নিজস্বক প্রতিবেদক : দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক রয়েছেন। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৫০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তে টেস্ট করা হয়েছে এক হাজার ৭৪০টি। এখন পর্যন্ত মোট টেস্ট করা হয়েছে ১৪ হাজার ৮৬৮টি। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও শনাক্ত হয়েছে ২১৯ জন এবং করোনায় মোট শনাক্ত হলেন এক হাজার ২৩১ জন। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন সাত জন এবং এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৪৯ জন।
বুধবার দুপুরে দেশের কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিন অনলাইনে প্রচারিত হয়। সেখানে ভিডিও কনফারেন্সে এই তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এই সময় যুক্ত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এবং অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
এই সময় নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে দুই জন রয়েছেন, একজন ৩৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, আরেকজন হচ্ছে সিলেট ওসমানী মেডিক্যালের চিকিৎসক। এই চারজনের মধ্যে পুরুষ তিন জন এবং নারী একজন।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২ হাজার ৪৮টি। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ হাজার ৭৪০টি। গতকালের তুলনায় যা কিছুটা কম। কারণ এখন পর্যন্ত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারাল সেন্টারের রিপোর্ট আমাদের হাতে আসেনি। এই জন্য আমাদের আজকের পরীক্ষার সংখ্যা কম দেখাচ্ছে। হয়তো ইতোমধ্যে রিপোর্ট হয়ে গেছে, আমরা আপডেট ওয়েবসাইটে জানাবো।
বুলেটিনে জানানো হয়, নতুন করে ঢাকার মিরপুর, কেরানীগঞ্জ ও গাজীপুরে করোনা শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে ৭১ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৪৩৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছে ২০ জন এবং এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪৬২ জন।
বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত হয়েছে করোনাভাইরাস। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সোয়া লাখ। তবে চার লাখ ৮৫ হাজারের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও গত ক’দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ২৩১। মারা গেছেন ৫০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৯ জন।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।