝন্টু খান, টুংগীপাড়া উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মেহেদী বিল্লাহ, নিজড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহমেদ ধলুমিনা, গোবরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান টুটুল, জেলা বিএনপি’র সাবেক সদস্য শেখ ইয়াহিয়া, নিজড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এখলাচ মোল্ল, বিএনপি নেতা মাসুদ শেখ, সহ জেলা বিএনপি’র সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিতি ছিলেন।
এছাড়া বিএনপি কার্যালয়সহ সকল দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, নেতা-কর্মীদের কালো ব্যাজ ধারণ, তাবারক বিতরণ সহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়া এম এইচ খান মঞ্জুর আয়োজনে নিজড়া এতিমখানা মাদ্রাসায় কোরআন খতম ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর এতিমদের মাঝে তাবারক বিতরণ করা হয়। এর আগে গোপালগঞ্জ জেলা মডেল মসজিদে জিয়াউর রহমানের জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।