অলিগলিতে লকডাউন

এইমাত্র জাতীয় স্বাস্থ্য

এম এ স্বপন : বৈশ্বিক মহামারি করোনায় আক্রান্ত বাংলাদেশ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৯৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪২৪। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৬ জন। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৭ জনে। শুক্রবার দুপুরে করোনা ভাইরাস নিয়ে নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এরআগে গত বৃহস্পতিবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১২ জন। দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত (কোভিড-১৯) প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। এরপর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
২২টি জেলায় করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪২৪ জন। এর মধ্যে ঢাকা শহরেই আছে সবচেয়ে বেশি ১৯৬ করোনা রোগী। ঢাকার ৬১টি এলাকায় এসব রোগী পাওয়া গেছে। করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া এলাকা কিংবা বিল্ডিং লকডাউন করে দিচ্ছে পুলিশ। এর পাশাপাশি করোনা থেকে বাঁচতে নিজেরাই বিল্ডিং কিংবা নির্দিষ্ট কোনও আবাসিক এলাকা স্বেচ্ছায় লকডাউন করছেন সেখানে অবস্থিত বাড়ির মালিকরা। রাজধানী ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে বেশ কয়েকটি এলাকায়।
নিজ নিজ বিল্ডিং এবং আবাসিক এলাকায় যাতায়াত সীমিত করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বিল্ডিং মালিকরা। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোড ও স্যার সৈয়দ রোড এলাকার বাড়ির মালিকরা তাদের এলাকায় যান চলাচল সীমিত করেছে। এই এলাকার প্রবেশপথ ৬টি থাকলেও ৫টি গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র মোহাম্মদপুর পোস্ট অফিসের পাশের গেটটি এলাকার মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে খোলা রাখা হয়েছে। বন্ধ প্রতিটি গেটে নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, বর্তমান করোনা ভাইরাসের কারণে গেটটি সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে, পোস্ট অফিসের নিকট ২ নম্বর গেট ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করা হলো। এর পাশাপাশি ২ নম্বর গেটে নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে দেওয়া আছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং স্প্রে। তারা এলাকায় প্রবেশকারী রিকশাচালক এবং সাধারণ মানুষদের স্প্রে এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেন।
ইকবাল রোডের ২ নম্বর গেটে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মী রিপন বলেন, এলাকার বিল্ডিং মালিকদের সিদ্ধান্তে গেট সব বন্ধ করা হয়েছে। শুধু একটি গেট দিয়ে চলাচল করার সুযোগ আছে। আমাদের পাশের এলাকায় করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে বলে শুনেছি। তারপর থেকে আমাদের গেট সব বন্ধ।
ইকবাল রোডের পাশেই লালমাটিয়া আবাসিক এলাকার বেশিরভাগ গেটই বন্ধ। ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের দিকে বের হওয়ার একটি গেট এবং আড়ংয়ের পাশে একটি গেট খোলা রাখা হয়েছে এই এলাকার বাসিন্দাদের জন্য। লালমাটিয়া এলাকার নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় লালমাটিয়া কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তে সীমিতভাবে গেট খোলা রাখা হয়েছে।
শুধু আবাসিক এলাকা নয়, রাজধানীর বিভিন্ন বাসা-বাড়ি নিজ উদ্যোগে লকডাউন করে দিয়েছেন অনেকেই। অপরিচিত ব্যক্তি, গৃহকর্মী, অতিথি কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না আবাসিক ভবনে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বের হতেও দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি কুরিয়ার সার্ভিস কিংবা ডেলিভারিম্যানদেরও প্রবেশে আছে নিষেধাজ্ঞা। পাঠাও ফুড সার্ভিসের ডেলিভারিম্যান রাতুল জানান, তিনি রাজধানীর কয়েকটি বাসায় খাবার ডেলিভারি দিতে গিয়ে এই সমস্যায় পড়েছেন। সেখান কয়েকটি বাসায় নোটিশ ঝুলতে দেখেছেন বলেও জানান তিনি।
বনশ্রী আবাসিক এলাকার কয়েকজন স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই এলাকার অনেক বাসার মালিকের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেন কোনও আত্মীয় স্বজন না আসে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যেন বাড়ির বাইরে না যায় কেউ। এই এলাকার বাসিন্দা আকরাম জানান, তার বাসায় গৃহকর্মী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাড়ির মালিক। এছাড়া বহিরাগতদের পাশাপাশি ড্রাইভারদেরও আসতে নিষেধ করা হয়েছে।
মগবাজারের রিজেন্ট টাওয়ার লকডাউন করে দিয়েছে পুলিশ। তবে ওই টাওয়ারের ২৮টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের অনেকে কর্মজীবী, তাদের অফিসে যেতে হয়। তাই পুরোপুরি লকডাউন করতে পারেনি পুলিশ। তবে যে ফ্ল্যাটটি থেকে রোগী শনাক্ত করা হয়েছে সেটি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বেইলি রোডের একটি ঠিকানা আইইডিসিআর থেকে দেওয়া হলেও ওই ঠিকানা খুঁজে পায়নি পুলিশ।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাঈনুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। বাড়িটি পুরোপুরি লকডাউন করা যায়নি। কারণ, সেখানে অনেক বাসিন্দা রয়েছে।
অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখার এক কর্মকর্তা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় মতিঝিলের প্রিন্সিপাল শাখা লকডাউন করা হয়েছে। আগামী ১৪ দিন ওই শাখা লকডাউন থাকবে। ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শামসুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদাবরের ১৭ নম্বর সড়ক লকডাউন করেছে আদাবর থানা পুলিশ। ওই সড়কের একটি বাড়িতে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর আদাবরের সব সড়কেই চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করেছে পুলিশ। ঘিঞ্জি এলাকাটিতে পুলিশের তল্লাশি চৌকিও বসানো হয়েছে। অপ্রয়োজনে কেউ বের হলেই তাকে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহিদুজ্জামান বলেন, আমরা মানুষকে নিরুৎসাহিত করছি যাতে বাসা থেকে কেউ বের না হয়।
মোহাম্মদপুরের রাজিয়া সুলতানা রোডের একটি বাড়ি, তাজমহল রোডের একটি বাড়ি, কৃষি মার্কেট রোডের মুখে একটি বাড়ি লকডাউন, বাবর রোডের একটি বাড়ি এবং বসিলার উত্তরমোড়া এলাকার একটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এসব এলাকার সড়ক প্রথমে লকডাউন করা হলেও পরবর্তী সময়ে শুধু বাড়িগুলো লকডাউন করা হয়েছে।
যাত্রাবাড়ী থানার মীরহাজীরবাগ এলাকার নবীনগর গলির একটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ওই বাড়িতে বেসরকারি একটি টেলিভিশনের একজন ক্যামেরাপারসন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা একটা বাড়ি লকডাউন করে রেখেছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাড়িটি লকডাউন থাকবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় মোতাহার বস্তি লকডাউন করেছে পুলিশ। আইইডিসিআর-এর নির্দেশে বস্তিটি লকডাউন করা হয়েছে। শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বস্তিতে একজন রোগী করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ায় আইইডিসিআর-এর নির্দেশে বস্তিটি লকডাউন করা হয়েছে।
সেন্ট্রাল রোডের ছয়তলা একটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ চন্দ্র জানান, আইইডিসিআর থেকে আমাদের তালিকা দেওয়ার পর আমরা ছয়তলা একটি বাড়ি লকডাউন করেছি। এখন পর্যন্ত এই এলাকায় আর কোনও করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি।
শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পাশের একটি বাড়িতে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছিল। লকডাউনের ১৪ দিন শেষ হবে আজ। ওই বাড়িতে আর কেউ আক্রান্ত হননি।
খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ- ২ এর ১১ নম্বর রোড লকডাউন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর রোডটি লকডাউন করে দেয় পুলিশ।
খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, খিলক্ষেতের একটি এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। মানুষকে নিরাপদে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।
হাজারীবাগ থানা এলাকার পশ্চিম ধানমন্ডির বেকারির গলির আটতলা একটি ভবনে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর ওই বাড়িটি লকডাউন করে দিয়েছে পুলিশ।
রাজধানীর লালবাগ থানা এলাকার লালবাগ সড়কে দুটি বাড়ি এবং বড়বাট মসজিদ এলাকায় একটি ভবন লকডাউন করেছে পুলিশ।
পুরান ঢাকায় খাজে দেওয়ান লেনে একটি মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি ও এক নারীর করোনাভাইরাসে সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ায় ওই এলাকার অর্ধশতাধিক বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
চকবাজার থানার ওসি মওদুত হাওলাদার জানান, যে মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি সমাজে চলাচল করেছেন, তাই তার বাসার পাশের কয়েকটি বাড়ি এবং এক ও দুই নম্বর গলি লকডাউন করা হয়েছে।
পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার রোজ মেরিনার্স নামে একটি ভবন লকডাউন করা হয়েছে বলে জানান বংশাল থানার ওসি শাহীন ফকির।
তিনি জানান, রোজ মেরিনার্স একটি মার্কেট, কিন্তু ওই মার্কেটের ওপরে ৪০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ওই ফ্ল্যাটের ৫৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এজন্য ওই ভবনটি লকডাউন করা হয়েছে।
ওয়ারী থানা এলাকার বনগ্রাম রোডের একটি ভবন এবং র‌্যাংকিং স্ট্রিট রোডে একটি ভবন লকডাউন করেছে পুলিশ। ওই ভবন দুটিতে কাউকে প্রবেশ করতে এবং বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
পুরানা পল্টন কালভার্ট রোডের দুটি ভবন লকডাউন করেছে পুলিশ। একটি ১৫ তলা ভবন, অপরটি ছয়তলা ভবন। ভবনটির বাসিন্দাদের বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
রাজধানীর শাহজাহানপুর থানার উত্তর শাহজাহানপুরের দীপশিখা রোডের চারতলা একটি বাড়িতে একজন রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ওই বাড়িটি লকডাউন করে দিয়েছে পুলিশ।
শাহজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল হক বলেন, আমরা আইইডিসিআর-এর তালিকা অনুযায়ী চারতলা একটি বাড়ি লকডাউন করেছি। পাশাপাশি দীপশিখা সড়ক দিয়ে মানুষকে চলাচল করতে নিষেধ করা হয়েছে।
মহানগরীর বাড্ডা থানার উত্তর বাড্ডা এলাকার দুটি বাড়িতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী মিলছে। এজন্য খানবাগ রোডের একটি বাড়ি এবং স্বাধীনতা সরণির একটি বাড়ি লকডাউন করেছে পুলিশ। প্রথমে দুটি সড়ক লকডাউন করা হলেও এখন তার বদলে দুটি বাড়ি লকডাউন করে রাখা হয়েছে।
রাজধানীর সবুজবাগের নন্দিপাড়ায় জিরো গলির একটি বাসায় ছয় ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সবাইকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই বাড়িটি লকডাউন করেছে পুলিশ।
সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার অ্যাপোলো হাসপাতাল সংলগ্ন পাঁচতলা একটি ভবন লকডাউন করেছে পুলিশ। বাড়িটিতে বাইরে থেকে কাউকে প্রবেশ না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। রোগী একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের একটি সড়ক এলাকা লকডাউন করে রাখা হয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণখানে একটি বাড়িতে এক যুবক আক্রান্তের খবর পাওয়া গেলেও তাকে সেই ঠিকানা অনুযায়ী পাওয়া যায়নি।
গুলশান ১-এর ১৫ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পর ওই সড়কটি এবং বাড়িটি লকডাউন করে দিয়েছে পুলিশ।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত একটি বাড়ি লকডাউন করেছি। এরপর আর নির্দেশনা আসেনি। সবাইকে সচেতনতায় পুলিশ কাজ করছে। অপ্রয়োজনে কাউকে বের না হওয়ার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালানো হয়।’
তেজগাঁওয়ের আরজতপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে একজন রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ওই বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে।
পল্লবী থানার (মিরপুর ১১) সেকশন ১১ বি-এর ১ নম্বর সড়কের তিনটি বাড়ি লকডাউন করেছে পুলিশ। ৪৬, ৪৮ ও ৫০ নম্বর বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ৪৮ নম্বর ছয়তলা বাড়িটিতে একজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী ছিলেন। রোগী শনাক্ত হওয়ার পর বাড়িটির দুই পাশের বাড়িসহ লকডাউন করে পুলিশ।
মিরপুর মডেল থানা এলাকায় দুটি বাড়ি লকডাউন করেছে পুলিশ। একটি বাড়ি পীরেরবাগে, অপরটি শাহ আলীবাগে। দুটি বাড়িতেই করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রোগী শনাক্ত হওয়ার পর আইইডিসিআর-এর আদেশে আমরা বাড়ি দুটি লকডাউন করে দিয়েছি।
কাফরুল থানার মিরপুর ১৩ সেকশনের ১/১ রোডের ৪২ ও ৪৩ নম্বর বাসা লকডাউন করেছে পুলিশ। বর্তমানে ওই সড়ক পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছে।
দারুস সালাম থানা এলাকার উত্তর টোলারবাগের একটি আবাসিক এলাকার পুরোটা লকডাউন করে রাখা হয়েছে। দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘সেখানে দুজন রোগী শনাক্ত হওয়ার পর পুরো আবাসিক এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। এখনও সেই অবস্থায় রয়েছে।’
ডিএমপির শাহ আলী থানার সি-ব্লকের ১১ নম্বর সড়কের একটি ছয়তলা বাড়ি লকডাউন করেছে পুলিশ। শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘বাড়িটিতে একজন রোগীর করোনাভাইরাস পজিটিভ হয়েছে। তাই আমরা বাড়িটি লকডাউন করেছি। সড়কে মানুষ চলাচল সীমিত করার অনুরোধ করা হয়েছে।’
রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার গুরুদাস লেনে চারতলা একটি ভবন লকডাউন করেছে পুলিশ। ওই ভবন থেকে একজন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
বাবুবাজারের একাংশ, উর্দু রোড, ইসলামপুরের একাংশ, লক্ষ্মীবাজার ও সোয়ারিঘাটের কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ২০। নতুন করে ৫৪ জন শনাক্ত হয়েছেন এবং মোট শনাক্তের সংখ্যা হলো ২১৮। নতুন শনাক্ত ৫৪ জনের মধ্যে ৩৯ জন ঢাকার অধিবাসী। এছাড়াও একজন ঢাকার অদূরে, বাকিরা ঢাকার বাইরের অধিবাসী।
এই সময় জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৯৮৮টি, পরীক্ষা হয়েছে ৯৮১টি। এর মধ্যে ৫৬৩টি ঢাকায় এবং ৪২৫টি ঢাকার বাইরে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *